Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কাশ্মীরে মধ্যস্থ হতে বলেন মোদী! ট্রাম্পের দাবি নস্যাৎ ভারতের

কাশ্মীরকে পাকিস্তান বারবারই আন্তর্জাতিক সমস্যা বলে দেখাতে চায়। ফলে ট্রাম্পের বক্তব্যে ইমরানের খুশি হওয়ারই কথা।

হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইমরান খান। সোমবার। ছবি: এএফপি

হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইমরান খান। সোমবার। ছবি: এএফপি

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৯ ০৩:৫৮
Share: Save:

কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তিনি মধ্যস্থতা করতে আগ্রহী বলে জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর দাবি, নরেন্দ্র মোদীই তাঁকে সপ্তাহ দুয়েক আগে মধ্যস্থতা করতে অনুরোধ করেছেন। যদিও ভারতের বিদেশ মন্ত্রক সেই দাবি নস্যাৎ করে বলেছে, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এমন কোনও অনুরোধ মার্কিন প্রেসিডেন্টকে করেননি। কাশ্মীর নিয়ে আলোচনা হলে দ্বিপাক্ষিক স্তরেই তা হবে।’’

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এখন মার্কিন সফরে গিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন সেনাপ্রধান কমর জাভেদ বাজওয়া, আইএসআই প্রধান ফৈয়জ হামিদ ও বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। আজই হোয়াইট হাউসে ইমরানের সঙ্গে প্রথম বৈঠক হয় ট্রাম্পের। তার পরে ওভাল অফিসে ইমরানের পাশে বসেই ট্রাম্প মধ্যস্থতার কথা তোলেন। ইমরান প্রথমে বলেন, ‘‘ভারতের সঙ্গে আলোচনা শুরু হওয়া দরকার।’’ সে কথার সূত্রেই ট্রাম্প যোগ করেন, ‘‘দু’সপ্তাহ আগে মোদীর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। তিনি জানতে চান, আমি মধ্যস্থতা করতে রাজি কি না। আমি প্রশ্ন করি, কোন বিষয়ে। তিনি বলেন, কাশ্মীর। কারণ, বিবাদটা অনেক দিন ধরে চলছে। আমি ওঁকে জানাই, মধ্যস্থতা করতে পারলে আমি খুশিই হব।’’ এ কথা শুনে ‘থাম্বস আপ’ করে ইমরান বলেন, ‘‘এটা হলে ১০০ কোটি মানুষের শুভেচ্ছা আপনার সঙ্গে থাকবে।’’

কাশ্মীরকে পাকিস্তান বারবারই আন্তর্জাতিক সমস্যা বলে দেখাতে চায়। ফলে ট্রাম্পের বক্তব্যে ইমরানের খুশি হওয়ারই কথা। ভারতের পক্ষে বিষয়টা ততোধিক অস্বস্তির, কারণ ভারত এই বিবাদকে দ্বিপাক্ষিক সমস্যা বলে মনে করে। ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তিতে কাশ্মীরকে দ্বিপাক্ষিক বিষয় বলেই মেনে নিয়েছিল ভারত ও পাকিস্তান। সেই চুক্তি এবং লাহৌর ঘোষণাপত্রই আলোচনার ভিত্তি হওয়া উচিত বলে মনে করে ভারত। ফলে ট্রাম্পের মন্তব্যের জেরে এ দিন রাতে রীতিমতো শোরগোল শুরু হয় দিল্লিতে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, ‘‘আমরা মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য শুনেছি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এমন কোনও অনুরোধ মার্কিন প্রেসিডেন্টকে করেননি। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সব বিষয় নিয়ে দ্বিপাক্ষিক স্তরেই আলোচনা হবে, এটাই আমরা ধারাবাহিক ভাবে বলে এসেছি। পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে গেলে আগে সীমান্ত-সন্ত্রাস বন্ধ হওয়া দরকার। ’’

কিন্তু ভারতের ঘরোয়া রাজনীতিতে বিষয়টা এত সহজে মেটার নয় বলেই মনে করা হচ্ছে। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা রাতেই টুইট করেন, ‘‘ভারত কোনও দিন তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা মানেনি। কাশ্মীরে একটি বিদেশি শক্তিকে মধ্যস্থতা করতে বলে প্রধানমন্ত্রী দেশের স্বার্থকে বলি দিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।’’ সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরির প্রশ্ন, ‘‘এর পরে শিমলা চুক্তিতে কাশ্মীর নিয়ে ভারতের অবস্থানের কী হবে?’’ জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি আবার ট্রাম্পের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘‘এর ফলে উপমহাদেশে শান্তি স্থায়ী হতে পারে।’’

তবে কংগ্রেসের শশী তারুর টুইট করেছেন, ‘‘আমার মনে হয় মোদী কী বলছেন তা ট্রাম্প বোঝেননি। বা তাঁকে বিষয়টি ঠিক ভাবে বোঝাতে পারেননি মার্কিন কূটনীতিকেরা।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE