Advertisement
E-Paper

হেলায় জয় ধর্মশালায়, সিরিজ ভারতের পকেটে

অপেক্ষা ছিল ৮৭ রানের। তৈরি ছিল মঞ্চ। শুধু নেমে নিজেদের সেরাটা দেওয়ার ছিল। সেরাটা না দিলেও যা লক্ষ্য ছিল তাতে তা পেড়িয়ে যাওয়াটা ছিল সময়ের অপেক্ষা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৭ ১০:৫৬
সুনীল গাওস্করের হাত থেকে বর্ডার-গাওস্কর ট্রফি নিচ্ছেন বিরাট কোহালি ও অজিঙ্ক রাহানে। ছবি: এপি।

সুনীল গাওস্করের হাত থেকে বর্ডার-গাওস্কর ট্রফি নিচ্ছেন বিরাট কোহালি ও অজিঙ্ক রাহানে। ছবি: এপি।

চতুর্থ টেস্ট : চতুর্থ দিন

অস্ট্রেলিয়া ৩০০ ও ১৩৭

ভারত ৩৩২ ও ১০৬/২ (২৩.৫ওভার)

অপেক্ষা ছিল ৮৭ রানের। তৈরি ছিল মঞ্চ। শুধু নেমে নিজেদের সেরাটা দেওয়ার ছিল। সেরাটা না দিলেও যা লক্ষ্য ছিল তাতে তা পেড়িয়ে যাওয়াটা ছিল সময়ের অপেক্ষা। দু’দলের সামনে আসলে ছিল না কোনও লক্ষ্যই। অস্ট্রেলিয়া জেনেই গিয়েছিল সিরিজ হার শুধু এখন সময়ের অপেক্ষা। ভারতের সামনে আর কয়েকটা রান মাত্র। সেই রানে পৌঁছতে ভারতকে হারাতে হল মুরলী বিজয় ও পূজারার উইকেট। কামিন্সের বলে ওয়েডকে ক্যাচ দিয়ে মাত্র আট রান করে ফিরলেন মুরলী। তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে কোনও রান না করেই রান আউট হলেন পূজারা। বাকি কাজটা রাহানেকে সঙ্গে নিয়ে হেলায় করে ফেললেন লোকেশ রাহুল। লোকেশের হাফ সেঞ্চুরির সঙ্গেই জয়ের রান তুলে নিল ভারত। আট উইকেটে শেষ টেস্ট জিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২-১এ সিরিজ জিতে নিল ভারত।

আরও খবর: শেষ বেলায় ক্যাচ বিভ্রাটে বিতর্ক ধর্মশালা টেস্টে

হাতে দু’দিন নিয়ে ৮৭ রানের লক্ষ্যে নামা ভারতীয় দল আগের রাতেই জেনে গিয়েছিল জয়টা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। আবারও একটা সিরিজ। আবারও দেশের মাটি থেকে বিশ্ব ক্রিকেটের কোনও বড় নামকে হারিয়ে বাড়ি পাঠানো। নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ডের পর এ বার অস্ট্রেলিয়া। যদিও সিরিজের শুরুটা তেমন বার্তা দিয়ে হয়নি। যে ফর্মে মরসুম চলছিল অস্ট্রেলিয়াকে হারানোও ততটাই সহজ হবে ভেবে নিয়েছিল ভারত। কিন্তু তেমনটা হয়নি।

ভারতীয় দলের উচ্ছ্বাস।

প্রথম ম্যাচেই পুণেতে মুখ থুবড়ে পড়েছিল ভারত। যার ফল হেরে শুরু করেছিলেন বিরাট কোহালিরা। ১-০তে পিছিয়ে থেকে বেঙ্গালুরু ম্যাচে মরিয়া হয়েই নেমেছিলেন বিরাট কোহালিরা। পুণেতে পিচ বিতর্কের পর বেঙ্গালুরুর ডিআরএস বিতর্ক সঙ্গে থাকলে জিতে সিরিজে ফিরেছিল ভারত। সিরিজ যখন ১-১ তখন ধোনির শহরে দু’দলই নেমেছিল ২-১ করে সিরিজে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে। কিন্তু শেষ ম্যাচের টেনশন বাড়িয়ে রাঁচীর ম্যাচ শেষ হয়েছিল অমীমাংসিত ভাবেই। সিরিজ ১-১ নিয়ে দু’দল পৌঁছেছিল ধৌলাধারের শহরে। কিন্তু তাতে বাঁধ সাধল বিরাট কোহালির চোট। ধর্মশালা টেস্টে ছিটকে গেলেন দেশের সফল অধিনায়ক। যাঁর হাত ধরেই টানা সিরিজ জয় ভারতের। সেই বিরাটকে বাদ দিয়েই শেষ টেস্টে নামতে হয়েছিল টিম ইন্ডিয়াকে। অজিঙ্ক রাহানের অধিনায়কত্বে শুরু থেকে শেষ সবটাই ছিল ভারতের দখলে। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম টেস্ট জিতে নিলেন রাহানেও। সঙ্গে ভারতের সিরিজ জয়।

হতাশ স্টিভেন স্মিথ।

টস জিতে শুরুটা করেছিল অস্ট্রেলিয়াই। প্রথম ইনিংসে ভারতের সামনে ৩০০ রানের লক্ষ্যমাত্র রেখেছিল। এর মধ্যেও স্টিভ স্মিথের ব্যাট থেকে এসেছিল সে়ঞ্চুরি। অশ্বিনের বলে রাহানের ক্যাচ তুলে দেওয়ার আগে স্মিথের ব্যাট থেকে এসেছিল ১১১ রানের ইনিংস। সেই ইনিংসে ডেভিড ওয়ার্নারের ৫৬ ও ওয়েডের ৫৭ রানের যোগ্য সঙ্গ থাকলেও এর থেকে বেশি দুর এগোতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। সেই ইনিংসে টেস্ট অভিষেকেই চার উইকেট নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেটে নাম লিখিয়ে ফেলেছিলেন কুলদীপ যাদব। ভারতের লক্ষ্য ছিল প্রথম ইনিংসেই বাজিমাত করার যাতে দ্বিতীয় ইনিংসে আর ব্যাট করতে নামতে না হয়। কিন্তু তেমনটা হল না। কারও ব্যাট থেকেই এল না বড় রান। যার ফল মাত্র ৩২ রানের লিড নিয়েই আবার অস্ট্রেলিয়াকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। লোকেশ রাহুলরে ৬০, চেতেশ্বর পূজারার ৫৭, অজিঙ্ক রাহানের ৪৬ ছাড়া ভারতের ব্যাটিংয়ে বলার মতো আর কিছু ছিল না। বল হাতে আবার বাজিমাত করেন অস্ট্রেলিয়ার পেসার নাথান লিয়ঁ। তৃতীয়দিন লাঞ্চের আগেই গুটিয়ে যায় ভারতের ইনিংস।

অস্ট্রেলিয়ার এই উচ্ছ্বাস স্থায়ী হল না।

দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় দিন শেষ হওয়ার আগেই পুরো অস্ট্রেলিয়া দলকেই প্যাভেলিয়নে পাঠিয়ে দেন ভারতের বোলাররা। এখনও পর্যন্ত সেরা উইকেট যে এটিই তা আবারও প্রমাণ হয়ে যায়। কারণ এই উইকেটেই ৩০০র উপর রান এসেছে। এই পিচেই সমানভাবে উইকেট পেয়েছেন উমেশ যাদব, অশ্বিনরা। যে পিচে পেসার আর স্পিনার সমানভাবে সফল সেটাকে ভাল উইকেট না বলে কোনও উপায় নেই। আশা আইসিসি এই উইকেটকে ‘এক্সিলেন্ট’ তকমা দেবেন। যা এখনও পর্যন্ত পায়নি এই সিরিজে। ধর্মশালায় দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়াকে ১৩৭ রানে প্যাভেলিয়নে পাঠানোর পিছনে যতটা রয়েছেন পেসার উমেশ যাদব ঠিক ততটাই রয়েছেন দুই স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাডেজা। তিন জনেই তুলে নেন তিনটি করে উইকেট। যার ফল যখন অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংস শেষ করে তখন ভারতের সামনে মাত্র ১০৬ রানের টার্গেট। হাতে রয়েছে পুরো দু’দিন। তৃতীয় দিনের শেষে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার লোকেশ রাহুল ও মুরলী বিজয় ১৯ রান যোগ করে দিয়েছেন। চতুর্থ দিন ভারতের দরকার ছিল মাত্র ৮৭। এই রান করতে ভারতের বেশি সময় লাগল না। অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সিরিজ জয়ের সেলিব্রেশনটা পাহাড়ের কোলেই শুরু হয়ে গেল। দলাই লামার শহরে।

ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের একটি মুহূর্ত।

Lokesh Rahul Steven Smith India Vs Australia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy