আট ঘণ্টা কাজের সময় পেরিয়ে হয়ে যাচ্ছে দশ- এগারো ঘণ্টাও। তবু সময়ের কাজ সময়ে শেষ হচ্ছে না? কাজ নিয়ে আত্মতুষ্টিও থাকছে না?
এমন সমস্যার সম্মুখীন তরুণ প্রজন্মের অনেকেই। কাজের চাপে নাভিশ্বাস উঠছে। সেই সব চাপ সামলানোর জন্য চেষ্টার অন্ত নেই, তবু যেন লক্ষ্যপূরণ সম্ভব হচ্ছে না। তারই প্রভাবে বার বার আটকে যাচ্ছে পদোন্নতি?
অথচ খেয়াল করলে দেখা যাবে, এমন অনেকেই আছেন, যাঁর ঘর এবং কর্মক্ষেত্রে সঠিক ভাবে ভারসাম্য রক্ষা করছেন। তাঁদের পেশাদারিত্বও যথেষ্ট। কী ভাবে করছেন তাঁরা? আসলে সঠিক অভ্যাস যেমন কর্মক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে পারে, তেমনই ছোট ছোট ভুলও কিন্তু কাজের ক্ষতি করে দেয়।
কোন ভুলগুলি এড়াবেন?
আরও পড়ুন:
১। নানা রকম কাজ থাকলে প্রথমেই সেগুলি ভাগ করে নিতে পারেন। কোন কাজ কখন করবেন, সে ব্যাপারে শুরু থেকে স্পষ্ট ধারণা না থাকলে দেখা যাবে, অনেকটা সময় গড়িমসি করে নষ্ট হল। প্রথমেই জরুরি কাজের ভিত্তিতে তালিকা তৈরি করে, সময় ভাগ করে নিলে কাজ সহজ হয়ে যাবে।
২। করছি, করব, এখন না, একটু পরে— এমন মানসিকতা কম-বেশি অনেকেরই থাকে। এর ফলেই কাজের পাহাড় জমতে শুরু করে।কেউ কেউ অফিসে অর্ধেক সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরে শেষে তাড়াহুড়ো করে শেষ করতে চান। এতে যেমন কাজে ভুল হতে পারে, তেমনই সময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হয় না। কী ভাবে এত কাজ করা যাবে তা নিয়েই উদ্বেগ তৈরি হয়।
৩। সমাজমাধ্যম, ভিডিয়ো, রিল, ওটিটি সিরিজ়ের আকর্ষণ কম নয়। অনেকেই কাজের ফাঁকে বার বার মোবাইল ফোন নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করেন। এতে যেমন মন বিক্ষিপ্ত হয়, তেমনই সময় নষ্ট হয়। মনঃসংযোগেও সমস্যা হয়।
৪। একটা কাজ শুরু করতে না করতে এসে যায় আর একটি, তার পর আর একটি, তার পর আরও একটি। মাল্টিটাস্কিং বা একসঙ্গে একাধিক কাজ করেন অনেকে। কেউ সময় বাঁচাতে, কেউ পরিস্থিতির চাপে। গবেষণা বলছে, ব্রেনের ধর্ম হল, এক বারে একটা বিষয়ে নজর দেওয়া। দীর্ঘ দিন ধরে সেই বিষয়কে অবহেলা করে এক সঙ্গে একাধিক কাজ করলে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করা এবং তা কাজে লাগানোর দক্ষতা কমে যায়। হাজার তথ্যের ভিড় থেকে দরকারি জিনিস বুঝে সেটি কাজে লাগাতেও সমস্যা হয়।
৫। কেউ আবার মনে করেন, কত ক্ষণে কাজ শেষ করব? কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্বস্তি হয় না। কিন্তু চোখ থেকে মস্তিষ্কও বিরাম চায়। ক্ষণিকের বিশ্রামও কিন্তু ক্লান্তি দূর করতে পারে। টানা কাজ যেমন ক্লান্তিকর, তেমনই ভুল হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা বাড়ে। তার চেয়ে কাজের ফাঁকে মিনিট পাঁচেক হেঁটে আসা বা দশ মিনিট কফি নিয়ে আড্ডা অনেক বেশি কার্যকর হতে পারে— বলেন মনোবিদেরাই।