দিনের শেষে বাড়ি ফিরে সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে যদি দেখেন, সামনের টেবিল জিনিসপত্র ভর্তি হয়ে রয়েছে, অ্যাশট্রে পড়ে রয়েছে এক দিকে, এক পাশে ডাঁই করে কাচা জামাকাপড় রাখা... কারই বা মাথার ঠিক থাকে!
বরং সঠিক অন্দরসজ্জা বদলে দিতে পারে বাড়ির রূপ। শুধুমাত্র যেখানকার জিনিস সেখানে রাখার অভ্যাসটুকুই জরুরি নয়। বরং ঘর কী ভাবে সাজাবেন, কোন জিনিস রাখবেন, কোনটি নয়, সেটির প্রভাব পড়ে মনেও।
রং: বসার জায়গা হোক বা শোয়ার ঘর— রঙের গুরুত্বপূ্র্ণ ভূমিকা থাকে। কোনও একটি রং পছন্দ হল মানেই সেটি দেওয়ালে লেপে দেওয়া আধুনিক রূপসজ্জার অঙ্গ নয়। বরং অন্দরসজ্জা শিল্পীরা বলেন, যে ঘরে আলো কম আসে সেখানে এমন রং ব্যবহার করা প্রয়োজন, যাতে রং প্রতিফলিত হয়। ঘর আলোকোজ্জ্বল দেখায়। একই সঙ্গে কিছু কিছু রং মনেও প্রভাব ফেলে। হালকা সবুজ, ধূসর, ল্যাভেন্ডার, লেমোনেডের মতো হালকা রং ঘরের সঙ্গে বেশ মানানসই হয়, চোখের পক্ষেও আরামদায়ক।
সবুজের ছোঁয়া, সুগন্ধী মোম বদলে দিতে পারে ঘরের পরিবেশ। ছবি: সংগৃহীত।
প্রকৃতির স্পর্শ: প্রাকৃতিক উপাদানে ঘর সাজালে মনেও তার প্রভাব পড়ে। এক টুকরো বাগান যেমন মন ভাল করে দেয়, তেমনই অন্দরসজ্জায় সবুজের ছোঁয়া— ক্লান্তি কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। বাড়ির কোনও কোণ বা একাংশ এমন ভাবে সাজাতে পারেন, যেখানে থাকবে আরামের ব্যবস্থা। সেটি হতে পারে কোনও সোফা, আরামকেদারা বা গদি। সামনে রাখতে পারেন গাছপালা। জায়গাটি সাজাতে পারেন টাটকা, ফুল, পাথর কিংবা ছোট কোনও কৃত্রিম ঝর্না দিয়ে।
আরও পড়ুন:
আসবাব: ঘর ছোট হোক বা বড়— আসবাবের বাহুল্য মোটেই দৃষ্টিনন্দন হয় না। ঠাসা জিনিসপত্রের ভিড়ে দু’পা হাঁটতে গেলে ধাক্কা খেতে হলে তা বিরক্তিকর ব্যাপার। তাই প্রথমেই দেখে নিন, কোনও আসবাব বাদ দিয়ে ঘরের উপযুক্ত স্বল্প জায়গায় ধরানো যায়, এমন কিছু কেনা যায় কি না। জায়গা বাঁচানোর জন্য এখন ভাঁজ করা খাবার টেবিল থেকে সোফা কাম বেড— এমন অনেক কিছুই পাওয়া যায়।
আলো
প্রাকৃতিক আলো ঘরে এলে, আলোকজ্জ্বল লাগবে। ছবি: সংগৃহীত।
আলোর সঙ্গে মনের যোগ রয়েছে। যে ঘরে আলো ঢোকে না, স্যাঁতসেতে, তেমন পরিবেশ কিন্তু কারও পছন্দ হয় না। তাই ঘর কী ভাবে প্রাকৃতিক আলোয় ভরবে, সেই দিকে নজর দেওয়া দরকার। জানলা কাচের হলে, হালকা পর্দা ব্যবহার করলে ঘরে আলো আসবে। আবার যে অংশে সূর্যের আলো আসে, সেখানে বড় আয়না রাখলে আলো ঘরে প্রতিফলিত হবে। স্নানঘর থেকে খাওয়ার ঘর, শোয়ার ঘরে আলো নিয়ে ভাবা প্রয়োজন। প্রাকৃতিক আলোর অভাব থাকলে কৃত্রিম আলো কী ভাবে সুকৌশলে ব্যবহার করা যায়, দেখতে হবে। অনেক সময় বিভিন্ন কৌণিক অবস্থানে লাগানো সিলিং আলোও ঘরে মায়াবী পরিবেশ তৈরি করে। ক্লান্ত শরীর এলিয়ে দেওয়ার পর চড়া আলো ভাল লাগে না। তখন কিন্তু এমন আলো মন ভাল করে দিতে পারে।
স্নানঘর: ক্লান্তি কাটানোর ভাল উপায় হল ঈষদুষ্ণ জলে স্নান। স্নানঘরে বাথটাব থাকলে বিষয়টি আরও উপভোগ্য হবে। স্নানঘর শুধু পরিচ্ছন্ন রাখাই যথেষ্ট নয়, সেখানকার অন্দরসজ্জাও গুরুত্বপূর্ণ। মেঝে যেন শুকনো থাকে, বাইরের আলো-হাওয়া আসে, তা নিশ্চিত করতে হবে। স্নানঘরের জিনিসপত্র যদি সুন্দর করে দেওয়ালে ওয়ার্ড্রোব বানিয়ে গুছিয়ে রাখা যায়, দেখতে ভাল লাগবে। সবুজের উপস্থিতি, সুগন্ধি মোম স্নানঘরকে আরও সুন্দর করে তুলবে। মেজাজেও প্রভাব ফেলবে।