বিশ্ব শিশু ক্যানসার দিবসে এক অনুষ্ঠানে ক্যানসার আক্রান্ত শিশুরা। বুধবার, রবীন্দ্র সদনে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
বেশি দিন তো বাঁচবে না। চিকিৎসা করিয়ে লাভ কী? রক্তের ক্যানসার নিয়ে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে আসা কিশোরীকে প্রায়ই এমন কথা শুনতে হত মেদিনীপুরে গ্রামের বাড়িতে ফিরলেই। তবু লড়াই ছাড়েনি পরিবার। চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া তো বটেই, এক সময়ে রোগও হেরে যায় তার কাছে। এর পরে উচ্চ মাধ্যমিকে দারুণ ফল। নার্সিং পরীক্ষাতেও প্রথম বিভাগ। বর্তমানে নার্সের কাজে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া সেই মেয়েকে আর রোগ না সারার কথা শুনতে হয় না গ্রামে ফিরলে। এখন বলা হয়, অতীতের রোগের কথা জানলে তাঁকে কেউ বিয়ে করবে না! অর্থাৎ, লড়াই শুধু রোগের সঙ্গে নয়, রোগকে ঘিরে যে হাজারো সংস্কার, তার সঙ্গেও। চিকিৎসকদের বড় অংশই জানাচ্ছেন, অনেকেই লড়াই ছেড়ে দেন এই পরিস্থিতিতে। চিকিৎসা বন্ধ করে দেওয়া হয় মাঝপথেই। অথচ, ঠিক সময়ে ঠিক চিকিৎসায় ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রেই শিশুদের ক্যানসার সারানো সম্ভব। অনেকেরই সেই সচেতনতা নেই।
বুধবার বিশ্ব শিশু ক্যানসার দিবসে সচেতনতার এই দিকটিই তুলে ধরেছে শিশুদের ক্যানসার চিকিৎসা নিয়ে কাজ করা একাধিক সংগঠন। এমনই একটি সংগঠনের অনুষ্ঠান ছিল রবীন্দ্র সদনে। সেখানে সিনেমা এবং সঙ্গীত জগতের পাশাপাশি ছিলেন পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত লোকজনও। ওই সংগঠনের তরফে পার্থ সরকার বলেন, ‘‘নাকে নল গুঁজে হাসপাতালে শুয়ে থাকা শিশুদের দিকে তাকানো যায় না। অনেক হাসপাতালে থ্যালাসেমিয়া বা এইচআইভি পজ়িটিভের আলাদা বিভাগ থাকলেও শিশুদের ক্যানসার বিভাগ নেই। সরকারকে এটা ভাবতে হবে। এসএসকেএমে ক্যানসারে আক্রান্ত শিশুদের জন্য সেন্টার হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও পাঁচ জায়গায় এমন সেন্টার করার ভাবনা রয়েছে।’’ একই রকম কর্মসূচি হয় ঠাকুরপুকুর ক্যানসার হাসপাতালে। উদ্যোক্তাদের তরফে জয়তী বলেন, ‘‘শিশুদের ক্ষেত্রে এই রোগকে যে হারানো সম্ভব, মানুষকে সেই বিশ্বাস জোগাতে হবে।’’ শিশুদের ক্যানসার চিকিৎসক সোমা দে বলেন, ‘‘শিশুদের মধ্যে রক্তের ক্যানসার বেশি দেখা যায়। কিডনি, হাড় ও মস্তিষ্কে ‘সলিড টিউমার’ ধরা পড়ে। চিকিৎসা করাতে এলেও বহু ক্ষেত্রেইপরিবার প্রতিবেশীদের থেকে খারাপ কথা শুনে চিকিৎসা বন্ধ করে দেয়। চতুর্থ স্টেজে চিকিৎসকের কাছে এলেও সুবিধা হয় না। লোকের কথা না শুনে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে আসতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy