স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এমনিতেই চিকিৎসকের ঘাটতি। তার উপর মাস খানেক আগে কাজে যোগ দেওয়া এক চিকিৎসককে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগ তুলে তেহট্টের অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখালেন এলাকার লোকজন। বৃহস্পতিবার সকালে নদিয়ার থানারপাড়ার নতিডাঙা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর আগে ওই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শয্যা চালু হয়। ৩০ শয্যার ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সারা বছরই রোগীর শয্যা সংখ্যার থেকে বেশি রোগী ভর্তি থাকেন। কিন্তু ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্থায়ী চিকিৎসক সংখ্যা মাত্র তিন।
এ দিন সকালে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বন্ধ্যাকরণের জন্য আসেন তেহট্রের অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শচীন্দ্রনাথ সরকার। তখনই এলাকার লোকজন তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান। কেন বার বার স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে চিকিৎসকদের অন্যত্র বদলি করা হচ্ছে তার জবাবদিহি দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা। স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা বিক্ষোভকারী আনারুল মণ্ডল বলেন, “অনুন্নত এই এলাকার মানুষ চিকিৎসার ব্যাপারে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরই পুরোপুরি নির্ভরশীল। কিন্তু এখান থেকে দফায় দফায় চিকিৎসক তুলে নেওয়া হচ্ছে। তাই আমরা বিক্ষোভ দেখিয়েছি।’’ ঘণ্টা দু’য়েক বিক্ষোভ চলার পর অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিক্ষোভকারীদের দাবি বিবেচনা করার আশ্বাস দেন। তারপর বিক্ষোভ উঠে যায়।
ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক কম থাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবা যে মার খাচ্ছে সে কথা স্বীকার করে করিমপুর-২ ব্লকের বিএমওএইচ প্রণব মল্লিক জানান, এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগীর চাপ প্রবল। কিন্তু অনেকদিন ধরেই আমাকে নিয়ে এখানে চিকিৎসক রয়েছেন তিন জন। বাড়তি চিকিৎসক দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দরবার করা হয়েছিল। সেই মতো মাস চারেক আগে সুব্রত সাহা নামে এক চিকিৎসককে এখানে নিয়োগ করা হয়। কিন্তু কিছু দিন আগে তাঁকে এখান থেকে বদলি করা হয়। আবার তিন সপ্তাহ আগে আর এক চিকিৎসক শুভেন্দু বিশ্বাস এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কাজে যোগ দেন। কিন্তু সপ্তাহ খানেক আগে তাঁকেও তেহট্ট হাসপাতালে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে উপর মহল থেকে। ফলে চিকিৎসক সঙ্কট কাটছে না।
শচীন্দ্রনাথবাবু অবশ্য বলছেন, ‘‘নিয়োগ বা বদলির বিষয়টি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকাকিকের বিবেচনাধীন। আমার কোনও ক্ষমতা নেই।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপসকুমার রায় বলেন, “ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তিন জন চিকিৎসক ছিলেন। পরে দু’জনকে পাঠানো হয়। তার মধ্যে একজনকে তেহট্ট হাসপাতালে বদলি করা হয়েছে। অন্য জন ‘ট্রেনিং’-এর জন্য বাইরে রয়েছেন। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি কাজে যোগ দেবেন। তখন এই সঙ্কট আর থাকবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy