Advertisement
E-Paper

ডেঙ্গি জ্বরে অ্যাসপিরিন খেলে বিপদ বাড়বে

যন্ত্রণায় মাথা ছিঁড়ে যাচ্ছে, সঙ্গে গা, হাত পায়েও ব্যথা। অফিস থেকে বাড়ি ফিরতে হল ধুম জ্বর নিয়ে। ভাবছেন প্যারাসিটামলের সঙ্গে ব্যথার ওষুধও খেতে হবে। কিন্তু ভুলেও তা করবেন না। ডেঙ্গি জ্বর মারাত্মক হতে পারে অ্যাসপিরিন বা ব্যথার ওষুধ খেলে। সাবধান করলেন মেডিসিনের খ্যাতনামা অধ্যাপক চিকিৎসক ডা সুকুমার মুখোপাধ্যায়। যখন তখন বৃষ্টি আর ভ্যাপসা গরম, এডিস ইজিপ্টা আর অ্যানোফিলিস মশাদের বাড়বাড়ন্তের জন্যে আদর্শ আবহাওয়া। সঙ্গে জোট বাঁধে ডেঙ্গি আর ম্যালেরিয়ার জীবাণুরা। এই সময়টায় ভালো থাকার একটাই উপায় মশার হাত থেকে বাঁচা।

সুমা বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৭ ১১:২৪
অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে উঠতে পারে।

অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে উঠতে পারে।

যখন তখন বৃষ্টি আর ভ্যাপসা গরম, এডিস ইজিপ্টা আর অ্যানোফিলিস মশাদের বাড়বাড়ন্তের জন্যে আদর্শ আবহাওয়া। সঙ্গে জোট বাঁধে ডেঙ্গি আর ম্যালেরিয়ার জীবাণুরা। এই সময়টায় ভালো থাকার একটাই উপায় মশার হাত থেকে বাঁচা। শহরাঞ্চলের মানুষদের মশারির সঙ্গে আড়ি অনেক দিনের। তাই মশাবাহিত ডেঙ্গি আর ম্যালেরিয়া দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ইদানীং ডেঙ্গি জ্বরের প্রবণতা খুব বেড়েছে। তাই জ্বর হলে ফেলে না রাখাই মঙ্গল।

সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা হলে মাথা ব্যথা সহ শরীর জুড়ে ব্যথার প্রবণতা থাকে। ডেঙ্গি জ্বরও তাঁর ব্যতিক্রম নয়। একটা কথা মনে রাখতে হবে সাধারণ জ্বর হলে গা হাত পা ব্যথা কমাতে অনেকেই আইব্রুফেন বা অ্যাসপিরিন জাতীয় ব্যথার ওষুধ খান। কিন্তু ঘনঘোর বর্ষার দিনে ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তের সময় এই ধরনের ওষুধ ভুলেও খাবেন না। ডেঙ্গি হেমারেজিক ফিভার হলে অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মারাত্মক। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে উঠতে পারে।

আরও পড়ুন: সাবধান থাকুন, মারাত্মক হতে পারে ডেঙ্গি হেমারেজিক ফিভার

জ্বর হলে অবশ্যই প্রথন দু’তিনদিনের মধ্যে এনএসওয়ান অ্যান্টিজেন টেস্ট করিয়ে নেওয়া জরুরি। অবশ্য একই সঙ্গে উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসাও করে যেতে হবে। ডেঙ্গি জ্বর হলে শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দেয়। তাই জ্বর হলে জ্বরের ওষুধ খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বারে বারে জল ও লিক্যুইড খাবার খেতে হবে। জল, শরবত, ফল, ফলের রস, পাতলা ঝোল, ডাল, স্যুপ ইত্যাদি খাবার বারে বারে খেতে হবে। ঘন্টায় ঘন্টায় জল ও জলীয় খাবার খেলে ডিহাইড্রেশনের ভয় থাকবে না।

শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু প্রবেশ করেছে কিনা পরীক্ষা করে জানা যায় তিন থেকে পাঁচ দিনের মাথায়। কিন্তু এর মধ্যে রোগীকে ঠিক রাখতে অবশ্যই ডাক্তার দেখানো দরকার। অনেক সময় জ্বরের সঙ্গে পেটের গোলমাল ও বমি থাকতে পারে। তাই ডিহাইড্রেশনের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হতে পারে। ডেঙ্গি সন্দেহ হলে কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট করা আবশ্যক। এই প্রসঙ্গে একটা কথা জেনে রাখা দরকার যে প্রথম দু’তিনদিনের মধ্যে এনএসওয়ান অ্যান্টিজেন টেস্ট নেগেটিভ হলেই যে ডেঙ্গি জ্বর হয়নি তা বলা যায় না। দরকার হলে রিপিট টেস্ট করতে হয়। এ ছাড়া আইজিএম ও আইজিজি এলাইজা টেস্ট করাতে হতে পারে।

আরও পড়ুন: ডেঙ্গি নয়তো? জ্বর হলেই রক্ত পরীক্ষা করান

ডেঙ্গি জ্বর হলে অনেক সময় ব্লাড প্রেশার কমতে শুরু করে ও শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্তপাত হয়। এই অবস্থায় পৌঁছনোর আগেই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে দেওয়া দরকার।

তবে সব থেকে আগে প্রয়োজন ডেঙ্গির মশা দমন করা। নিজেদের বাড়িতে তো বটেই, আশেপাশে কোথাও জল জমতে দেখলে সতর্ক হতে হবে। বিশেষ করে যে সব অঞ্চলে নতুন বাড়ি তৈরি হচ্ছে সেই অঞ্চলের পরিবেশের দিকে নজর রাখতে হবে। স্থানীয় ক্লাব ও সরকারি দফতরে জানিয়ে জমা জল পরিষ্কার করতে হবে। মশার লার্ভা দেখলেই তা বিনাশের ব্যবস্থা করা ভীষণ ভাবে জরুরি। ডেঙ্গির সঙ্গে জমা জলে ম্যালেরিয়ার জীবাণুবাহী মশারাও ডিম পাড়ে ও রোগ ছড়ায়। আমরা প্রত্যেকে এই ব্যাপারে সজাগ থাকলে তবেই সমস্যার সমাধান সম্ভব। বিকেল হলেই বাড়ির দরজা জানলা বন্ধ করে দিলে মশার হাত থেকে কিছুটা রেহাই মেলে। আর মশারি টাঙিয়ে ঘুমনো বাধ্যতামূলক। তবেই ডেঙ্গি ম্যালেরিয়ার থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাওয়া যাবে।

Aspirin Dengue Fever WHO Mosquito Borne Disease ডেঙ্গি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy