আপনি কি রোজ পরিমাণ মতো খাবার খেয়ে, ঘুমিয়েও অসুস্থ বোধ করেন? ক্লান্ত মনে হয় নিজেকে? তা হলে হয়তো পর্যাপ্ত খেলেও খাবার ঠিক মতো হজম হচ্ছে না, বা পর্যাপ্ত পুষ্টিগুণ শরীরে পৌঁছচ্ছে না। আর গ্রিক গবেষকরা জানাচ্ছেন, তা হচ্ছে আপনারই কিছু বদভ্যাসের কারণে। খাওয়ার পরই এই ৪ বদভ্যাস যদি আপনার থেকে থাকে, তা হলে আজই বাতিল করুন।
১। ঘুম
হয়তো আপনার রোজ রাতে খেতে বেশি দেরি হয়, আর তার পরেই সোজা ঘুমোতে চলে যান। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, খাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে ঘুমোতে গেলে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। খাওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা পর ঘুমোতে গেলে এই ঝুঁকি দুই-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। আর তার পরে প্রতি ২০ মিনিটে এই ঝুঁকি ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।
খাওয়ার ঠিক পরেই ঘুমোতে গেলে শরীরে অ্যাসিড রিফ্লাক্স বাড়ায়। যার ফলে স্লিপ অ্যাপনিয়া হয়। স্ট্রোকের অন্যতম কারণ স্লিপ অ্যাপনিয়া। তা ছাড়াও খাওয়ার পর রক্তে শর্করা, কোলেস্টেরলের মাত্রার পরিবর্তন হয় যা ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।
২। চা
চা ও গরম পানীয় খাবার হজম করতে সাহায্য করে। কিন্তু এর একটা খারাপ দিকও রয়েছে। হার্বাল চা, কালো চা, কফি, গ্রিন টি, এমনকী কোকোর মধ্যে থাকা পলিফেনলিক যৌগ শরীরে আয়রন শোষণের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এই সব পানীয় শরীরের জন্য পুষ্টিকর হলেও খাওয়ার ঠিক পরই খেলে শরীর খাবার থেকে পর্যান্ত আয়রন পায় না। যা রক্তাল্পতার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই খাওয়ার পর চা বা কফি এড়িয়ে চলুন। তার বদলে খাওয়ার ২০-৩০ মিনিট পর মৌরি, আদা বা পুদিনার জল খেতে পারেন।
৩। শরীরচর্চা
অতিরিক্ত স্বাস্থ্য সচেতনরা খাওয়ার পরই হয়তো সুইমিং করতে বা শরীরচর্চা করতে শুরু করে দেন। এতে কিন্তু পরিপাকক্রিয়া ও শরীর, উভয়েরই ক্ষতি হচ্ছে। হজম ভাল ভাবে হওয়ার জন্য খাদ্যনালীতে পর্যাপ্ত রক্ত সঞ্চালন প্রয়োজন। শরীরচর্চার জন্য শরীরের ৮০ শতাংশ রক্ত পেশীতে পৌঁছনো প্রয়োজন। খাওয়ার ঠিক পরই শরীরচর্চা করলে পর্যাপ্ত রক্তের জন্য পেশী ও খাদ্যনালীর প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দুটোই।
আবার শরীরচর্চার জন্য পেশীর এনার্জি প্রয়োজন। খাওয়ার ঠিক পরই রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকে। ফলে শরীরে সঞ্চিত মেদ থেকে এনার্জি নেওয়ার বদলে রক্ত থেকে সরাসরি এনার্জি গ্রহণ করে পেশী। তাই আপনি যতই ভাবুন মেদ ঝরানোর জন্য শরীরচর্চা করছেন, প্রকৃতপক্ষে সেটা হচ্ছে না মোটেও।
সবচেয়ে ভাল ফল পেতে খাওয়ার এক ঘণ্টা পর শরীরচর্চা করুন। এতে পেশীতে টানও ধরবে না।
৪। ধূমপান
খাওয়ার পর সিগারেট খেলে নিকোটিন খাবারের পুষ্টিগুণ শুষে নেয়। যারা ধূমপান করেন তারা সাধারণত ফল ও সব্জি কম খেয়ে থাকেন। তার উপর, নিকোটিনের প্রভাবে ফলের অধিকাংশ ভিটামিন ও মিনারেলও শরীরে ঠিক মতো পৌঁছয় না। শুধুমাত্র একটা সিগারেটই শরীর থেকে ভিটামিন সি শুষে নিতে যথেষ্ট। এ ছাড়াও নিকোটিন শরীর থেকে অন্যান্য প্রয়োজনীয় অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যেমন বি-ক্যারোটিন, ভিটামিন ই, জিঙ্ক ও সেলেনিয়ামের মাত্রা কমিয়ে দেয়। যা ধূমপানের ফলে শরীরে জমা হওয়া ফ্রি-র্যাডিক্যালের মোকাবিলা করার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ফলে বাড়তে থাকে ক্যানসারের ঝুঁকি।
আরও পড়ুন: নিজেরই এই ৫ বদভ্যাস হতে পারে আপনার অবসাদের কারণ
ধূমপান শরীরে ভিটামিন ডি শোষণের বাধা দেয়। ফলে উপযুক্ত ক্যালসিয়াম শোষিত হয় না। যার ফলে হাড় ও অস্টিওপরেসিসের সমস্যা হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy