দু’বেলা টোনার মাখেন। ত্বকচর্চার গুরুত্বপূর্ণ ধাপেই রয়েছে টোনার। অর্থাৎ টোনার কেনার জন্য প্রতি মাসে বড় অঙ্কের টাকা বেরিয়ে যায়। কিন্তু যদি ঘরোয়া উপাদান দিয়েই উন্নত মানের টোনার বানাতে পারেন, তা হলে টাকাও বাঁচবে, উপকারও বেশিই। শীত, গ্রীষ্ম, দুই ঋতুতেই শুষ্ক ত্বকের সমস্যায় যাঁরা ভোগেন, তাঁদের জন্য হাইড্রেটিং টোনার বেশ কার্যকরী। বিশেষ করে এই গ্রীষ্মে রুক্ষ ত্বকে জেল্লা ফেরাতে হলে ঘরে ৭ রকমের টোনার বানিয়ে নিন। বাড়িতে যে উপাদান সহজে মিলবে, সেটিই বেছে নেবেন নিজের জন্য।
৭টি টোনারের প্রস্তুতপ্রণালী
১. অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার টোনার: অ্যাপেল সাইডার ভিনিগারের মধ্যে যে অ্যাসিডিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তা ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য বজায় রাখে। ফলে ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখতে সক্ষম। এক কাপ ভর্তি অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার এবং তিন কাপ জল নিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। তার পর একটি বোতলে সংরক্ষণ করে রেখে দিন। প্রয়োজন মতো ব্যবহার করুন।
২. গোলাপজলের টোনার: সবচেয়ে নিরাপদ টোনারগুলির মধ্যে এটি অন্যতম। গোলাপজলও ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য বজায় রাখে। পাশাপাশি, ময়েশ্চারাইজ় করে ত্বককে। ৪০ মিলিলিটারের গোলাপজল নিয়ে তাতে ৫ মিলিলিটার গ্লিসারিন মিশিয়ে নিন। একটি বোতলে সংরক্ষণ করে ব্যবহার করুন।
৩. শশার টোনার: গ্রীষ্মে শশার মতো শীতলীকরণ বৈশিষ্ট্যযুক্ত উপাদান ব্যবহার করলে খুবই আরাম মেলে ত্বকে। রোদে পোড়া ত্বকেরও মেরামতি করতে পারে শশার জল। টোনার বানানোর জন্য দু’টি শশাকে মিহি করে গ্রেট করতে হবে। তার পর সেগুলি চিপে রসটুকু বার করে নিতে হবে। সেই রসই বোতলে ভরে টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।

গ্রীষ্মে শশার টোনার বানিয়ে নিন। ছবি: সংগৃহীত।
৪. গ্রিন টি টোনার: অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল বৈশিষ্ট্যে ভর্তি এই টোনার বানাতে দু’কাপ জল ফুটিয়ে তাতে দু’টি গ্রিন টি ব্যাগ ভিজতে দিন। চা-টিকে একটি বোতলে ভরে ব্যবহার করতে পারেন।
৫. চাল ধোয়া জলের (রাইস ওয়াটার) টোনার: কোরিয়ার ত্বকচর্চা নিয়ে জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির পর থেকে রাইস ওয়াটার বা চাল ধোয়া জলেরও কদর বেড়েছে। কাচের মতো ঝকঝকে ত্বক পাওয়ার জন্য এই টোনারটি বানাতে পারেন। চাল ধোয়া জল নিয়ে বোতলে ভরে রেখে দিনে দু’বার ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল বৈশিষ্ট্যে ভর্তি গ্রিন টি টোনার। ছবি: সংগৃহীত।
৬. অ্যালো ভেরা-ভিটামিন ই টোনার: ত্বক থেকে জলশূন্যতার সমস্যা দূর করার জন্য অ্যালো ভেরা জেলের জুড়ি মেলা ভার। অন্য দিকে ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়ার গতি শ্লথ করে দিতে পারে ভিটামিন ই। তাই এই দুই উপাদান দিয়ে সহজে বাড়িতে বানিয়ে নিতে পারেন টোনার। অ্যালো ভেরার একটি পাতা নিয়ে সেখান থেকে জেলটুকু চেঁছে বার করে নিন। থকথকে জেলটিকে ভাল করে নাড়িয়ে তরল করে ফেলুন। তার পর অল্প একটু গোলাপজল আর ভিটামিন ই-র একটি ক্যাপসুল মিশিয়ে দিন। মিশ্রণটি বোতলে ভরে রেখে ব্যবহার করুন।
আরও পড়ুন:
৭. টম্যাটোর টোনার: রোদেপোড়া ত্বক থেকে ট্যান দূর করতে, ত্বকের আর্দ্রতা ফেরাতে টম্যাটোর টোনার ব্যবহার করে দেখুন। একটি টম্যাটো পিষে রস বার করে নিন। এতে তিন চামচ জল মিশিয়ে দিন। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই টোনার ত্বকের বহু সমস্যার সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারে।
যে টোনারই বানান না কেন, বোতলে ভরে ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। গ্রীষ্মে তুলোর বলের মধ্যে ঠান্ডা টোনার নিয়ে মুখে মাখলে আরামও হবে, ত্বকেরও উপকার হবে। শুষ্ক ত্বক আর্দ্র থাকবে অনেক ক্ষণ।