মুখে কালচে বাদামি রঙের ছোপ। হয় গালে, নয়তো চোখের নীচে, নাকের পাশে কিংবা থুতনিতে। আয়নায় মুখ দেখলে সবার আগে সেগুলোই চোখে পড়ে। সাজগোজ করতে হলে আগে ঢাকতে হয় তাদের। এই অনবরত সচেতন থাকা কখনও সখনও বিরক্তিও জায়গায়। অথচ দাগ পিছু ছাড়ে না। বছরের পর বছর একই ভাবে চেপে বসে থাকে!
ত্বকে এই ধরনের বাদামি ছোপকে চিকিৎসার ভাষায় বলা হয় পিগমেন্টেশন। যা নানা কারণে হতে পারে। চড়া রোদে দীর্ঘ ক্ষণ বাইরে থাকা, বয়স বৃদ্ধি, হরমোনের সমস্যা-সহ বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে এর। আপনি তা জানেন। পিছু ছাড়ানোর চেষ্টাও কম করেননি। ক্রিম, মাস্ক, ফেস প্যাক, ব্লিচ, পার্লারে ট্রিটমেন্ট বাদ দেননি কিছুই। তাতেও লাভ হয়নি। এখন যদি জানতে পারেন, এত কিছুর বদলে রান্নাঘরে থাকা খুব চেনা দুটি জিনিস দিয়েই এই দাগ তুলে ফেলা সম্ভব তাহলে?
ফেস যোগা বা মুখের যোগাসন নিয়ে চর্চাকারী মানসি গুলাটি বলছেন,
ছোট এলাচ আর মধু দিয়ে তৈরি একটি পানীয় নিয়মিত খেলে তা প্রাকৃতিক ভাবে ওই পিগমেন্টেশন বা দাগছোপ তুলে দিতে পারে। সে দাগ যদি ১০ বছরের পুরনো হয় তা হলেও!
কী এমন আছে ওই দুই উপাদানে?
১। এলাচ: মানসী জানাচ্ছেন, এলাচ যেমন আপনার চা বা রান্নার স্বাদ বৃদ্ধি করতে পারে। তেমনই শরীর থেকে দূষিত পদার্থ টেনে বার করে দিতেও কার্যকরী। শরীর থেকে টক্সিন বেরিয়ে গেলে ত্বক আপনা থেকেই উজ্জ্বল হবে। দাগছোপ কমবে। এছড়া এতে আছে প্রদাহনাশক উপাদান। ত্বকের লালচে বা কালচে ছোপকে আরও গাঢ় করে তোলে প্রদাহ। তা হতে দেয় না এলাচ। পাশাপাশি, এই সুগন্ধী মশলা ত্বকে রক্তসঞ্চালনও বৃদ্ধি করে। যা ত্বকের রং উজ্জ্বল করতে পারে।
২। মধু: ত্বকের জন্য মধুর উপকারিতার কথা বহু যুগ ধরে বলে আসছে ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্র। রূপচর্চা শিল্পীরাও নানা ঘরোয়া প্যাকে মধু মেশাতে বলেন, সে কথা ভেবেই। কারণ মধু ত্বককে আর্দ্র রেখে তাতে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। মধু ত্বকের স্বাস্থ্যও ভাল রাখে। এতে আছে অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান। যা ত্বকে ব্রণ বা র্যাশের মতো সমস্যা হতে দেয় না। এ ছাড়া রোদ থেকে পড়া দাগছোপও তুলতে পারে মধু।
কী ভাবে বানাতে হবে ওই পানীয়?
সবুজ রঙের ছোট এলাচ হামানদিস্তায় গুঁড়িয়ে নিন। এ বার এক চিমটে এলাচ গুঁড়ো আর আধ চা চামচ ভাল মধু মিশিয়ে নিন। এ বার আধ কাপ ঈষদুষ্ণ জলে তা মিশিয়ে নিয়ে প্রতি দিন সকালে খালিপেটে পান করুন। মানসী জানাচ্ছেন, এক মাসের মধ্যে তফাত চোখে পড়বে। তবে একই সঙ্গে মানসী বলছেন, এর পাশাপাশি সারা দিন বেশি করে জল খাওয়াও জরুরি।