ব্রত-পার্বণ উপলক্ষে অনেকেই নির্জলা উপোস করেন। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত টানা খাবার, জল না খেয়ে থাকতে হয়। হঠাৎ করে রুটিনে এমন পরিবর্তন এলে শরীর খানিক ঝিমিয়ে পড়ে। জলের ঘাটতিও দেখা দেয়। অনেকে ডিহাইড্রেশনের সমস্যায় ভোগেন। চর্মরোগ চিকিৎসকেরা বলছেন, শরীরে জলের অভাব হলে তার ছাপ প্রথম ফুটে ওঠে মুখে। ডিহাইড্রেশন থেকে ত্বক নিষ্প্রাণ হয়ে যায়, জেল্লা হারায়। তাই এই সময়ে ত্বকের বিশেষ যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে।
আরও পড়ুন:
জলের অভাবে ত্বকে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে?
১) ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে পড়তে পারে। ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজ়ার মেখেও তা রোধ করা যায় না। শরীরে জলের ঘাটতি হলে ত্বকের ইলাস্টিসিটি নষ্ট হয়। ত্বকের সূক্ষ্ম ভাঁজগুলি আরও স্পষ্ট এবং গভীর হয়ে ওঠে।
২) হঠাৎ করে রুটিনে পরিবর্তন এলে শরীর তার সঙ্গে তাল মেলাতে পারে না। শরীরের নিজস্ব প্রক্রিয়াগুলি খানিক দিশাহারা হয়ে পড়ে। ডিটক্সিফিকেশন বা শরীরে জমে থাকা দূষিত পদার্থ বার করে দেওয়ার প্রক্রিয়াতেও বিঘ্ন ঘটে। ফলে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে পড়ে। তখন শরীরের নিজস্ব প্রতিরোধ ক্ষমতা সক্রিয় হয়ে পড়ে। তৈলগ্রন্থি থেকে তেল বা সেবাম ক্ষরণের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। সে ক্ষেত্রে মুখে ব্রণের বাড়বাড়ন্ত হওয়া অস্বাভাবিক নয়।
৩) শরীরে জলের অভাব হলে চোখের তলায় কালি পড়তে পারে। যাঁদের ডার্ক সার্কল রয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রে ওই কালচে ভাব আরও গাঢ় হয়ে উঠতে পারে। চোখের তলায় ফোলা ভাব বা ‘পাফিনেস’ দেখা দিতে পারে।
আরও পড়ুন:
এই ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি উপায় কী?
১) দিনের যে সময়ে জল খাওয়া যায়, অর্থাৎ উপোস ভাঙার পর থেকে পর্যাপ্ত জল খেতে হবে। তাতে দীর্ঘ ক্ষণ জল না খাওয়ায় শরীরে জলের যে ঘাটতি হয়েছে, তা খানিকটা হলেও পূরণ হবে।
২) একবারে অনেকটা জল খেতে না পারলে এমন ফল খেতে পারেন, যাতে জলের পরিমাণ বেশি। এই সময়ে তরমুজ, শসা, ফুটি, জামরুল, ডাবের জল বেশি করে খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরা।
৩) সাধারণ জলের বিকল্প হিসাবে ফলের রস, ভেষজ চা খাওয়া যেতে পারে। উপোস ভাঙার পরে ইনফিউস্ড ওয়াটার, চিয়া বা তিসি ভেজানো জল খাওয়া যেতে পারে।
৪) মুখে ঘন ঘন জলের ঝাপটা দিলে, টোনার বা মিস্ট স্প্রে করলে অনেকটা উপকার হয়। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে এই টোনার বা মিস্ট ব্যবহারের পরিমাণ এই সময়ে বাড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে।
৫) ত্বক আর্দ্র রাখতে অ্যালো ভেরা জেল, গ্লিসারিন, হায়ালুরনিক অ্যাসিডযুক্ত ময়েশ্চারাইজ়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। রাতে শোয়ার সময়ে ময়েশ্চারাইজ়ার মাখার আগে ফেস সিরামও ব্যবহার করতে পারেন।