বাড়িতে থাকলে সবচেয়ে নরম, পাতলা আর আরামের পোশাকটিই গরমের সম্বল। কিন্তু বাইরে বেরোলে ঠিক কেমন সাজলে আরামে থাকবেন, আবার কেতাদুরস্তও দেখাবে?
যাঁরা নিয়মিত অফিস যান বা প্রায়ই বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে বাইরে বেরোন, গ্রীষ্মকালে আলমারির সামনে দাঁড়িয়ে প্রতি বারই তাঁদের এই চিন্তায় দিনের বেশ খানিকটা সময় নষ্ট হয়। অন্তত তাঁরা যদি নিজেদের স্টাইল নিয়ে সচেতন হন, তা হলে তো বটেই।
তবে এ ব্যাপারে সাহায্য নেওয়া যেতে পারে বলিউডের তারকাদের থেকে। তাঁরা গরমে কেমন সাজেন, কী ধরনের পোশাক পরেন, সে দিকে নজর দিলে সাজপোশাক এবং চলতি ফ্যাশনের ধারা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা হয়। এই গ্রীষ্মে তাই এক ঝলক দেখে নিন, বলিউডের তারকারা গ্রীষ্মকালীন ফ্যাশন হিসাবে কী পরছেন।
ওয়ামিকা গব্বি
এখন তিনি বলিউডের পুরুষ ভক্তদের নয়নমণি। ওয়ামিকা গব্বি যেমনই সাজুন, তাঁকে দেখে দীর্ঘশ্বাস পড়ে সেই অনুরাগীদের। তবে এখানে ওয়ামিকার পরনের পোশাক দু’টি মহিলাদেরও মুগ্ধ করবে। সুতির স্লিভলেস টপের সঙ্গে একটি ওভারসাইজ়ড জিনস পরেছেন নায়িকা। সঙ্গে পরেছেন বুট। বন্ধুদের সঙ্গে সন্ধ্যায় বেরনোর পরিকল্পনা থাকলে এ পোশাক আদর্শ হতে পারে। আবার তাঁর শাড়িটিও বেশ ফুরফুরে মেজাজের। প্রজাপতির ছাপ দেওয়া হালকা শিফনের সঙ্গে একই ছাপের ব্লাউজ় পরেছেন। গরমে এই ধরনের ছাপের শাড়ি বা পোশাক দেখতেও ভাল লাগে।
ঈশান খট্টর
ইনি এখন নিজের নামে কম, মহারাজা নামেই খ্যাত হয়েছেন বেশি। নেটফ্লিক্সের সিরিজ় ‘দ্য রয়্যালস’ মুক্তি পাওয়ার পর থেকে ঈশানের মহিলা ভক্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। অভিনেতা সম্প্রতি কান চলচ্চিত্রোৎসবে গিয়ে নানা ধরনের স্মার্ট পোশাকে ফ্যাশন দুনিয়ার নজর কেড়েছেন। এই দু’টি তার মধ্যে গরমের ফ্যাশন হিসাবে অনুসরণযোগ্য। সাদা ওভারসাইজ়ড বুক খোলা শার্টের সঙ্গে সাদা ট্রাউজ়ার্স। অন্য ছবিতে ঈশানকে দেখা যাচ্ছে একটি ফিটেড টি শার্টের সঙ্গে ঢিলা কালো ট্রাউজ়ার্সে। অফিসে ড্রেসকোডের সমস্যা না থাকলে প্রথমটি পরা যেতেই পারে। দ্বিতীয় পোশাকটি বন্ধুদের সঙ্গে ‘নাইট আউট’-এর জন্য আদর্শ।
জাহ্নবী কপূর
গরমে ফুলছাপ জামার কোনও তুলনা নেই। হাঁসফাঁস গ্রীষ্মেও এমন পোশাক দেখলে কয়েক মুহূর্তের জন্য মনে সুপবন বয়ে যায়। জাহ্নবীকে দেখেও তা-ই মনে হচ্ছে। এমন প্রিন্টের ড্রেস অফিস এবং ক্যাজ়ুয়াল আউটিং— উভয় ক্ষেত্রেই মাননসই।
বরুণ ধওয়ান
বরুণ পরেছেন লিনেনের উপর টাই অ্যান্ড ডাই প্রিন্টের কো অর্ড সেট। গরমে এই জামা যেমন আরামদায়ক তেমনই ফ্যাশনেবলও। কো অর্ড সেট মহিলাদের হয় বলেই মনে করেন অনেকে। তবে এখানে বরুণকেও তাতে মানাচ্ছে। পোশাকের রংটিও গরমের জন্য আদর্শ।
করিনা কপূর
মিষ্টি গোলাপি রঙের একটি ফ্রক পরেছেন করিনা কপূর। তাঁকে দেখে মনে হচ্ছে, বয়স অনেকটা কমে গিয়েছে। এ ফ্রকের কলার আর হাতা শার্টের মতো। অথচ নীচের অংশে ফ্রিল দেওয়া ঘের। জামার ঝুল গিয়ে থেমেছে হাঁটু থেকে সামান্য নীচে আর গোড়ালির সামান্য উপরে। পোশাকটি গরমের সকালের জন্য আদর্শ। এমনকি, চাইলে অফিসেও পরা যেতে পারে।
কর্ণ জোহর
পেশায় পরিচালক-প্রযোজক। তাতে কি! ফ্যাশনে এখন বলিউডের নায়কদেরও টেক্কা দিচ্ছেন কর্ণ জোহর। এয়ারপোর্টে কিছু দিন আগে তাঁকে দেখা গেল এই পোশাকে। হাঁটুর উপর পর্যন্ত ঝুলে থাকা পাঠানি কেতার পাঞ্জাবি। তার সঙ্গে অনেকটা আগেকার দিনের হাতি-পা পাজামার মতো লিনেনের ট্রাউজ়ার্স। পায়ে কালো চপ্পল। কর্ণকে ওই পোশাকে দেখে মনে হচ্ছিল, পোশাকে আভিজাত্যের ছাপ বোধ হয় একেই বলে। অথচ কী আরামদায়ক এবং বাহুল্যবর্জিত!
অনন্যা পাণ্ডে
টাই অ্যান্ড ডাই ছাপের এই ধরনের কাপড়তে বলা হয় শিবোরি। অনন্যা পরেছেন সেই শিবোরি নকশার একটি শিফনের জামা। ইদানীং টাই অ্যান্ড ডাই ফ্যাশনে নতুন করে ফিরছে। এই ধরনের কাপড়ে মেয়েদের কাফতান থেকে শুরু করে এ লাইন ড্রেস, টপ— সবই গ্রীষ্মকালীন ফ্যাশন হিসাবে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। অনন্যার মতো শিবোরি ড্রেস পরতে পারেন আপনিও। নিজের ইচ্ছেমতো আকৃতির পোশাক বেছে নিন।
দিলজিৎ দোসাঞ্জ
ফ্যাশন দুনিয়ায় গায়কদের পোশাক নিয়ে কমই আলোচনা হয়েছে। কিন্তু দিলজিৎ তাঁর গান আর অভিনয় প্রতিভার পাশাপাশি ফ্যাশন বিগ্রহ হিসাবেও জনপ্রিয়। তাঁর পোশাক দেখে অনুসরণ করেন অনেকেই। ছবিতে দিলজিৎকে দু’ধরনের পোশাকে দেখা যাচ্ছে। একটি টাই অ্যান্ড ডাই শার্ট। সাদা-হলুদ উজ্জ্বল রঙের ওই শার্ট গরমের সকালের আদর্শ পোশাক হতে পারে। এর সঙ্গে পরা যেতে পারে জিনস। দ্বিতীয় ছবিতে দিলজিতের কালো ওভারসাইজ়ড শার্টে আল্পনার নকশা। বিপরীত রঙের ট্রাউজ়ার্সেও রয়েছে সেই নকশার ছোঁয়া। গ্রীষ্মের রাতে ক্যাজুয়াল পার্টি লুক হতে পারে ওই দ্বিতীয় পোশাকটি।