ক্রমাগত পায়ে ব্যথা, দুর্বলতা? চিকিৎসকের কাছে গিয়ে রক্ত পরীক্ষায় জানা গেল ভিটামিন ডি-এর অভাব। শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরি ভিটামিনটির অভাব হলে গায়ে হাত পায়ে ব্যথা হয়, হাড় ভঙ্গুর হয়ে পড়ে, ক্লান্তি, দুর্বলতার মতো লক্ষণ দেখা দেয়, এ কথা সকলেই জানেন। কিন্ত চুলের বাড়বৃদ্ধিতেও ভিটামিন ডি-এর ভূমিকা রয়েছে, সে কথা জানেন কি?
চুলের বৃদ্ধি হয় ফলিক্ল থেকে। চুলের গোড়া মজবুত না হলে যেমন চুল ঝরবে তেমনই, চুলের বাড়বৃদ্ধির জন্য ফলিক্লেরও পুষ্টি দরকার। সেই পুষ্টি জোগাতে, নতুন ফলিক্ল তৈরিতে সাহায্য করে ভিটামিন ডি। এই ভিটামিনের অভাবে চুল ঝরা বেড়ে যেতে পারে।
সাধারণত, সূর্যালোকের সংস্পর্শে ত্বকেই ভিটামিন ডি তৈরি হয়। তবে সবসময় তা দিয়েই ঘাটতি পূরণ হয় না। ভিটামিন ডি-র পুষ্টিগুণ শোষণেরও কিছু শর্ত থাকে। কোনও কারণে, সেটি না হলে এমন সমস্যা দেখা দেয়।
আরও পড়ুন:
চুল ভাল রাখার জন্য শুধু ভিটামিন ডি নয়, প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, জ়িঙ্ক-সহ বিভিন্ন খনিজের দরকার হয়। কোন খাবারে ভিটামিন ডি এবং আনুষঙ্গিক পুষ্টিগুণ মিলবে?
ডিমের কুসুম: ডিম অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। ডিমের কুসুমে মেলে ভিটামিন ডি। এতে ৪০আইইউ-এর মতো ভিটামিন মেলে। তা ছাড়া, ডিমে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, প্রোটিন, খনিজ শুধু চুল নয়, শরীরের পক্ষেও উপকারী। সুতরাং লিভার বা হজমের কোনও সমস্যা না থাকলে ডায়েটে একটি করে ডিম রাখা দরকার। ভাজা, কারি নয়, সেদ্ধ বা ডিমের পোচেই এর পুষ্টিগুণ বেশি মিলবে।
মাশরুম: প্রোটিনে ভরপুর মাশরুমও কিন্তু ভিটামিন-ডির উৎস। একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মাশরুম একটু রোদে রাখলে এতে ভিটামিন ডি-এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়। স্যুপ, স্যালাড, অমলেটে মাশরুম খাওয়া যেতে পারে। এতে সেলেনিয়াম এবং এরগোথিওনেইন নামে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট মেলে। প্রোটিন পাওয়া যায় এতে। প্রতিটি উপাদানই চুলের জন্য ভাল।
পনির: খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন পনির। এতেও ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। ভিটামিন ডি ক্যালশিয়াম শোষণে সহায়ক। তবে তেল-মশলা দিয়ে কষিয়ে রাঁধা নয়, অল্প আঁচে নেড়েচেড়ে নিলে এই খাবারের পুষ্টিগুণ বেশি পাওয়া যাবে।
ঘি: ঘিয়ে শুধু স্বাস্থ্যকর ফ্যাট নয়, মেলে ভিটামিন ডি, এ, কে এবং ই। খুব বেশি যে ভিটামিন ডি পাওয়া যায় এতে, তা নয়। তবে ঘিয়ের অনেক উপকারিতা। ডায়েটে নিয়মিত ঘি রাখলে চুল ভাল থাকবে।
তৈলাক্ত মাছ: যে কোনও মাছই চুলের জন্য ভাল। এতে প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজ মেলে। তবে স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ ভাবে উপকারী তৈলাক্ত মাছ। এতে ওমেগা ফ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের পাশাপাশি মেলে ভিটামিন ডি। রুই, ইলিশ, সুরমাই এমন নানা মাছ রাখতে পারেন তালিকায়।
মাখবেনও কী?
স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুলের জন্য প্রয়োজন সঠিক পুষ্টি। প্রোটিন, ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন চুলের বাড়-বৃদ্ধিতে সহায়ক তেমনই দরকার পরিচর্যার। শ্যাম্পু করা, তেল মাখা ছাড়াও মাঝে মধ্যে প্যাক মাখলে চুল ভাল থাকে। ডিমের কুসুম দিয়ে প্যাক বানিয়ে নিতে পারেন। চুল রুক্ষ হলে দু’টি ডিমের কুসুমের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ নারকেল তেল এবং কয়েক ফোঁটা মধু মিশিয়ে নিন। সমস্ত উপকরণ ভাল করে মিশিয়ে পরিষ্কার চুলে ১৫-২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। তার পর ধুয়ে, শ্যাম্পু করে নিন। তৈলাক্ত চুল হলে ডিমের কুসুমের সঙ্গে পাতিলেবুর রস এবং অ্যালো ভেরা জেল মিশিয়ে নিতে পারেন।