গরমে, ঘামে, চুলে বার বার জট পড়ে যায়? কখনও বা শুষ্ক হয়ে গিয়ে ভাঙন ধরে যায় চুলের আগায়। নাজেহাল অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে পারে আপনার বাড়ির একটি উপাদান। আগের প্রজন্মের কাছে যা ত্বকচর্চার জন্য, ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য খুব কার্যকরী ছিল। আপনিও এখন থেকে সেই গ্লিসারিনে ভরসা রাখতে পারেন চুলের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে। তেলচিটে নয়, বরং চকচকে রেশমের মতো চুল পেতে পারেন।
গ্লিসারিন বা গ্লিসারল আসলে বর্ণহীন, গন্ধহীন এক ধরনের সুগার অ্যালকোহল, যা উদ্ভিদ থেকে পাওয়া যায়। আবার কৃত্রিম ভাবেও তৈরি করা যেতে পারে। এটি এমন এক প্রাকৃতিক হিউমেক্ট্যান্ট, যা আমাদের ত্বক এবং চুলেও আর্দ্রতা বজায় রাখে।
মাথার নিস্তেজ ত্বকের সতেজতা ফিরিয়ে আনতে এবং শুষ্কতা দূর করতে সক্ষম। চুলের ও ত্বকের সামগ্রিক উন্নতিতে সাহায্য করতে পারে। মাথার ত্বকে গ্লিসারিন মাখলে আরও নানাবিধ উপকার পাওয়া যায়। সেগুলি কী কী?

বর্ণহীন, গন্ধহীন সুগার অ্যালকোহলই ভাল চুলের চাবিকাঠি। ছবি: সংগৃহীত।
চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখে: গ্লিসারিনের সবচেয়ে অনন্য গুণ হল, আর্দ্রতা ধারণের ক্ষমতা। পরিবেশ থেকে জলের অণুগুলিকে আকর্ষণ করতে পারে গ্লিসারিন। আর তাই মাথার চুলে এটি মাখলে দীর্ঘ ক্ষণ আর্দ্র থাকে। এর ফলে চুল ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পায়। সবচেয়ে ভাল ফলাফল পেতে গ্লিসারিনের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা মধু মিশিয়ে নিতে পারেন। সেই মিশ্রণটি চুলের গোড়ায় এবং আগায় মেখে নিলে উপকৃত হবেন।
চুলের গোড়া মজবুত করে: শক্তিশালী, লম্বা চুলের চাবিকাঠি রয়েছে গোড়ায়। আর তাই গোড়ার যত্ন নেওয়া জরুরি। চুলের গোড়ার সুস্বাস্থ্যের জন্য গ্লিসারিন খুবই উপকারী। শুষ্কতা, চুলকানি, অস্বস্তি মিলিয়ে যেতে পারে এই তরলের গুণাগুণে। চুলের ফলিকলগুলি ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে।
চুলের ভাঙন রোধ করে: চুল যত বেশি স্থিতিস্থাপক হবে, ততই ঝরে পড়ার বা ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। যাঁদের চুল কোঁকড়ানো, তাঁরা গ্লিসারিন মাখলে লাভবান হবেন। চুলের আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ার ফলে সুন্দর দেখায় তাঁদের চুল। তা ছাড়া চুলের আগা ফেটে যাওয়ার মতো সমস্যা থেকেও রক্ষা করে গ্লিসারিনের গুণাগুণ।
চুলকে জটমুক্ত করে নরম বানায়: যাঁদের খুব সহজে জট পড়ে যায়, তাঁদের জন্য সমস্ত মুশকিল আসান এই তরলেই। রেশমের মতো নরম চুল পেতে গ্লিসারিনকে রোজের রুটিনে যুক্ত করুন। প্রবল গরমে অথবা ভেজা ভেজা দিনে, কিংবা শীতের সময়ে, যে কোনও সময় জটহীন মাথার আরাম পেতে কয়েক ফোঁটা গ্লিসারিনই যথেষ্ট।
চুলের সামগ্রিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে: গোড়ার যত্ন নিতে পারে বলে সামগ্রিক ভাবে চুলের স্বাস্থ্য ভাল থাকে। উচ্চ তাপ দিয়ে কেশসজ্জা, পরিবেশ দূষণ, অতিবেগনি রশ্মির অনিবার্য ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে খানিক মুক্তি দিতে পারে গ্লিসারিন। মাথার ত্বক পরিষ্কার করে ভিতর থেকে চুলকে মজবুত করে তোলে। ফলে চুলের বৃদ্ধি ভাল হয়।