আয়নার দিকে তাকালেই মনখারাপ হয়ে যায়? কপালের ভাঁজগুলি স্পষ্ট। চোখের নীচে কালি। কোথায় সেই দীপ্তি! অথচ বছর দুই আগের ছবিগুলোও ছিল অন্য রকম। কত ঝকঝকে চেহারা!
ধুলো-ধোঁয়া, দূষণের প্রভাব আছেই, তার উপর ব্যস্ততার চাপে মুখের যত্ন একেবারেই নেওয়া সম্ভব না হলে, এটাই তো ভবিতব্য। বিশেষত, ৩৫-৩৬ বছর বয়েসের পর থেকেই ক্রমশ মুখে বলিরেখা দেখা দিতে থাকে। বিশেষত অযত্ন হলে সমস্যা হয় আরও বেশি। তবে এরই সমাধান রয়েছে হাতের কাছে। স্বাস্থ্যসচেতন মানুষজনের খাদ্যতালিকায় এখন জায়গা করে নিচ্ছে তিসি বীজ। ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ভিটামিন, খনিজে ভরপুর বীজটি শরীরের জন্য ঠিক যতটা উপকারী, ত্বকের জন্যও তাই।
এতে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড মুখের রুক্ষ ভাব দূর করে। বলিরেখা কমাতেও তিসির বীজের ফ্যাটি অ্যাসিড কার্যকর। মুখের কালচে ভাবও দূর হবে এটি মাখলে। ঠিক সে কারণেই রূপচর্চায় তিসিবীজের জেল নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা এখন। তিসিবীজের জেল সরাসরি মুখে মাখা যায়। কিন্তু ত্বকের ধরন এবং সমস্যা অনুযায়ী বিভিন্ন উপকরণ যোগে তা দিয়ে বানিয়ে ফেলতে পারেন মাস্কও।
তিসির জেল কী ভাবে বানাবেন?
জলের মধ্যে একমুঠো তিসিবীজ দিয়ে আঁচ কমিয়ে জ্বাল দিতে থাকুন। তা হলে তিসি থেকে থকথক এক পদার্থ বেরোবে। মিশ্রণটি পরিষ্কার সুতির কাপড়ের সাহায্যে ছেঁকে নিন। তা হলেই মিলবে জেল। এর সঙ্গে আর কী মিশিয়ে বানাবেন মাস্ক?
চালের গুঁড়ো: তিসির জেল বানানোর সময় জলে ১ টেবিল চামচ চালের গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। তার পর ছেঁকে নিতে হবে কাপড়ে। ত্বকের যত্নে চালের জল যেমন উপকারী, চালের গুঁড়োও তাই। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, চালের গুঁড়ো প্রাকৃতিক স্ক্রাবের কাজ করে। ফলে মুখের মৃত কোষ এতে দূর হবে। মিশ্রণটি পরিষ্কার মুখে লাগিয়ে মিনিট ১৫ রাখুন। তার পর হালকা হাতে মালিশ করে ধুয়ে নিন।
অ্যালো ভেরা: রোদে বেরিয়ে মুখে জ্বালা করছে? ১ টেবিল চামচ তিসির বীজের জেলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন ১ টেবিল চামচ অ্যালো ভেরা জেল। যোগ করুন আধ চা-চামচ গোলাপ জল। মিশ্রণটি মুখে রাখুন ১৫ মিনিট। ত্বকের প্রদাহ কমবে দ্রুত। একই সঙ্গে মুখ হবে ঝকঝকে।
মধু: গ্রীষ্মেও ত্বক যেন শুষ্ক? এসিতে থাকায় আরও বেশি খসখসে বোধ হয়? তা হলে ১ টেবিল চামচ তিসি বীজের জেলের সঙ্গে আধ চা-চামচ মধু মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি মুখে মাখুন এবং হালকা মাসাজ করুন। তার পর ঠান্ডা জলে মিনিট ১৫ পরে ধুয়ে নিন। ত্বক হবে নরম।
তিসি বীজের জেল সপ্তাহে দু’দিন মাখতে পারেন। এতে বাজারচলতি কোনও রাসায়নিক থাকে না। মাসখানেক নিয়ম করে মুখে মাখলেই ধীরে ধীরে তফাত চোখে পড়বে।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। নতুন মাস্ক ব্যবহারের আগে প্যাচ টেস্ট জরুরি।