কোরিয়ান প্রসাধনীর খুব চাহিদা এখন বাজারে। কোরীয়দের মতো গ্লাস-স্কিন বা নরম, মসৃণ চুল পেতে অনেকেই ‘কে-বিউটি প্রোডাক্ট’-এর দিকে ঝুঁকছেন। কোরিয়ান প্রসাধনী, কোরীয়দের মতো রূপচর্চার পদ্ধতি নিয়ে ইন্টারনেটে বিস্তর খোঁজাখুঁজিও হচ্ছে। কোরীয় মহিলা বা পুরুষদের চুল যেমন মসৃণ, চকচকে, তেমনটা বাঙালিদের মধ্যে খুব একটা দেখা যায় না। এর কারণই হল, কেশচর্চায় ততটা গুরুত্ব দেন না কেউই। কেবল কোরিয়ান প্রসাধনী কিনে ব্যবহার করলে বা মাঝেমধ্যে সালোঁয় গিয়ে স্পা করালেও কিন্তু তেমন চুল পাওয়া যাবে না। এর জন্য কেশচর্চার কিছু পদ্ধতি জেনে রাখা ভাল। তাতে দামি প্রসাধনী না কিনেও চুল হবে কোরীয়দের মতো সুন্দর।
কোরীয় কেশচর্চার কিছু পদ্ধতি
প্রতি দিন নিয়ম মেনে এই পদ্ধতিতে কেশচর্চা করতে হবে। তাতেই রুক্ষ ও খসখসে চুল নরম ও মসৃণ হবে।
প্রথম ধাপ: অ্যাপল সাইডার ভিনিগার
রোজ স্নানের আগে অ্যাপল সাইডার ভিনিগার দিয়ে চুল ধুতে হবে। এক কাপ অ্যাপল সাইডার ভিনিগারে দু’কাপ জল মিশিয়ে তা দিয়ে চুল ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে। অ্যাপল সাইডার ভিনিগার মাথার ত্বকের পিএইচের ভারসাম্য বজায় রাখে, ব্রণ-র্যাশের সমস্যা কমায়। নিয়মিত ব্যবহারে মাথায় চুলকানি, খুশকির সমস্যাও কমবে।
দ্বিতীয় ধাপ: স্ক্যাল্প স্ক্রাবিং
মুখে যেমন স্ক্রাবিং করেন, তেমনই মাথাতেও করা উচিত। মাথার ত্বকে মৃতকোষ জমতে থাকলে খুশকির সমস্যা বাড়বে। কেবল শ্যাম্পু করলে তা দূর হবে না, এর জন্য প্রয়োজন ‘এক্সফোলিয়েশন’। এই স্ক্রাব বাড়িতে বানিয়ে নিতে পারেন। তার জন্য ঘরের উপকরণই যথেষ্ট। আধ কাপ নারকেল তেলে ৫-৬ ফোঁটা পেপারমিন্ট অয়েল, ১ চামচ অ্যাপল সাইডার ভিনিগার, ১ চামচ মধু, আধ কাপ চিনি মিশিয়ে ভাল করে মাথার ত্বকে মালিশ করতে হবে। আধ ঘণ্টা মতো রেখে ধুয়ে নিতে হবে।
তৃতীয় ধাপ: স্ক্যাল্প স্কেলার
কোরিয়ান প্রসাধনীতে স্ক্যাল্প স্কেলার পাওয়া যায়। এটি চুলে জমে থাকা ময়লা, খুশকি, অতিরিক্ত তেল টেনে বার করতে পারে। স্ক্যাল্প স্কেলিং নিয়মিত করলে চুল পরিষ্কার থাকবে। জট পড়ে যাওয়া, চুলে গন্ধ হওয়ার সমস্যা ধাপে
ধাপে ধাপে জেনে নিন কেশচর্চার পদ্ধতি। ছবি: ফ্রিপিক।
চতুর্থ ধাপ: হেয়ার মাস্ক
প্রতি দিন ব্যবহারের সময় না পেলেও চুলের অবস্থা বুঝে দু’দিন বা এক দিন অন্তর ব্যবহার করতেই পারেন। চুল খুব রুক্ষ হলে ও চুল পড়ার সমস্যা বেশি হলে অন্তত এক সপ্তাহ এক দিন অন্তর ব্যবহার করে দেখতে পারেন। মাস্ক নানা রকম হতে পারে, নারকেল তেলে মেথি ও কালোজিরে মিশিয়ে তার মাস্ক, দই-মধু-ডিমের মাস্ক, কফির মাস্ক ব্যবহার করলে চুল ভাল থাকবে।
পঞ্চম ধাপ: শ্যাম্পু
ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুতে হবে। চাইলে ক্যামোলিয়া অয়েল, অ্যালো ভেরা দিয়ে বাড়িতেই শ্যাম্পু বানিয়ে নিতে পারেন।
ষষ্ট ধাপ: স্ক্যাল্প মাসাজার
দোকানে কিনতে পাওয়া যায়। শ্যাম্পু করার পরে মিনিট পাঁচেক মাথায় মালিশ করতে পারলে মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে। এতে কোলাজেন তৈরির প্রক্রিয়া দ্রুত হবে এবং চুল পড়ার সমস্যা কমবে।
সপ্তম ধাপ: হেয়ার টোনার ও সিরাম
শেষ ধাপে চুলে কন্ডিশনার লাগিয়ে ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে। এর পর হেয়ার টোনার বা সিরাম লাগিয়ে নিতে হবে। এতে চুল রুক্ষ হবে না। হেয়ার সিরাম চুল নরম ও মসৃণ করে তুলবে।