সন্তানের দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য বা কাউকে উপহার দেওয়ার জন্য জামা, খেলনা কিনতে হবে। তবে কেনার আগে কয়েকটি বিষয় নিয়ে আগাম না ভাবলে কিন্তু অর্থের অপচয় হতে পারে। শিশুদের জন্য জামা, জুতো, খেলনার বৈচিত্র অনেকে। বিভিন্ন দামের, মানের জিনিস পাওয়া যায়। ছোট হলেও তাদের পোশাক কিন্তু কম কেতাদুরস্ত নয়।
তবে শুধু সৌন্দর্য দেখে জিনিস কিনলে ঠকতে হতে পারে। সেই কারণেই শিশুর পোশাক কেনার আগে কয়েকটি জিনিস মাথায় রাখা জরুরি।
সৌন্দর্য না কাপড়: শিশুরা রংচঙে পোশাক পরলে দেখতে বেশ লাগে। কিন্তু শুধু রং, পোশাকের সৌন্দর্য নয়, ভাবনায় রাখা উচিত কাপড়ের গুণমানও। শিশুর ত্বক কোমল। আবহাওয়া অনুযায়ী ত্বক বান্ধব জিনিসটি না পরালে বেশি ঘাম হতে পারে, র্যাশও হতে পারে। বিশেষত গ্রীষ্মপ্রধাণ অঞ্চলে সুতি বা লিনেন কাপড় অত্যন্ত ভাল উপায় হতে পারে।
আরও পড়ুন:
কেতার সঙ্গে আরামও: ছোট বলে কি তাদের সৌন্দর্য বোধ নেই? এমনটা কিন্তু মোটেই নয়। শিশুদের জন্য কেতাদুরস্ত পোশাকের কমতি নেই। ছেলেই হোক বা মেয়ে, একেবারে কচিকাঁচা হোক বা একটু বড়— সকলের জন্যই হাল ফ্যাশনের রকমারি পোশাক আছে। তবে শুধু দেখতে ভাল লাগছে বলেই না কিনে, আরামের দিকটিও মাথায় রাখা প্রয়োজন। খুব সুন্দর দেখতে ফ্রক পাওয়া যায়। কিন্তু ঝালর দেওয়া, পুঁতি-পাথরের কারুকাজ করা জিনিসটি দেখতে যতটা ভাল, দীর্ঘ সময় পরে থাকতে হলে তা শিশুর জন্য আরামদায়ক হবে তো, ভেবে নেওয়া জরুরি।
আয়তন: শিশুর জন্য পোশাক কেনার আগে ‘সাইজ়’টি বোঝা দরকার। খুব আঁটসাঁট পোশাক যেমন শিশুর জন্য আরামদায়ক নয়, তেমনই এই বয়েসটা বাড়-বৃদ্ধির, সে কথাও মাথায় রাখা প্রয়োজন। যে জামা হয়তো বছরে এক থেকে দু’বার পরানো হবে সেটি যদি আকারে ছোট বা দৈর্ঘ্যে খাটো হয়, সামনের বছর হয়তো সেটি আর পরতেই পারবে না খুদে। সে ক্ষেত্রে অর্থের অপচয় হবে। আবার বড্ড বেশি ঢোলা পোশাকও বেমানান। তবে জিন্সের প্যান্ট বা কেতা দুরস্ত টপ এগুলি কিন্তু একটু বড় মাপের কেনা যায়। কারণ, প্যান্ট ভাঁজ করে পরালেও খারাপ লাগবে না। আবার একটু ঢোলা টপের ভিতরে টি-শার্ট পরিয়ে দেওয়া যায় হালকা ঠান্ডার আবহে। এতে প্যান্ট বা টপটি আরও বেশি দিন সন্তানকে পরানো যাবে। চট করে ছট হয়ে যাবে না।
খুদের পছন্দ: উপহার হিসেবে পোশাক কিনতে হলে সব সময় খুদের পছন্দ জানা সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে আধুনিক চল মেনে পোশাক বাছাই করতে পারেন। তবে যদি সন্তানের জন্য কিনতে হয়, খুদের পছন্দও জানা জরুরি। মোটামুটি ৫-৬ বছরের পর থেকেই তাদের মধ্যেও পোশাক নিয়ে ইচ্ছা-অনিচ্ছা তৈরি হতে শুরু করে। কিছুটা হলেও খুদের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেওয়া যেতে পারে।
জুতো: দৈনন্দিন পরার জুতো একরকম, পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কিনলে আর এক রকম। আবার খুদের নিজস্ব পছন্দও থাকতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন বুঝে জুতো বাছাই জরুরি। তার চেয়েও বেশি জরুরি আরামের দিকটি দেখা। পোশাকের সঙ্গে হয়তো বুট বা ব্যালেটটি ভাল মানাচ্ছে, কিন্তু সেটি পরে কি খুদে ঠিকমতো চলতে পারছে? তার পায়ে ফোস্কা পরছে কি না, বা পায়ে ব্যথা হচ্ছে কি জানা খুব জরুরি। চেষ্টা করার দরকার, আরামের সঙ্গে আপস না করার।
খেলনা: একই রকম খেলনা একটির দাম অনেকটাই বেশি, আর একটির দাম কম। মনে হতেই পারে, ছোটরা এক খেলনা নিয়ে কতক্ষণই বা খেলবে? তার চেয়ে সস্তার খেলনা দু’রকম দিলে সে খুশি হবে। যুক্তি সঠিক, কিন্তু খেলনার সঙ্গে স্বাস্থ্যের যোগ নিবিড়। বিশেষত একদম কচিকাঁচার খেলনা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দেখা দরকার, সেটি শিশুর জন্য কতটা উপযোগী। অনেক সময় বড় বড়ে টেরি বিয়ার, পান্ডা বা লোমশ রকমারি পুতুল দেখে শিশুর অ্যালার্জি হয়। তা ছাড়া, ছোটরা খেলার জিনিস মুখেও দেয়। জিনিসটি বিষাক্ত বা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর কি না জানা প্রয়োজন। এই কারণে, অর্থ সাশ্রয় করতে গিয়ে ভুল জিনিস বাছাই কাজের কথা হতে পারে না।