Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

উধাও ক্যানসার রোগিণী, ধন্দে হাসপাতালও

সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী উধাও-এর ঘটনা মাঝেমধ্যেই ঘটে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গোড়াতেই জানিয়ে দেন, বকেয়া মেটানোর ভয়ে রোগী স্বেচ্ছায় চলে গিয়েছেন। কিন্তু এ বার কেমোথেরাপি চলাকালীন ক্যানসার হাসপাতাল থেকে এক রোগিণীর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা অস্বস্তিতে ফেলেছে স্বাস্থ্য দফতরকে।

গীতা সিংহ

গীতা সিংহ

সোমা মুখোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৫ ০০:৫৬
Share: Save:

সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী উধাও-এর ঘটনা মাঝেমধ্যেই ঘটে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গোড়াতেই জানিয়ে দেন, বকেয়া মেটানোর ভয়ে রোগী স্বেচ্ছায় চলে গিয়েছেন। কিন্তু এ বার কেমোথেরাপি চলাকালীন ক্যানসার হাসপাতাল থেকে এক রোগিণীর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা অস্বস্তিতে ফেলেছে স্বাস্থ্য দফতরকে।
কারণ, পরিজনেরা তো বটেই, ওই রোগিণীর আশপাশের শয্যায় যাঁরা ভর্তি ছিলেন তাঁরা সকলেই জানিয়েছেন, একা কোথাও চলে যাওয়ার মতো শারীরিক ক্ষমতা তাঁর ছিল না। একই কথা বলেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও।
তবে কী হল তাঁর? নিখোঁজ হওয়ার ১১ দিন পরেও এর উত্তর স্পষ্ট নয় রোগিণীর পরিবারের কাছে। কখনও থানায়, কখনও হাসপাতালে হত্যে দিয়ে পড়ে থাকছেন তাঁরা। হাসপাতাল এর কারণ খুঁজতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কিন্তু সেই কমিটিও কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি।
রোগিণীর পরিবার সূত্রে খবর, ১৩ জুলাই চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যানসার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন গীতা সিংহ (৪৫)। দক্ষিণ ২৪ পরগণার নামখানার বাসিন্দা গীতাদেবীর হাতে ক্যানসার হয়েছিল। এসএসকেএমে মাস কয়েক আগে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। তার পরে চিত্তরঞ্জনে কেমোথেরাপি শুরু হয়। চতুর্থ কেমোথেরাপি চলাকালীন ১৯ মে থেকে তাঁর আর কোনও খোঁজ মেলেনি। গীতাদেবীর মেয়ে পাপিয়া এক বেসরকারি হাসপাতালের নার্স। তিনি বলেন, ‘‘১৯ তারিখ দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালে ছিলাম। বাড়ি ফিরে হাসপাতালে ফোন করে মায়ের খোঁজ করি। কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারেননি। তার পর থেকে এতগুলো দিন ঘুরে বেড়াচ্ছি। কেউ কিছু বলতে পারছেন না। মায়ের যা অবস্থা ছিল, তাতে একা হাসপাতাল থেকে বেরনো অসম্ভব। তাঁর হাতে চ্যানেলও করা ছিল।’’

চিত্তরঞ্জনের অধিকর্তা জয়দীপ বিশ্বাসও স্বীকার করেছেন, ‘‘উনি খুবই অসুস্থ ছিলেন। ওই দিন কোনও পরীক্ষার জন্যও ওঁকে ওয়ার্ড থেকে বার করা হয়নি। নার্সরা সব সময়েই ওয়ার্ডে ছিলেন। ঠিক কী ঘটতে পারে সেটা আমাদের কাছেও ধাঁধা।’’

কিন্তু রোগীর হেফাজতের দায়িত্ব তো হাসপাতালেরই! স্বাস্থ্যকর্তাদের একটা বড় অংশের বক্তব্য, সরকারি হাসপাতালে যেহেতু রোগীদের কোনও ইউনিফর্ম থাকে না, তাই হাসপাতাল থেকে কেউ বেরিয়ে গেলে বোঝা যায় না তিনি রোগী না রোগীর পরিজন। কিন্তু যাঁর চলচ্ছক্তি ছিল না, হাতে চ্যানেল করা ছিল, তিনি সেই অবস্থায় ওয়ার্ড থেকে বেরোনোর চেষ্টা করলে কী ভাবে কর্তব্যরত ডাক্তার-নার্স, চতুর্থ শ্রেণির কর্মী বা নিরাপত্তারক্ষীদের তা দৃষ্টি এড়িয়ে যাবে, সেই প্রশ্নেরও উত্তর মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE