Advertisement
E-Paper

হেঁশেল পাল্টালেন পাচক অরণি, খুন্তির লড়াইয়ে নতুন মোচড়

‘সিয়েনা’-র অরণি মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে যে হইচই চলছিল, সেই শেফ এখন আর ক্যাফেতে নেই। দিন কয়েক হল অন্য জায়গায় কাজ শুরু করেছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৪ ২০:০১
Celebrity chef Auroni Mukherjee leaves Sienna

অরণি মুখোপাধ্যায়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

যা হওয়ার ছিল, তা-ই হল। ‘সেলিব্রিটি’ রাঁধুনি অন্যত্র গমন করলেন।

অন্যত্র যাওয়া মানে স্থানান্তর শুধু নয়। এ ক্ষেত্রে ‘ব্র্যান্ডান্তর’ বলা ভাল। ‘সিয়েনা’-র অরণি মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে যে হইচই চলছিল, সেই শেফ এখন আর ক্যাফেতে নেই। দিন কয়েক হল অন্য জায়গায় কাজ শুরু করেছেন তিনি।

অরণির স্থানবদলে আলোড়ন কেন? কোনও শেফকে নিয়ে কথা হলে তাঁর হাতের জাদুর প্রসঙ্গ ওঠে। তবে এ ক্ষেত্রে বিষয়টি একটু অন্য রকম। মগজাস্ত্রেরও। হাতের গুণ, দর্শন ও চিন্তনে গত কয়েক বছরে কলকাতা শহরের খাওয়াদাওয়ার মানচিত্রে বিশ্বমানের ছোঁয়া এসেছিল। বাঙালি রান্না এখানে অনেক হয়। কিন্তু তার বাইরে যে বাংলার রান্না একটি গুরুতর বিষয়, তার অনেকটাই সিয়েনায় বসে কলকাতাকে দেখিয়েছেন অরণি।

Celebrity chef Auroni Mukherjee leaves Sienna

অরণি মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিনন্দন কুন্ডু। ছবি: সংগৃহীত।

যে সব দেশ খাওয়াদাওয়া নিয়ে সচেতন, সে সব দেশে গুরমে রান্নার চল আছে। অর্থাৎ, রান্নাকে শিল্পের পর্যায় নিয়ে যাওয়া হয়। খাবার নিয়ে পড়াশোনা, চর্চা, গবেষণা করা হয়। তার মাধ্যমে নতুন কিছু তৈরি হয়। অথবা পুরনো কোনও রান্নাকে নতুন আঙ্গিকে প্রস্তুত করা হয়। কলকাতায় সে সব যে খুব একটা হয় তেমন না। দেশ-বিদেশে রান্না শিখেছেন অরণি। তাঁর চিন্তাভাবনাও সে রকম। ফলে বাংলার খাবারে নতুনত্ব আনছিলেন তিনি। সিয়েনায় সে সব পাওয়াও যেত। কখনও মুসুর ডাল দিয়ে হামাস বানাতেন, কখনও আম-কেশর দিয়ে শ্রীখণ্ড টার্ট বানিয়ে ফেলতেন। চেনা জিনিস দিয়েই রকমারি গবেষণা চালিয়ে যেতেন। ‘আমার খামার’ নামে এক দোকান, যারা দেশজ ফসল ও খাবার নানা জেলা থেকে নিয়ে এসে কলকাতায় জোগান দেয়, তাদের থেকে নিজের ক্যাফের নিয়মিত বাজার করতেন অরণি। সেই ‘আমার খামার’-এর কর্মী রাকেশ যেমন সকলকে বলেন, সিয়েনায় কোন কোন ধরনের চাল যেত অরণির জন্য। বর্ধমানের রাধাভোগ, কামিনীভোগ চাল ব্যবহার করেতন কন্টিনেন্টাল ধারার মাছ বা মাংসের রান্নার সঙ্গে খাওয়ানোর জন্য। তার হাতে ‘সিয়েনা’ হয়ে ওঠে কলকাতায় প্রথম ‘খাদ্য মন্দির’। যেখানে সচেতন ভাবে রান্নাবান্না নিয়ে গবেষণা করা হয়।

সেই অরণির সিয়েনা ছেড়ে চলে যাওয়া অনেকটা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল-ত্যাগ ঘোষণা করার মতোই। ‘সিয়েনা’-এ ছন্দপতন ঘটবে বলেই ধরে নিচ্ছেন অনেকে। শেফ অরণি নিজে অবশ্য সে রকম মনে করেন না। তিনি গিয়েছেন ‘এএমপিএম ক্যাফে অ্যান্ড বার’-এর হেঁশেলের দায়িত্ব নিয়ে। সেখানে নতুন কিছু করার ইচ্ছায়। তবে বন্ধুদের বলেছেন, ‘সিয়েনা’-এ অভিনন্দন কুন্ডু আছেন। তিনি ফ্রান্স, ডেনমার্কে রান্না শিখেছেন। সিয়েনার হেঁশেল এখন তাঁর দায়িত্বে। তিনি ভালই সামলাবেন। পাশে কোয়েল রায় নন্দী তো রয়েছেনই।

Celebrity chef Auroni Mukherjee leaves Sienna

অরণি মুখোপাধ্যায়ের রান্না। ছবি: সংগৃহীত।

‘সিয়েনা’-র হেঁশেলে যে বদল এসেছে, তা নিয়ে ক্যাফের অন্দরে আলোড়ন তৈরি হয়নি, এমন নয়। তবে অরণির পরে আগামীর পরিকল্পনাও করেছে তারা। আপাতত মেনু কিংবা রান্নার ধরনে কোনও বদল আনার পরিকল্পনা নেই। অরণির সময়ে যা যা পাওয়া যেত, সবই পাওয়া যাবে সেখানে। ক্যাফের কর্ণধার শিউলি ঘোষ আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আগে অরণি-অভিনন্দন-কোয়েল মিলে সিয়েনার হেঁশেল সামলাতেন। এখন অরণি চলে গিয়েছে অন্য কাজে। অভিনন্দন আর কোয়েল একসঙ্গে সামলাচ্ছেন। সিয়েনায় অন্য কিছু বদলায়নি।’’ শিউলির বক্তব্য, আগেও বাংলার খাদ্য ও শিল্প নিয়ে কাজ করত ‘সিয়েনা’, এখনও সে কাজই চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।

Chef Cafe Bengali Food
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy