Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ভেন্টিলেটর কেন জরুরি?

অক্সিজেনের জোগান বাড়াতেই দরকার পড়ে ভেন্টিলেটরের। এটি অক্সিজেন-যুক্ত হাওয়া পাম্প করে ঢোকায় নাক দিয়ে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২০ ০৪:১১
Share: Save:

কোভিড-১৯-এর প্রতিষেধকের পরীক্ষা শেষ করে, একে বাজারজাত করতে বছর দেড়েক লেগে যাবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীদের অনেকে। এই সময়কে কমিয়ে আনতে বিশ্ব জুড়ে চলছে দৌড়। সমান্তরাল আর একটি দৌড় চলছে, কত দ্রুত সম্ভব ও কত বেশি সংখ্যায় পুরোপুরি নির্ভরযোগ্য ভেন্টিলেটর তৈরি করে তুলে দেওয়া যায় চিকিৎসকদের হাতে। প্রশ্ন হল, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ভেন্টিলেটর কেন এত জরুরি?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) বলছে, হাসপাতালের চিকিৎসা ছাড়াই কোভিড-১৯ রোগীদের প্রায় ৮০ শতাংশ সেরে উঠছেন। কিন্তু আক্রান্তদের প্রতি ছ’জনের মধ্যে গড়ে এক জন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এই সব ক্ষেত্রে ভাইরাস সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে ফুসফুসের। শরীরের রোগপ্রতিরোধী ব্যবস্থা সেটা বুঝতে পারে ও ভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে জন্য বেশি সংখ্যায় রক্তকোষ সেখানে পাঠাতে থাকে। রক্তবাহিকাগুলি ফুলে ওঠে। এতে অন্য একটি সমস্যা দেখা দিতে পারে। ফুসফুসে তরল ঢুকে যাওয়া। এমন ক্ষেত্রে শ্বাস নেওয়া আরও কঠিন হয়ে ওঠে। শরীরের অক্সিজেনের জোগান তাতে কমে যায়।

অক্সিজেনের জোগান বাড়াতেই দরকার পড়ে ভেন্টিলেটরের। এটি অক্সিজেন-যুক্ত হাওয়া পাম্প করে ঢোকায় নাক দিয়ে। ভেন্টিলেটরের হাওয়ার তাপমান ও আর্দ্রতা যাতে রোগীর দেহের সঙ্গে মেলে, তার জন্য ভেন্টিলেটরে থাকে হিউমিডিফায়ার নামে একটি অংশ। শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার সঙ্গে যুক্ত পেশিগুলির উপরে চাপ কমাতে বা সেগুলি শিথিল রাখতে প্রয়োজন মতো ওষুধও দেওয়া হয়। এতে রোগী ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে তাকে হারিয়ে দেওয়ার জন্য বাড়তি সময় পেয়ে যান।

শ্বাসকষ্ট অল্প হলে সাধারণ (নন-ইনভেসিভ) ভেন্টিলেশনেই কাজ হয়। এ ক্ষেত্রে নাকে-মুখে একটি মাস্ক লাগিয়ে অক্সিজেন-যুক্ত হাওয়া বাড়তি চাপে পাঠানো হয়। কিন্তু (মেকানিক্যাল) ভেন্টিলেটরে দিলে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের পুরো নিয়ন্ত্রণ থাকে এই যন্ত্রটির হাতে। আর এ জন্যই চিকিৎসক ও সেবাকর্মীদের নিরন্তর ও তীক্ষ্ণ নজরদারি একান্ত জরুরি। কিন্তু হাসপাতালগুলির ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটগুলি যখন রোগীতে উপচে পড়তে থাকে, তখন সেই কাজটা অনেক বেশি কঠিন হয়ে পড়ে। তাই ভেন্টিলেটরের গুণমান সম্পর্কে একশো ভাগ নিশ্চিত হওয়াটাও জরুরি।

ভেন্টিলেটর তৈরি যে জটিল বা দুঃসাধ্য, তা নয়। কিন্তু ভেন্টিলেটরের যে কোনও ডিজ়াইন অনুমোদনের আগে কড়া পরীক্ষায় সেটিকে পাশ করতে হয়। এই পর্বটি কখনও বেশ সময়সাপেক্ষ। সমীক্ষা বলছে, ১৩০ কোটির দেশ ভারতে ভেন্টিলেটরের সংখ্যা ৪৮ হাজার। তার অনেকটাই কাজে লাগছে অন্যান্য রোগে আক্রান্ত গুরুতর অসুস্থদের চিকিৎসায়। এ ছাড়া, কতগুলি ভেন্টিলেটর অকেজো হয়ে রয়েছে, সেই হিসেবও বলতে পারছেন না সরকারি কর্তারা। এই অবস্থায় চিনকে ১০ হাজার ভেন্টিলেটর তৈরি করে দেওয়ার বরাত দেওয়া হয়েছে। বেজিং বরাত তো নিয়েছে, কিন্তু তার জন্য যথেষ্ট যন্ত্রাংশ নেই তাদের কাছে। তারা ভারতের সাহায্য চায়। কিন্তু চিনের তৈরি সামগ্রীর গুণমান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এই অবস্থায় ভারতের গাড়ি নির্মাতা সংস্থাগুলিও এগিয়ে আসছে। ঝাঁপাচ্ছে নবীনদের স্টার্টআপ সংস্থাগুলিও।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Ventilator
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE