নিজস্ব চিত্র
অতিমারির সময়ে আপনজনেদের কথা অনেকেই ভাবছেন। হয়তো বা আশপাশের চেনা মানুষের কথাও খেয়াল করছেন। প্রয়োজনে সাহায্যের চেষ্টাও দেখাচ্ছেন। কিন্তু এ সময়ে তো আর শুধু চেনা মুখেরা সঙ্কটে নেই। বহু মানুষ আছেন, যাঁরা নানা ভাবে সমস্যায় পড়েছেন এই অতিমারির কারণে। তাঁদের পাশেও তো দাঁড়াতে হবে। সেই কাজই করছেন মাস্টারমশাই।
বিধাননগর অঞ্চলে এমন বহু মানুষ আছেন যাঁদের কাজ নেই বেশ কয়েক মাস ধরে। তাঁদের কেউ সাফাইকর্মী। কেউ রাস্তার ধারের দোকানে সহকারির কাজ করেন। কেউ বা আবার নির্মাণস্থলে জোগান দেওয়ার কাজ করে থাকতেন। তার থেকে দিন গেলে যায় আয় হত, সংসার চলে যেত কোনও ভাবে। অতিমারি, তা ঘিরে ভয় এবং লকডাউন— সব মিলে কাজ কেড়েছে বহু মানুষের। তেমন কিছু মানুষের সংসার চালানোর দায়িত্ব নিয়েছেন বিধাননগরের সরকারি স্কুলের ইতিহাসের স্যর সুরজিৎকুমার ধর। পাশে আছেন তাঁর ছাত্রেরাও।
কোভিডডের আতঙ্কে জর্জরিত এই সময়ে চাল-ডাল-নুন-তেল দিয়ে সেই সব পরিবারের সেবা তো করছেনই সুরজিৎ। শুধু বই পড়ে যে সব শিক্ষা হয় না, সঙ্গে সে বার্তাও দিচ্ছেন নিজের ছাত্রদের। বেশির ভাগ স্কুলপড়ুয়া যখন অনলাইন ক্লাস আর ভিডিয়ো গেমে মগ্ন, তখন সুরজিতের সঙ্গে ঘরে ঘরে গিয়ে শুকনো খাবার পৌঁছে দিচ্ছে কিছু ছাত্রই। আর তাদের কাজ দেখে ইতিহাসের স্যর বলছেন, ‘‘সমাজে আর পাঁচ জনের পাশে থাকার ইচ্ছাই হল আসল শিক্ষা।’’ পাশে আছেন প্রাক্তন ছাত্রেরাও। কাজের কারণে স্যরের সঙ্গে এখন আর পথে নামতে না পারলেও নিয়মিত অর্থ সাহায্য করেন তাঁরা।
কতদিন ধরে এ ভাবে ঘরে ঘরে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন সুরজিৎ? তা অনেক দিন হল। তিনি জানান, সময়ের হিসাব করতে চান না। আর কত দিন এ ভাবে সাহায্য করবেন, তা বলতেও পারবেন না তিনি। যত দিন অতমারির আঁচ থাকবে। যত দিন মানুষের তাঁকে প্রয়োজন পড়বে, সকলকে এভাবেই সাহায্য করবেন সুরজিৎ ও তাঁর ছাত্রেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy