E-Paper

করোনা হলেও নিজে সারার ধারণা থেকেই কি পরীক্ষা করানোয় অনীহা 

দেশে করোনার নতুন উপপ্রজাতি জেএন.১-এর খোঁজ মিললেও বঙ্গে তার অস্তিত্ব এখনও পাওয়া যায়নি বলেই স্বাস্থ্য দফতরের দাবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০৬:৫৬

—প্রতীকী চিত্র।

খুব ধীরে হলেও রাজ্যে করোনা আক্রান্ত বাড়ছে। যদিও স্বাস্থ্য দফতরের তরফে কোনও তথ্য বা পরিসংখ্যান প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে না। তবে বুধবার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পোর্টাল থেকে জানা যাচ্ছে, রাজ্যে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ৮১। তার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আট জন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পোর্টাল অনুযায়ী, গত পয়লা জানুয়ারি রাজ্যে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ছিল ৭৫। দু’দিনের মধ্যে তা হয়েছে ৮১। তবে দেশে করোনার নতুন উপপ্রজাতি জেএন.১-এর খোঁজ মিললেও বঙ্গে তার অস্তিত্ব এখনও পাওয়া যায়নি বলেই স্বাস্থ্য দফতরের দাবি। জানা যাচ্ছে, দেশের ১১টি রাজ্য মিলিয়ে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত ৫১১ জনের দেহে জেএন.১ উপপ্রজাতি পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে কর্নাটকে ১৯৯, কেরলে ১৪৮, গোয়ায় ৪৭, গুজরাতে ৩৬, মহারাষ্ট্রে ৩২, তামিলনাড়ুতে ২৬, দিল্লিতে ১৫, রাজস্থানে ৪, তেলঙ্গানায় ২ এবং ওড়িশা ও হরিয়ানায় ১ জন করে পাওয়া গিয়েছে।

তবে বঙ্গে করোনার নতুন উপপ্রজাতির সন্ধান না পাওয়া এবং আক্রান্তের সংখ্যা খুবই কম হওয়ার পিছনে পরীক্ষা কম হওয়া বড় কারণ বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা। এর জন্য সাধারণ মানুষের অনীহাকে তাঁরা বেশি দায়ী করছেন।

শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ারের চিকিৎসক সৌতিক পাণ্ডা বলেন, ‘‘বহির্বিভাগে আসা জ্বর-সর্দি-কাশির রোগীদের কোভিড পরীক্ষার কথা বললে অধিকাংশই আর দেখাতে আসছেন না। আসলে, সাধারণ মানুষের মধ্যে এই ধারণা তৈরি হয়েছে যে, করোনা হলেও এমনিই সেরে যাবে।’’ চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এখন করোনার উপসর্গ সাধারণ ফ্লু-এর মতোই। নতুন উপপ্রজাতি জেএন.১-এর কারণেও বিরাট সমস্যা হচ্ছে না। জ্বর-সর্দি-কাশি, নাক দিয়ে জল পড়া, হাঁচির মতো উপসর্গ থাকছে।

আর এই সব উপসর্গে আক্রান্ত হয়ে প্যারাসিটামল এবং অ্যান্টি-অ্যালার্জি ওষুধ নিজে থেকে খাওয়ার প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বলেন, ‘‘ভাইরাল ফিভারের ক্ষেত্রে একটা প্রচলিত প্রবাদ আছে, ওষুধ খেলে সাত দিনে সারবে। না খেলে এক সপ্তাহ। অর্থাৎ খাওয়া, না-খাওয়া সমান। করোনাও এখন তেমনই হয়ে গিয়েছে বলে মানুষ মনে করছেন।’’

জানা যাচ্ছে, রাজ্যের একমাত্র সরকারি কোভিড হাসপাতাল বেলেঘাটা আইডি-তে বুধবার পর্যন্ত পাঁচ জন চিকিৎসাধীন আছেন। কিছু রোগী আছেন বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে। চিকিৎসকদের দাবি, যাঁদের করোনা পজ়িটিভ আসছে, তাঁদের অধিকাংশই অন্য রোগের চিকিৎসা করাতে কিংবা অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

তবে সাধারণ জ্বর-সর্দি-কাশির রোগীদের ক্ষেত্রে কোভিড পরীক্ষা করার নির্দেশিকা স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে নেই বলেই জানাচ্ছেন সংক্রামক রোগের চিকিৎসক যোগীরাজ রায়। তাঁর কথায়, ‘‘শ্বাসকষ্ট হচ্ছে এমন রোগী এবং যাঁদের অনিয়ন্ত্রিত কোমর্বিডিটি রয়েছে, তাঁদের কোভিড পরীক্ষা করার কথা বলা হয়েছে। আর কোনও অস্ত্রোপচারের আগে পরীক্ষা করে দেখতে বলা হয়েছে।’’ তবে সামগ্রিক পরিস্থিতির উপরে নজর রেখে প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছেন চিকিৎসকেরা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Corona Virus in India Corona New Strain Corona Virus In West Bengal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy