বাইরে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি হলেও অনেকে এসিতেই আরামবোধ করেন। বর্ষাকালেও বহু বাড়িতেই নিয়মিত এসি চলে। তবে মরসুম বদলের সঙ্গে সঙ্গে এসি নিয়ে সচেতন না হলে যেমন অসুখের ঝুঁকি বাড়তে পারে, তেমনই ক্ষতি হতে পারে যন্ত্রের। এই সময় কোন ভুল এড়িয়ে চলা দরকার?
১। এই মরসুমে বাতানুকূল যন্ত্রটিকে বাড়তি তাপের সঙ্গে না হলেও আর্দ্রতার মোকাবিলা করতে হয়। যন্ত্রে চাপ পড়ে বেশি। ফলে বিদ্যুৎ খরচও বেশি হয়। তা ছাড়া অতিরিক্ত আর্দ্রতা শরীরেরও পক্ষেও ক্ষতিকর। ফলে এমন সময় ‘কুল মোডে’র চেয়ে ‘ড্রাই মোড’-এর ব্যবহার জরুরি। এতে ঘরের স্যাঁতসেঁতে ভাব যেমন কেটে যাবে, তেমনই বিদ্যুতের বিলও কম আসবে। ঘর অতিরিক্ত ঠান্ডা হয়ে যাবে না।
আরও পড়ুন:
২। গরম কালে এসি পরিষ্কারে যতটা জোর দেন, বর্ষায় দেন কী? গ্রীষ্মে ঘর দ্রুত ঠান্ডা হতে চায় না বলে লোক ডেকে এসির যন্ত্রাংশ পরিষ্কার করানোর তাগিদ বেশি থাকে। কারণ, ধুলো জমলেই ঠান্ডা ভাব কমে যায়। আরামের তাগিদেই এসির রক্ষণাবক্ষণে বাড়তি নজর দিতে হয়। বর্ষাতেও কিন্তু একই নিয়ম বজায় রাখা দরকার। ক্রমাগত বৃষ্টিতে দেওয়ালে নোনা ধরতে পারে। সেই দেওয়ালে এসি থাকলে শর্ট সার্টিকের সম্ভবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বিপদ এড়াতেই ইলেকট্রিকের কাজ করেন যাঁরা তাঁদের দিয়ে বিদ্যুতের লাইন পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া দরকার। এসির বাইরের অংশটিও প্রবল বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। টানা ভারী বৃষ্টির পরে, লোক ডেকে তা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। না হলে খারাপ যন্ত্রাংশ বিপদের কারণ হতে পারে।
৩। রিমোট দিয়ে এসি বন্ধ করছেন, মূল সুইচটি বন্ধ করছেন কি? বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য তা যতটা জরুরি, ঠিক ততটাই জরুরি নিরাপত্তার খাতিরে। তা ছাড়া, কখনও বজ্রপাত হলে সুইচ বন্ধ না থাকলে বা প্লাগ না খুলে রাখলে যন্ত্রটি ক্ষতিগ্রস্তও হতে পারে। শর্ট সার্কিট বা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঝুঁকি এড়াতেই মূল সুইচ বন্ধ রাখা দরকার।
৪। বর্ষার স্যাঁতসেঁতে আবহে এসির যন্ত্রাংশের ভিতরেও রোগ-জীবাণু বাসা বাঁধে। বিশেষত ফিল্টারটি নিয়মিত পরিষ্কার করা না হলে তা থেকে নানা রকম অসুখ হতে পারে। চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস সতর্ক করছেন, এসির এয়ার ফিল্টার নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরিষ্কার না হলে ব্যাক্টেরিয়া, ছত্রাক বাসা বাঁধতে পারে। যে হেতু এসিতে একই বাতাস ছড়িয়ে যায়, তাই বায়ুবাহিত রোগের আশঙ্কা বাড়ে। দু’সপ্তাহ অন্তর এসির ফিল্টার পরিষ্কার করা অত্যন্ত জরুরি।
৫। বিদ্যুৎ বাঁচাতে এসির ‘স্ট্যান্ডার্ড’ তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রিতেই রাখতে বলা হয় ব্যুরো অফ এনার্জি এফিসিয়েন্সি (বিইই)-র তরফে। গত ২০২০ সালে এ সংক্রান্ত একটি প্রত্যাদেশ দিয়েছিল বিইই। বর্ষার দিনে বাইরের তাপমাত্রা কমে যায়। ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে এসির তাপমাত্রা নির্দিষ্ট করলে তা যেমন বাড়তি বিদ্যুৎ খরচের কারণ হবে, তেমনই এমন মরসুমে আচমকা ঠান্ডাও লেগে যেতে পারে। তাপমাত্রা ২০-২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখাই ভাল।