Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Health

কৃমি মোকাবিলার সহজ অস্ত্র

কৃমির সংক্রমণ শিশুদের মধ্যে খুব স্বাভাবিক ঘটনা। তাই ব্যস্ত না হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। এতেই হবে উপশমসাধারণত শিশুদের মধ্যে কৃমি সংক্রমণের কোনও উপসর্গ সে ভাবে দেখা যায় না।

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২০ ০০:০১
Share: Save:

অনেক সময়েই দেখা যায়, বাড়ির ছোট্ট সদস্যটির মেজাজ ভাল নেই। তার সঙ্গে পায়ুদ্বারে ইরিটেশন, মাঝেমাঝে পেটে ব্যথা, সঙ্গে বমি। এ রকম সমস্যায় অনেকেই ভাবেন, পেটের গোলমাল থেকে শরীর খারাপ করছে। কিন্তু এই লক্ষণ কৃমির কারণে দেখা দিতে পারে। শিশুদের মধ্যে কৃমির সমস্যা নতুন নয়। কিন্তু এর মোকাবিলা করবেন কী ভাবে, সেটাই জানতে হবে।

কৃমির সমস্যা কেন হয়?

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অপূর্ব ঘোষ বললেন, ‘‘সাধারণত মলমূত্র, নখের ময়লা ইত্যাদির মাধ্যমেই কৃমি শিশুদের শরীরে প্রবেশ করে থাকে। পানীয় জলের মাধ্যমেও কৃমির সংক্রমণ হতে পারে।’’ অনেক শিশুই খেলতে খেলতে মুখে হাত দেয়, এমনকি খেলনাও মুখে পুরে ফেলে। আবার মাঠেঘাটে মাটি ঘাঁটে। তার মাধ্যমেও কিন্তু কৃমি শরীরে প্রবেশ করতে পারে। বাচ্চারা হামাগুড়ি দিতে শুরু করলে বা নতুন হাঁটতে শেখার সময় থেকেই কৃমির সংক্রমণ শুরু হয়। তাই শিশু মাটিতে থাকার সময়ে একটু নজরে রাখুন।

কী দেখে বুঝবেন?

সাধারণত শিশুদের মধ্যে কৃমি সংক্রমণের কোনও উপসর্গ সে ভাবে দেখা যায় না। কিন্তু তাও কিছু অস্বাভাবিকতা দেখা দিতে পারে। যেমন ঘন ঘন পেটে ব্যথা ও খিদে কম পাওয়া এর অন্যতম লক্ষণ। যদি দেখা যায় যে, সন্তান কিছু খেতে চাইছে না বা খেলেও তার পেটে ব্যথা করছে, তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অনেক শিশু আবার অকারণেই থুতু ফেলতে থাকে বা থুতু ছিটোয়, খিমচে দেয়, কামড়ে দেয়। কৃমির উপদ্রব বাড়লেই কিন্তু এ ধরনের লক্ষণ দেখা যায়। অনেক সময়ে মলের মাধ্যমেও কৃমি বেরিয়ে আসে। তাই স্টুলের দিকেও নজর রাখতে হবে।

পরীক্ষাও করা যায়

কৃমি আছে কি না, তা দেখার জন্য স্টুল এগজ়ামিনেশনও করানো যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে এক দিনে নয়, পরপর তিন দিন মল পরীক্ষা করাতে হবে। তাতে কৃমি বেরোলে নিশ্চিত হতে পারবেন। তবে অনেক সময়ে এই পরীক্ষাতেও কৃমি ধরা পড়ে না। তখন চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ব্যবস্থা নিন। প্রয়োজনে ওষুধ দিন।

নিরাময়

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. চয়ন গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, ‘‘তিন বছর বয়স থেকেই ছ’মাস অন্তর কৃমির ওষুধ নিয়মিত খাওয়ানো যেতে পারে। সাধারণত বারো বছর বয়স হওয়া পর্যন্ত এই ওষুধ খাওয়ানো যায়।’’ এ ছাড়া জরুরি হল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। কৃমির সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য শিশুকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখাও জরুরি।

যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন

• সন্তানের খাবার, জল, এমনকি ন্যাপি বদলানোর আগেও হাত ভাল করে সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্রয়োজনে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারও ব্যবহার করতে পারেন।

• শিশুটি বাইরে থেকে খেলে বা ঘুরে এলে অবশ্যই ভাল করে সাবান দিয়ে তার হাত-পা ধুয়ে দিন।

• শিশুর নখ পরিষ্কার রাখাও জরুরি। কিছু দিন অন্তর শিশুর নখ কেটে দিন। খেয়াল রাখুন, সে যেন নখ না খায়। নখের কোণে যে ময়লা জমে, তার থেকেও কিন্তু কৃমি প্রবেশ করতে পারে শরীরে।

• ফল, আনাজপাতিও বাজার থেকে এনে জলে ভিজিয়ে রাখুন।

কৃমির সমস্যা স্বাভাবিক হলেও তা গোড়াতেই দমন করা ভাল। তা হলে শিশুটি অযথা কষ্ট পাবে না। তার জন্য পরিবারের সকলকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

মডেল: ঐশ্বর্য সেন, স্বর্ণাভ ঘোষ মেকআপ: উজ্জ্বল দত্ত

ছবি: জয়দীপ মণ্ডল

লোকেশন: দ্য ললিত গ্রেট ইস্টার্ন, কলকাতা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health Kids Worms
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE