ডায়েট করতে গেলে সবার আগে বাদ পড়ে ভাত। ডায়াবিটিস থাকলে তো আরও কড়াকড়ি, তখন ভাতকে একরকম নিষিদ্ধ তালিকায় তুলে দেওয়া হয়। যাঁরা দিনেরাতে ভাতের উপরই ভরসা করে থাকেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও এই খাদ্যাভ্যাস বেশ ক্ষতিকারক। অর্থাৎ কাঠগড়ায় উঠছে সেই ভাত, বিশেষ করে সাদা ভাত। কিন্তু ভাত পুরোপুরি বাদ না দিয়ে অন্য ভাবে রেঁধেও দেখা যেতে পারে। রান্নার ধরনে ছোট বদল আনলেই ছবিটি বদলে যেতে পারে।
চাল সেদ্ধ করার সময়ে একটি উপকরণ যোগ করার কথা বলছেন একাধিক পুষ্টিবিদ এবং চিকিৎসক। আর তাতেই ভাত হয়ে উঠতে পারে তুলনায় হালকা এবং শরীরের জন্য বেশি উপযোগী। ভাত আরও স্বাস্থ্যকর, সুস্বাদু ও সহজে হজমযোগ্য করে তোলা যায়। বিশেষ পদ্ধতিতে ভাত রাঁধার নিয়ম হল, চাল সেদ্ধ করার সময়ে নারকেলের তেল ব্যবহার করা।
নারকেল তেল দিয়ে ভাত রান্না। ছবি: সংগৃহীত।
কর্নেল, আইনস্টাইন, হার্ভার্ড এবং কলম্বিয়াতে প্রশিক্ষিত মেডিসিনের চিকিৎসক এবং পুষ্টিবিদ অ্যামি শাহ তাঁর ইনস্টাগ্রাম পোস্টে বলছেন, আগে তিনিও থলে থেকে চাল বার করে জলে সেদ্ধ করতে বসিয়ে দিতেন। কিন্তু সম্প্রতি নয়া পদ্ধতিতে ভাত রান্না করছেন তিনি।
পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকের বিশেষ ভাত রান্নার কৌশল—
· জলে খানিক ক্ষণ চাল ভিজিয়ে রাখেন।
· তার পর বেশি করে জল নিয়ে সসপ্যানে সেদ্ধ করতে বসান, যাতে আর্সেনিকের পরিমাণ ৮০ শতাংশ কমে যায়।
· এর পর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বৃদ্ধি করার জন্য তার মধ্যে অল্প নারকেল তেল মিশিয়ে দেন।
· এ বার ভাত ঠান্ডা হয়ে গেলে ফ্রিজে রেখে দেন। সারা রাত রাখার পর সেই বাসি ভাত খান তিনি।
ভাত রান্নার বিশেষ কৌশল। ছবি: সংগৃহীত।
নিউইয়র্কের ফিজ়িক্যাল থেরাপিস্ট জুন রেয়িজ় তাঁর ইউটিউবের ভিডিয়োতে জানাচ্ছেন, ভাতকে স্বাস্থ্যকর করে তুলতে একটি বিশেষ পদ্ধতি মেনে রান্না করা উচিত। তাতে ভাতের মোট ক্যালোরি এবং গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কমে যায়। অন্ত্রের উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার জন্য খাদ্য সরবরাহ করা সহজ হয়ে যায়।
ফিজ়িক্যাল থেরাপিস্টের সুপারিশ করা ভাত রান্নার পন্থা—
· এক কাপ চাল নিয়ে জলে সেদ্ধ করতে বসান।
· এতে দুই চা চামচ নারকেল তেল ঢেলে দিন। প্রতি কাপ চালের জন্য দুই চামচ তেল।
· রান্না হয়ে গেলে ঠান্ডা হতে দিন।
· তার পর অন্তত ১২ ঘণ্টার জন্য ফ্রিজে তুলে রাখুন।
আরও পড়ুন:
নারকেল তেল মেশালে ভাত স্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে কী ভাবে? উপকারিতা কী কী?
নারকেল তেল ভাতের ভিতরে থাকা স্টার্চকে এমন ভাবে বদলে দেয়, যাতে শরীর তা সহজে ভাঙতে না পারে। এতে রক্তে চট করে গ্লুকোজ়ের মাত্রা বাড়তে পারে না। উপরন্তু ভাতের ক্যালোরির পরিমাণও কমে যায়। তা ছাড়া পেটের উপকারী ব্যাক্টেরিয়াগুলিকে পুষ্টি জোগান দেওয়ার জন্যও এই পদ্ধতি কার্যকর।