ঘরদোর অপরিচ্ছন্ন থাকা মানেই অসুখকে আহ্বান জানানো। বিছানার নোংরা চাদর হোক বা শিশুর অপরিচ্ছন্ন খেলনা কিংবা দৈনন্দিন ব্যবহারের আসবাব— ঠিকমতো পরিষ্কার না করলেই সেখানে বেড়ে উঠতে পারে রোগজীবাণু। ঠিক সেই কারণেই ঘরের প্রতিটি কোণ পরিষ্কার করেন? দরজার হাতল থেকে শিশুর খেলনা, বৈদ্যুতিক জিনিসপত্র— বাদ যায় না কোনওটি। অভ্যাসটি ভাল, কিন্তু পরিষ্কার করেন কী দিয়ে? জীবাণুনাশক ওয়াইপ্স নয়তো? কোভিড পরিস্থিতির পরই বিশ্বজুড়ে জিনিসটির কদর বাড়ে। যে কোনও জায়গা বা জিনিস থেকে জীবাণু নাশ করতে হালকা ভিজে ওয়াইপ্সটি বুলিয়ে নিলেই হল। কাজ সহজ হয়।
আরও পড়ুন:
কিন্তু কথায় কথায় ওয়াইপ্স ব্যবহারের প্রবণতাও বিপদ ডেকে আনতে পারে। কী ভাবে আসতে পারে বিপদ?
চামড়ার সোফা: চামড়ার সোফাটি পরিষ্কার করতেই হবে। দিনভর সেখানেই বসা, শোওয়া, আরাম করা। সে জন্য বুলিয়ে দিলেন জীবানুনাশক ওয়াইপ্স। এক, দু’দিনে কিছু হবে না ঠিকই। কিন্তু বার বার ব্যবহারে ক্ষতি হতে পারে চামড়ায় মোড়া সোফা সেটের। শুধু চামড়া নয়, এতে ইথানল, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড-সহ এমন অনেক উপাদান থাকে, যা আসবাবের জন্য ক্ষতিকর। কাঠের আসবাবেও বেশি ঘষলে পালিশ উঠে যাবে।
ভিনাইল ফ্লোর: ইদানীং মেঝের সৌন্দর্যায়নে নানা রকম কৃত্রিম আস্তরণ ব্যবহার করা হয়। শুধু মেঝে নয়, দেওয়ালও এমন অনেক কিছই ব্যবহার হয়। এমন মেঝে বা দেওয়ালে বার বার জীবাণুনাশক ওয়াইপ্স ব্যবহার করলে, মেঝে নষ্ট হতে পারে। এতে থাকা রাসায়নিকের প্রভাবে জেল্লা কমতে পারে।
শিশুর খেলা: শিশুর জিনিসপত্র নিয়ে অভিভাবকদের চিন্তা বেশি। খেলতে খেলতেই তারা মুখে হাত দেয়। সেই কারণেই কি ওয়াইপ্স দিয়ে তার প্লাস্টিকের খেলনাগুলি, টেডি বিয়ার মুছে দিচ্ছেন? মনে রাখা দরকার, খুদেরা তাদের খেলার জিনিস মুখে দেয়। তা ছাড়া ওয়াইপ্সে থাকা জীবাণুনাশক রাসায়নিক নরম খেলনায় শোষিত হতে পারে। সেটি কিন্তু মোটেই স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল নয়।
গায়ে বোলাবেন না: অনেকেই জীবাণুনাশক ওয়াইপ্স দিয়ে হাত-পাও মুছে নেন। মনে রাখা দরকার, মুখ বা হাত মোছার ওয়াইপ্স আর এটি এক জিনিস নয়। এটি একেবারেই ত্বক-বান্ধব নয়। বরং জীবাণু নাশ করার জন্য ব্যবহৃত অ্যালকোহল এবং অন্য রাসায়নিকে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে।
বৈদ্যুতিক এবং বৈদ্যুতিন জিনিস: টিভির পর্দা, ল্যাপটপের কি বোর্ড ওয়াইপস দিয়ে মোছা সুবিধাজনক বলে এটাই ব্যবহার করছেন নাকি? এটাও মস্ত ভুল। এলইডি বা এলসডি পর্দার টিভি, ল্যাপটপ এতে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কি-বোর্ডেও রাসায়নিক ঢুকে যেতে পারে। নিয়ম মেনে সেগুলি পরিষ্কার করুন।