সমাজমাধ্যমে বিভিন্ন রান্নার চ্যানেলে নিশ্চয়ই চেরি টম্যাটো দেখেছেন। সাধারণ টম্যাটোর থেকে আকারে ছোট, লাল রঙের এই টম্যাটো দেখলেই লোভ হয়। সাধারণত এই টম্যাটো দিয়ে তরকারি রাঁধা হয় না। স্যুপ, স্যালাড, পিৎজ়ার টপিং বা চিকেনের কোনও পদে সাজিয়ে পরিবেশনের জন্যই এর ব্যবহার বেশি। দেখে যদি চেরি টম্যাটো খাওয়ার ইচ্ছা হয়, তা হলে কেনার দরকার নেই, ফলিয়ে নিন বাড়িতেই। এক চিলতে বারান্দাতেও দিব্যি গাছে ফল ধরবে। শুধু কিছু নিয়ম জেনে রাখতে হবে।
একটু বড় মাপের টব কিনে নিন। ১০-১২ ইঞ্চির হলে ভাল হয়। ছড়ানো টবে গাছ ভাল হবে। এ বার আসা যাক মাটির প্রসঙ্গে। গাছের চারা বাবীজ কেনার সময়েই জেনে নিতে হবে কী ধরনের মাটিতে এই গাছ ভাল ফলবে। তা ছাড়া কোকোপিটও ব্যবহার করতে পারেন। গাছ বেড়ে ওঠার জন্য মাটি যেমন মাধ্যম, তেমনই কোকোপিট। নারকেলের ছোবড়া থেকে এটি তৈরি করা হয়। এতে থাকে নাইট্রোজেন, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম, জ়িঙ্ক। যার মধ্যে বেশ কয়েকটি গাছ বেড়ে ওঠার জন্য জরুরি। মাটির চেয়ে বেশ হালকা কোকোপিট। গাছ বসানোর আগে মাটি প্রস্তুত করতে হয়। সেই সময়ে এই উপাদানটি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে নেওয়া হয়। কোকোপিট ব্যবহারে গাছের মাটি আলগা থাকে। ফলে জল-হাওয়া ভাল ভাবে মাটিতে প্রবেশ করতে পারে।
আরও পড়ুন:
চেরি টম্যাটো গাছের জন্য কিন্তু পর্যাপ্ত সূর্যালোক প্রয়োজন। যদি মাস তিনেকের মধ্যে গাছে ফল দেখতে চান, তা হলে প্রতিদিন নিয়ম করে তিন থেকে চার ঘণ্টা গাছসমেত টবটিকে রোদে রাখতে হবে। সেই সঙ্গেই জল দিতে হবে নিয়ম করে। তবে খুব বেশি জল দেবেন না, তাতে গাছের গোড়া পচে যেতে পারে। এমন ভাবে জল দিতে হবে, যাতে গাছের গোড়ায় জল না জমে।
গাছের বেড়ে ওঠার জন্য খাবার লাগে। টবের বা গাছের গোড়ার মাটি মাঝেমধ্যে আলগা করে দিলে আলো, হাওয়া্র চলাচল ভাল হয়। প্রয়োজন মতো সার দেওয়ার দরকার পড়ে। জৈব সারই এ ক্ষেত্রে ভাল। পচে যাওয়া ফল বা সব্জি ফেলে না দিয়ে জমিয়ে রাখতে পারেন সার হিসেবে ব্যবহার করার জন্য। প্রতি দিন বাড়িতে যে আনাজপাতি খাওয়া হয়, তার খোসা ফেলে না দিয়ে জমিয়ে রাখুন। গাছ থেকে শুকনো, ঝরে পড়া পাতাও সারের কাজে লাগানো যাবে।
ঠিকমতো পরিচর্যা করতে পারলে বীজ পোঁতার পর থেকে ৫ থেকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে গাছে ফুল ধরবে। তিন মাসের মধ্যে ফল হবে। চেরি টম্যাটো প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, ফ্যাট, ভিটামিন এ, এবং পটাশিয়ামের গুণে ভরপুর। শরীরেরও জন্যও এটি খুব স্বাস্থ্যকর।