লক্ষ্মীপুজোর উপাচারের জোগাড়যন্ত্র পর্ব মেটানো এক বড় কাজ। আর পুজোর আলপনা দেওয়া আরও একটি গুরুদায়িত্ব। সাধারণত যিনি জোগাড়যন্ত্রের কাজ করেন, তাঁর পক্ষে সারা দিনের কাজ মিটিয়ে আর আলপনা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা সম্ভব হয় না।
লক্ষ্মীপুজোয় আলপনা দেওয়া একটি চিরকালীন প্রথা। তা ছাড়া পুজোর বাড়িতে আলপনার নকশা দেখতেও ভাল লাগে। আলপনার পরিকল্পনা তাই বাংলার ‘লক্ষ্মী’দের জন্য করে দেওয়া হল এখানেই।
খুব অল্প সময়ে দেওয়ার সহজ কিছু আলপনার নকশা রইল এখানে। তার কোনওটিতে রয়েছে কমলেকামিনীর প্রিয় পদ্ম, কোথাও শঙ্খ, কোথাও ধানের শীষ, মঙ্গল চিহ্ন, আম্রপল্লব বা লক্ষ্মীর পা। দেখে নিন নকশা।
লক্ষ্মীপুজোর আলপনা যে নকশা ছাড়া অপূর্ণ, তা হল লক্ষ্মীর পা। লক্ষ্মী পায়ে পায়ে আসনে এসে থিতু হয়ে বসছেন, এটি বোঝাতেই ওই আলপনার উদ্ভব। তবে তার নকশা এমনই যে, তা আলপনাতেও আঁকা যায়।
লক্ষ্মীকে বলা হয় কমলেকামিনী। পদ্ম ফুটে থাকা হ্রদে পদ্মের উপর আসীন তিনি। তাই আলপনায় পদ্ম দিয়ে নকশা আঁকুন। উপরে নীচে ছ’টি পাপড়ি এঁকে নিলেই পদ্মের মতো দেখতে লাগে। তবে ইচ্ছেমতো তাকে আরও সৃজনশীল করে তুলতে পারেন।
লক্ষ্মীর প্রতিমার হাতে থাকে পাকা ধানের শীষ। সেই ধানের শীষও হতে পারে পুজোর আলপনার নকশা। চৌকাঠে অমন আলপনা আঁকলে বেশ ভরাট দেখতে লাগবে।
আলপনার নানা রকমের নকশা হয়। কলকা, ফুল, পাতা। চিরকালীন সেই নকশায় সাদার পাশে ভরে দিন সামান্য ‘শুভ’ লাল রং। তবে তা আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
আলপনায় আরও একটি নকশা নেওয়া যেতে পারে পুজোর উপাচার থেকেই। সেটি হল আমপাতা। সরু লম্বাটে আম্রপল্লবের পাঁচ-পাতা ঘটে স্থাপন করে তবে পুজো এগোয়।
আমপাতার সেই পাঁচ বা তিন পল্লব অনায়াসে হয়ে উঠতে পারে আলপনার নকশা। সঙ্গে সামান্য কলকা দিয়ে এঁকে দিন ঠাকুরঘরের চৌকাঠে।
ফুল-পাতার নকশার বাইরে অন্য রকম নকশা করতে হলে আলপনার নকশা ধার নিতে পারেন মেহেন্দির নকশা থেকে।
মেহেন্দিতে হাতের তালু ভরাট করার জন্য অনেক সময় জালের মতো নকশা করা হয়। উপরের ছবিতে তেমন জালের মতো নকশা দিয়েই আলপনা দেওয়া হয়েছে ঘরের প্রবেশপথে।
ঘরের সামনে সাধারণত সরু আলপনা দেওয়া হয়। যাতে ঘরে ঢোকার সময় সেটি সহজেই ডিঙিয়ে যাওয়া যায়। তবে চাইলে প্রবেশপথে চওড়া আলপনাও দেওয়া যেতে পারে।
মাঝখানে একটি নকশা এঁকে পাশে কলকা আর পাতার নকশা দিয়ে বাড়িয়ে নিন।
চৌকাঠ, পুজোর ঘরের মতো আলপনা দিয়ে সাজানো যেতে পারে সিঁড়িও। সরু নকশা দিয়ে বর্ডার দিয়ে দিন অথবা দু’ পাশে এঁকে দিন পছন্দের নকশা।
লক্ষ্মীপুজোয় বড় আলপনা দেওয়ার সুযোগ থাকে পুজোর ঘরে অথবা বসার ঘরের কোনও একটি কোণে। সেখানে এমন একটি রঙিন আলপনা এঁকে ফুল দিয়ে সাজানো যেতে পারে।