মরসুম বদলের সঙ্গে যেমন সাজপোশাক বদলে যায়, তেমনই অন্দরসজ্জাতেও টুকিটাকি বদল আনলে বেশ ভালই লাগে। ভ্যাপসা গরম এখনও পড়েনি। তবে আর কিছু দিনের মধ্যেই তাপমাত্রার পারদ চড়বে। রোদে ঘেমেনেয়ে, বাইরের অস্বস্তিকর পরিবেশ থেকে বাড়ি ফিরে শান্তিটুকুই তো কাম্য। সে জন্য ঘরের পরিবেশ এমন হতে হবে, যা চোখের আরাম দেবে, আবার মনেরও। তার জন্য বিস্তর দামি আসবাব বা শো-পিস দিয়ে ঘর সাজানোর দরকার নেই। আপনার রুচিমাফিক আটপৌরে ভাবেও ঘর সাজাতে পারেন। অন্দরসাজ এমন হবে যাতে শৌখিনতার ছাপ থাকবে, আবার পরিবেশও হবে আরামদায়ক।
বসার ঘরটি দিয়েই সাজ শুরু করা যাক। অতিথিরা এলেও এই ঘরটিতে বসেই জিরিয়ে নেবেন। বসার ঘর কেমন ভাবে সাজাবেন, তা আপনার নিজস্ব পছন্দ ও রুচির উপর নির্ভর করছে। তবে একটা ধারণা দেওয়া যেতেই পারে।
হালকা রঙের ছোঁয়া
গরমের সময়ে একটু হালকা রংই বেশি ভাল লাগে। যেমন, সাদা, হালকা সবুজ, হালকা হলুদ, বেজ বা আকাশি নীল রঙে চোখের আরাম হয় বেশি। তাই পর্দা, সোফার কভার, কুশন কভার বা টেবিলের কভারের জন্য হালকা রঙই বেছে নিন। তবে রোদের তেজ আটকাতে জানলায় হালকা ও ভারী দুই রঙের পর্দাই লাগাতে হবে। কাঠ বা বার্নিশ শেডের আসবাব থাকলে যে কোনও রঙের চাদর ব্যবহার করা যেতে পারে। আবার আসবাব যদি হয় কালো বা সাদা, তা হলে মানানসই রং ও প্যাটার্নের চাদর বাছাই করতে হবে।
এসি ছাড়াই ঘর ঠান্ডা থাকবে
মাদুরের পর্দা, শীতলপাটি, টেরাকোটার শো-পিস রাখতে পারেন ঘরে। ভারী কার্পেট এই সময়ে তুলে রাখুন। অতিরিক্ত আসবাব ঘরে রাখার দরকার নেই। নতুন কিছু কিনতে হলে বেতের আসবাব কিনতে পারেন। বেতের মোড়া, চেয়ার, টেবিল বেশ পরিপাটি

বসার ঘরের সাজ হতে হবে পরিপাটি। ছবি: ফ্রিপিক।
সবুজের ছোঁয়া থাক বৈঠকখানায়
থিম-নির্ভর অন্দরসজ্জাই যে চোখ টানে তা নয়,কেবল গাছ দিয়েই ঘরের সাজসজ্জা বদলে দিতে পারেন। আর গরমের দিনে চারপাশটায় যদি সবুজের ছোঁয়া থাকে, তা হলে মন ভাল হয়ে যায়। ছোট ছোট গাছ রাখার জন্য ঘরের তাক ব্যবহার করুন।দে

দেওয়ালে ঝোলাতে পারেন ফুল গাছের টব। ছবি: ফ্রিপিক।
একরঙা দেওয়াল হলে কোনও ফুলগাছ লাগালে, সেটা এক ধরনের বৈচিত্র তৈরি করবে। বাজারে ঝুলন্ত টব পাওয়া যায়। জানলায় সেগুলি ঝুলিয়ে তাতে ছোট ছোট গাছ রাখতে পারেন। খুব বেশি গাছ রাখবেন না, তা হলে জানলা অবরুদ্ধ হয়ে যাবে। ঘরের কোণের দিকে কোনও আংটা থাকলে, সেখানে দড়ি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দু'একটি গাছ রাখতে পারেন। ঘরে পাথরের টেবিল থাকলে সেখানে বাহারি কাচের পাত্রে জল ভরে গাছ রাখতে পারেন।

দেওয়ালের ছবি-সাজ। ছবি: ফ্রিপিক।
দেওয়ালের সাজ
দেওয়াল জুড়ে ভারী কাজ করাতে পারেন বা ছিমছাম ইনস্টলেশন। পছন্দ মতো ছবি কিংবা আর্ট ইনস্টলেশনের মাধ্যমেও বৈচিত্র আনতে পারেন। দেওয়ালের আয়তনের উপর সবটাই নির্ভর করবে। ফোটোফ্রেম, ওয়াল হ্যাঙ্গিং, ওয়াল প্লেট— এই ধরনের সামগ্রী তো আছেই, ছক ভাঙার জন্যই এখন অনেকে বেছে নিচ্ছেন ওয়াল পেন্টিং। পেশাদার শিল্পীদের দিয়ে ছবি আঁকাতে পারেন, আর যদি নিজে রং-তুলিতে পারদর্শী হন, তা হলে তো কথাই নেই। মধুবনী, পটচিত্র স্টাইলে কিছু আঁকতে পারেন অথবা নানা রকম ম্যুরাল মন্দ লাগবে না। তবে খেয়াল রাখতে হবে, রঙের যেন বাড়াবাড়ি না হয় এবং দেওয়ালে ছবির সাজ থাকলে ঘরও সাজাতে হবে তেমন ভাবেই।