দীপাবলি উপলক্ষে ঘর সাজানোর প্রস্তুতি তুঙ্গে। আলোর রোশনাইয়ে ঘরকে প্রাণবন্ত করে তুলতে বাজারে ছেয়ে গিয়েছে রকমারি বাতি। তবে নিজে হাতে তৈরি আলো দিয়ে ঘর সাজানোর আনন্দই আলাদা। দীপাবলির আগে রইল নিজে হাতে আলো বানানোর কিছু সহজ পদ্ধতি:
কাগজের লন্ঠন
নীল, হলুদ, সবুজ যে কোনও রঙের আয়তাকার কাগজ নিন। এ বার কাগজটা মাঝ বরাবর ভাঁজ করে নিতে হবে। এ বার যে দিকে ভাঁজ সেই ভাঁজের দিক থেকে কাঁচি দিয়ে ২ ইঞ্চি গ্যাপ রেখে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত অবধি কাটতে হবে। খেয়াল রাখবেন ভাঁজের অন্য দিকে যেন পুরোটা কেটে না যায়। মাথার দিকটা জোড়া থাকবে। তা হলে পুরো কাটা হয়ে গেলে কাগজটা খাঁজকাটা দেখতে লাগবে। এ বার ভাঁজ খুলে লম্বা করে ঘুরিয়ে সেটার দু’পাশ আঠা দিয়ে জুড়ে দিন। মাথার উপর আর নীচের অংশ গোল থাকবে। ঝিরিঝিরি কাটা দাগের উপরে ছোট ছোট ফুল লাগাতে পারেন। কাগজের স্ট্রিপ কেটে এই লন্ঠনের নীচেও লাগিয়ে নিতে পারেন। ভিতরে ছোট আলো সেট করে দিন। কাগজের কাটা অংশগুলো থেকে আলো বেরিয়ে এসে সুন্দর আবহ তৈরি করবে। বাড়ির খুদে সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে এ রকম লন্ঠন বানালে ওরাও মজা পাবে।
একই ভাবে, কার্ডবোর্ডের বাক্সের গায়ে মনমতো নকশা কেটে নিয়ে যদি বাক্সের মধ্যে টুনি লাইট ঢুকিয়ে দেওয়া যায়, তা হলেও বেশ সুন্দর আলো তৈরি হয়ে যাবে।
হুলা-হুপের ঝাড়বাতি
হুলা হুপের চারপাশে টুনি লাইট পেঁচিয়ে নিন। এর পরে সেটি থেকে বাড়তে থাকা উচ্চতায় টুনি লাইট ঝোলাতে থাকুন। চাইলে এর সঙ্গে কাগজের ফিতেও ঝোলানো যায়। ইচ্ছেমতো একাধিক হুলা হুপ, ফুলের সঙ্গে পাতা বা অন্য কোনও সামগ্রীও ব্যবহার করা যেতে পারে। সবশেষে এই ঝাড়টি ঝুলিয়ে দিন ঘরের পছন্দসই কোনও জায়গায়।
বোতলে আলো
বাড়িতে অনেক সময়ে একাধিক কাচের বোতল থেকে যায়। এগুলিকেও আকর্ষক ভাবে সাজিয়ে তোলা যায়। প্রথমে কাচের বোতলটির ভিতর-বাইরে ভাল ভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। বোতলের গায়ে গ্লাস পেন্টিং কালার দিয়ে রংও করে নিতে পারেন। এ বার ভিতরে টুনি লাইট ভরে নিলেই তৈরি আলো।
একই ভাবে, বড় কাচের বাটির মধ্যে জল দিয়ে তার মধ্যে কিছু ফুল ভাসিয়ে দিন। তার মাঝে মাঝে ভাসিয়ে দিন ছোট ছোট মোমের প্রদীপ। বা মেসন জারের মধ্যেও ছোট মোম রাখতে পারেন। দেখতে সুন্দর লাগবে।
মুন ল্যাম্পও তৈরি করে নিতে পারেন। এর জন্য লাগবে মোটা সুতো। কুরুশ বোনার সুতো ব্যবহার করতে পারেন। আর লাগবে আঠা আর বেলুন। একটা বেলুন ফুলিয়ে নিন। এ বার সুতোর গায়ে আঠা লাগিয়ে বেলুনের গায়ে ভাল করে জড়িয়ে নিতে হবে। বেলুনটা ভাল মতো ঢেকে গেলে শুকোতে দিন। আঠা শুকিয়ে এলে পিন দিয়ে বেলুনটা ফাটিয়ে দিন। সুতোর ফাঁক দিয়ে টুনি লাইট ঢুকিয়ে দিলেই তৈরি মুন ল্যাম্প।
প্রদীপের বাহারি স্ট্যান্ড
কাচের চুরি, সিডি, বাড়িতে থাকা এমন নানা সামগ্রীর সাহায্যে খুব সহজেই দিয়া হোল্ডার বানানো যায়। রঙিন কাগজ-কাপড়, কুন্দনের পাথর দিয়ে সাজিয়ে ফেলা যায় কোনও সিডি। মাঝে বসিয়ে দেওয়া যায় একটি ছোট টি-ল্যাম্প।
যাঁরা কুইলিং বা অরিগ্যামিপছন্দ করেন, তাঁরাও ওই শিল্পের সাহায্যে চাকতি মতো বানিয়ে নিতে পারেন। মাঝের জায়গাটি ফাঁকারেখে সেখানে বসিয়ে নেওয়া যায় কোনও টি ল্যাম্প বা ব্যাটারিচালিত মোমবাতি।
ফুল আর আবির দিয়ে রঙ্গোলি করে তার চারপাশে সাজিয়ে দিতে পারেন এ রকম ছোট ছোট প্রদীপ। তবে যেহেতু আলোর উৎসবে মোমবাতি, প্রদীপও সঙ্গী, তাই আগুন থেকে সাবধান। বাড়ির এমন কোনও জায়গায় প্রদীপ বা মোম জ্বালাবেন না যেখানে পর্দা বা কাপড় থাকতে পারে। সেখানে বৈদ্যুতিক আলো ব্যবহার করাই ভাল।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)