তেলা গা, রং-ও উজ্জ্বল। বিক্রেতার কথামতো ভাল ভেবে পাকা পেঁপে কিনলেন। বাড়ি এসে কেটে মুখে দিতে গিয়ে বুঝলেন বেমালুম ঠকে গিয়েছেন। না আছে স্বাদ, না মিষ্টত্ব। মুখে দিলেই বোঝা যায়, রাসায়নিক দিয়ে তা পাকানো হয়েছে।
দেখে পাকা এবং সুস্বাদু হবে বলে মনে হলেও অনেক সময় মিষ্টি পেঁপে চেনা কঠিন হয়ে যায়। কয়েকটি কৌশল মাথায় রাখলে ঠকে যাওয়ার সম্ভবনা এড়াতে পারেন।
১। রং দেখলে ভুললেই বিপদ। প্রাকৃতিক ভাবে পাকা পেঁপের গায়ে হলুদ-কমলা দাগ থাকে। কখনও পেঁপে পুরোটা হলুদ হয়, কখনও হলুদের মধ্যে সবুজ ছোপ থাকে। এটা স্বাভাবিক। তবে পেঁপের রং যদি একটু বাড়াবাড়ি রকম উজ্জ্বল হয়, খুব বেশি মসৃণ হয় বা সবুজ ছোপ বেশি থাকে তা হলে কিন্তু সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। পেঁপে দ্রুত পাকানোর জন্য রাসায়নিক ব্যবহার হয়। রাসায়নিকের প্রয়োগে রং উজ্জ্বল দেখায় কখনও কখনও।
আরও পড়ুন:
২। রং দেখে বুঝতে না পারলে এক বার শুঁকেও দেখতে পারেন। প্রাকৃতিক ভাবে পাকা পেঁপের নিজস্ব মিষ্টি গন্ধ থাকবে। তবে রাসায়নিক প্রয়োগ হলে তার গন্ধ এড়ানো সম্ভব নয়।
৩। পেঁপের বৃন্তের দিকটি হাত দিয়ে চেপে দেখুন। হালকা নরম বোধ হলে বুঝতে হবে ঠিকঠাক পাকা। তবে পেঁপের নীচের অংশ তলতলে হয়ে গেলে ধরে নিতে হবে সেটি অতিরিক্ত পাকা। আবার যদি পেঁপের কোনও অংশ শক্ত, কোনওটা নরম হয় তা হলে কিন্তু সেটি কৃত্রিম ভাবে পাকানো হতে পারে। এ রকম পেঁপের স্বাদ ভাল হয় না।
৪। পেঁপে কাটার পর গাঢ় কমলা রং হলে এবং বীজ পুষ্ট হলে সাধারণত সেটি মিষ্টি হয় বা প্রাকৃতিক উপায়ে পক্ব হয়। তবে সেটি ফ্যাকাশে হলে সাধারণত স্বাদ ভাল হয় না।
৫। কোথা থেকে পেঁপে কিনছেন সেটিও গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘ দিনের ফলবিক্রেতার থেকে কিনলে, তার সুনাম থাকলে, ঠকে যাওয়ার ঝুঁকি কম হয়।
কেন রাসায়নিকে পাকানো পেঁপে ক্ষতিকর?
কাঁচা পেঁপে দ্রুত পাকানোর জন্য ক্যালশিয়াম কার্বাইড প্রয়োগ করা হয়। তা থেকে অ্যাসিটিলিন গ্যাস নির্গত হয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য মোটেই ভাল নয়।
কোন পন্থায় কাঁচা পেঁপে পাকাবেন?
· কাঁচা পেঁপে বা তুলনামূলক কম পাকা পেঁপে কিনে এনেও বাড়িতে পাকিয়ে নিতে পারেন। সহজ উপায় হল পেঁপেটি খবরের কাগজে মুড়ে ঘরের তাপমাত্রায় রেখে দেওয়া।
· কলা এবং আপেলের সঙ্গেও পেঁপে কোনও কাগজের ব্যাগে রাখতে পারেন। কলা, আপেল থেকে বার হওয়া ইথিলিন গ্যাস পেঁপে দ্রুত পাকাতে সাহায্য করবে। তবে কাঁচা পেঁপে ফ্রিজে রাখলে কিন্তু সেটি ঠিকমতো পাকবে না।