প্রবাদ আছে, ‘ঘ্রাণেন অর্ধভোজনং’। অর্থাৎ, ঘ্রাণেই অর্ধেক ভোজ হয়ে যায়। খাবার যতই তোয়াজ করে রাঁধা হোক না কেন, রান্নার সুবাস ছাড়া তা কিন্তু জমে না। গন্ধই খাওয়ার ইচ্ছাকে বাড়িয়ে দেয়। ঠিক যেমন ইলিশ মাছ ভাজার গন্ধ, মাংস কষানোর গন্ধ। বাড়িজুড়ে ম-ম করা গন্ধেই খিদে চাগাড় দিয়ে ওঠে।
মাংস, পোলাও, ইলিশ ভাপার যেমন সুঘ্রাণ রয়েছে, তেমন কিন্তু রোজের সাধারণ খাবারও গন্ধও বাড়িয়ে তোলা যায়। তার জন্য দরকার মশলার সঠিক প্রয়োগ। জানা দরকার, রন্ধনের খুঁটিনাটি। তা হলেই কুমড়োর ছক্কা থেকে মাছের ঝোলেও বাড়বে সুবাস।
১। খাবারের গন্ধ সুন্দর হওয়ার জন্য রকমারি টাটকা সব্জির ব্যবহার জরুরি। তবে জানতে হবে, কোন খাবারে কোনটি দেওয়া চলে, কোনটিতে নয়। সর্ষে দিয়ে মাছের ঝাল সকলেই রাঁধেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ধনেপাতার ছোঁয়ায় রান্নায় বাড়তি গন্ধ জুড়তে পারে। তবে সেটি ব্যবহারেরও কৌশল আছে। ধনেপাতার ডাঁটিতে কিন্তু বেশি গন্ধ থাকে, সেটি যোগ করতে হবে। ধনেপাতা দিতে হবে একেবারে শেষ ধাপে। রান্নার পর ছড়িয়ে চাপা দিতে হবে। পনির থেকে মাংসে ভুরভুর করে গন্ধ ছাড়বে একেবারে শেষ ধাপে একটু কসৌরি মেথি যোগ করলে। তেমন ভাবে কারিপাতা, গন্ধরাজ লেবুর সঠিক ব্যবহার খাবারের বাড়তি গন্ধ যোগ করে।
আরও পড়ুন:
২। সর্ষের তেলে রসুনকুচি ভাজলেই সুবাস ছাড়ে। আবার সর্ষের তেলে পেঁয়াজ ভাজার গন্ধও আলাদা। রান্নায় ভাল গন্ধ আনতে হলে তেলে রসুন এবং পেঁয়াজ একটু ভাল করে ভাজতে হবে। একেবারে শেষধাপে ফোড়ন দিলেও খাবারের গন্ধ ভাল হয়।
৩। মশলা যদি শুকনো কড়াইয়ে এক বার নাড়িয়ে তার পর গুঁড়ো করা হয় এবং সেই ভাজা মশলা ছড়িয়ে দেওয়া হয় খাবারের উপর থেকে, তার গন্ধই খিদে বাড়িয়ে দেয়। ঘুগনি থেকে সাদামাঠা আলু-জিরা— ভাজা মশলাই রান্নায় যোগ করা অন্য মাত্রা।
৪। রান্নায় গন্ধ আনতে ফোড়নের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। গরম তেলে ফোড়ন দিতে হয়। তেল হবে গরম, কিন্তু মশলা তাতে পুড়বে না। তেলের সঙ্গে মশলা মিশে সুবাস ছড়ালে তবেই রান্না করতে হবে। একেবারে শেষধাপে একটু ফোড়ন যোগ করলেও গন্ধ ভাল হয়।
৫। যে রান্নায় হিং দেওয়া হচ্ছে, সেই রান্নায় রসুন দিলে কিন্তু দুই চড়া গন্ধ রান্না নষ্ট করতে পারে। নিরামিষ খাবারে একটু হিং ফোড়ন খাবারের সুবাস বাড়িয়ে দেয়।