সিঁথির কাছে চুল সরালেই লাল লাল র্যাশ দেখা যায়। মাথার তালুতে চুলকানি, গুটি গুটি ব্রণও নাজেহাল করে মাঝেমধ্যেই। চুল থেকে লাগাতার সাদা খোসার মতো ঝরতে থাকলে তা খুশকি ভেবে ভুল করেন অনেকেই। মাথার ত্বকে নানা রকম সংক্রমণজনিত রোগ হতে পারে। হতে পারে সোরিয়াসিসও। গরমের সময়ে র্যাশ-ব্রণর সমস্যা অনেক বেড়ে যায়। কেবল ওষুধ খেলে বা মাথার ত্বকে মলম লাগালে তা সম্পূর্ণ ভাবে সারবে না। তার জন্য একটি বিশেষ তেল ব্যবহার করতে পারেন। দোকান থেকে কেনার প্রয়োজন নেই, বানিয়ে নেওয়া যাবে বাড়িতেই।
জবা ফুল ও আমলকি মাথার ত্বকের যাবতীয় সমস্যা দূর করতে পারে। জবা ফুলের মধ্যে অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে। এটি চুলে কেরাটিন প্রোটিনের উৎপাদন বাড়িয়ে তোলে। ফলে চুলের ঘনত্ব বাড়ে, চুলের গোড়া মজবুত হয়। ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন’-এর তথ্য বলছে, জবাতে রয়েছে ভিটামিন ই, ভিটামিন সি। এগুলি চুলের প্রাকৃতিক জেল্লা ধরে রাখে। ফলিকলগুলিও পুষ্টি পায়। নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে। মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, ফলে চুল পুষ্টি পায়।
আরও পড়ুন:
পাশাপাশি আমলকিও চুলের জন্য খুবই উপকারী। বিভিন্ন ভিটামিন এবং খনিজে ভরপুর আমলকিতে রয়েছে ট্যানিন এবং ক্যালশিয়াম যা সূর্যের অতিবেগনি রশ্মি থেকে চুলকে বাঁচায়। মাথার ত্বকের পিএইচের ভারসাম্যও বজায় রাখে। আমলকির রস নিয়মিত কয়েক দিন মাথায় মাখলে চুল ঝরে পড়া অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। বিশেষ করে, হরমোনের মাত্রা কম-বেশি হওয়ার কারণে চুল পড়া প্রতিরোধ করতে পারে আমলকি।
জবা ফুল ও আমলকি একসঙ্গে মিশিয়ে দিলে তা চুলের জন্য দ্বিগুণ কার্যকরী হবে। মাথার ত্বকের সংক্রমণও প্রতিরোধ করতে পারবে।
কী ভাবে বানাবেন তেল?
তিন থেকে চারটি জবা ফুলের পাপড়ি ভাল করে শুকিয়ে নিতে হবে। আমলকি বেটে নিতে পারেন বা শুকিয়ে গুঁড়ো করে রাখতে পারেন।
সসপ্যানে আধ কাপের মতো নারকেল তেল বা তিসির তেল নিয়ে কম আঁচে ফোটাতে হবে। তেল গরম হলে তাতে জবা ফুলের শুকনো পাপড়িগুলি ও আমলকির গুঁড়ো মিশিয়ে ৭-১০ মিনিট কম আঁচে ফোটান। ফুলের পাপড়ি মিশে গিয়ে তেলের রং বদলে যাবে। এ বার গ্যাস বন্ধ করে দিয়ে ঠান্ডা হতে দিন। এই তেল শিশিতে ভরে রাখতে পারেন। সপ্তাহে তিন দিন এই তেল চুলে ও মাথার ত্বকে মালিশ করলে চুলের ঘনত্ব বাড়বে। চুল পড়া বন্ধ তো হবেই, মাথার ত্বকে ব্রণ-ফুস্কুড়ি হলে সেগুলিও সেরে যাবে।