সিরাম হোক ময়েশ্চারাইজ়ার, লোশন কিংবা ক্রিমের উপকরণের তালিকায় থাকে রকমারি অ্যাসিড। হায়ালুরোনিক, রেটিনল, স্যালিসিলিক অ্যাসিড-সহ অনেক কিছুই। প্রতিটি অ্যাসিডের কাজ আলাদা। কোনওটি ত্বকের জৌলুস বাড়িয়ে তোলে, কোনওটির আবার আর্দ্রতা ধরে রাখে। তবে যদি ব্রণ হয়, তা হলে কোনটি মাখবেন? ত্বকের লালিত্য ধরে রাখতে ব্যবহার হওয়া হায়ালুরোনিক অ্যাসিড যুক্ত সিরাম কি মাখা যাবে?
তবে তার আগে জানা দরকার কী এটি? ত্বকের চিকিৎসক শ্বেতা মিশ্র বলছেন, ‘‘ত্বক, কোষকলা, অস্থিসন্ধিতে প্রকৃতিগত ভাবেই হায়ালুরোনিক অ্যাসিড থাকে। জলের অণুর সঙ্গে জমাট বেঁধে এই অ্যাসিড ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। তবে বয়স যত বৃদ্ধি পায়, ততই ত্বকে অ্যাসিডের স্বাভাবিক মাত্ হ্রাস পেতে শুরু করে। যার জেরে ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়, বলিরেখা দেখা দেয়। বিশেষত রুক্ষ ত্বকের সমস্যায় হায়ালুরোনিক অ্যাসিড বিশেষ ভাবে কার্যকর।’’
রুক্ষ ত্বকের জন্য এটি উপকারী নিঃসন্দহে, কিন্তু ব্রণ হলেও কি হায়ালুরোনিক অ্যাসিড যুক্ত সিরাম কাজ করবে? সাধারণত, তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণের সমস্যা দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে কি হায়ালুরোনিক অ্যাসিডের ব্যবহারে হিতে বিপরীত হতে পারে?
আরও পড়ুন:
১। ব্রণ হলে বেঞ্জল পারক্সাইড, স্যালিসিলিক অ্যাসিড, রেটিনয়েডস ব্যবহার করা হয়। এই উপকরণগুলি স্বাভাবিক আর্দ্রতা কমিয়ে অনেক সময় ত্বক রুক্ষ করে তোলে। আবার ত্বক বেশি রুক্ষ হয়ে গেলে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে অতিরিক্ত সিবাম নিঃসরণ করতে পারে। তার ফলে আবার ব্রণের সমস্যা বাড়তে পারে। সে কারণে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য হায়ালুরোনিক অ্যাসিড যুক্ত সিরাম মাখা যায়।
২। চিকিৎসকেরা বার বারই বলেন, তৈলাক্ত ত্বকের জন্য স্বাভাবিক আর্দ্রতা জরুরি। এ জন্য ময়েশ্চারাইজ়ার মাখতে বলা হয়। কিন্তু ঘন, অতিরিক্ত তৈলাক্ত ময়েশ্চারাইজ়ার এমন ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। ঘন ময়েশ্চারাইজ়ারে ত্বকের ছিদ্রমুখ বন্ধ হয়ে গেলে ব্রণের সমস্যা বাড়তে পারে। অথচ হায়ালুরোনিক অ্যাসিডযুক্ত সিরাম চটচটে ভাব ছাড়াই ত্বক আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে।
৩। ব্রণ হলে মুখ লাল হয়ে যায়, জ্বালাও করে অনেক সময়। ২০২১ সালে ‘বায়োমলিকিউলস’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র জানাচ্ছে, হায়ালুরোনিক অ্যাসিডে থাকা প্রদাহনাশক উপাদান ত্বকের জ্বালাভাব কমাতে সাহায্য করে।
৪। স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় থাকলে স্যালিসিলিক অ্যাসিড, রেটিনয়েডস-এর মতো উপাদান শোষণ করতে ত্বকের সুবিধা হয়। ফলে ব্রণের চিকিৎসাও তুলনামূলক সহজ হতে পারে।