প্রতীকী ছবি।
সকালে ঘুম থেকেই ফোন অন করলেই হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ ঢোকার বন্যা। অন্তত ১০০ বার পিং পিং করে কানের কাছে ঘ্যান ঘ্যান না করলে শান্তি নেই তার। ফোন হাতে নিয়েই একগাদা নোটিফিকেশন হোয়াটসঅ্যাপে। প্রতিটে গ্রুপে গোটা দশেক গুড মর্নিং মেসেজ তো রয়েইছে, কেউ কেউ আবার তা পাঠিয়েছেন ব্যক্তিগত উইন্ডোতেও। আর এতে শুধু যে ফোনের মেমরি স্পেসের দফারফা তাই নয়, বারোটা বাজছে ইন্টারনেট স্পিডেরও।
সম্প্রতি ব্রিটেনের সংস্থা ওপেন সিগন্যালের সমীক্ষাতেও দেখা গিয়েছে তার ফল। এই মুহূর্তে ফোর জি ইন্টারনেটের সুবিধাপ্রাপ্ত বিশ্বের ৭৭টি দেশের মধ্যে ভারতেই ফোর জি স্পিড সবচেয়ে কম। কারণ ভারতীয়দের গুড মর্নিং মেসেজ পাঠানোর হিড়িক। যার ঠেলায় নাকি ফ্রিজ করে যাচ্ছে স্মার্টফোন।
গুগল জানাচ্ছে, লক্ষ লক্ষ ভারতীয় যারা প্রথম বার লগ ইন করছেন তারা সকাল ৮টার মধ্যে গুড মর্নিং মেসেজ পাঠিয়ে ব্যান্ডউইথ স্লো করে দিচ্ছেন। যার ফলে গত ৫ বছরে গুগলে ‘গুড মর্নিং ইমেজ’ সার্চও বেড়ে গিয়েছে ১০ গুণ। গুড মর্নিং কোটের বিশেষ সেকশন বানিয়েছে পিকচার শেয়ারিং সাইট পিন্টারেস্ট। তারা জানাচ্ছে, গত এক বছরে নাকি ভারতীয়দের মধ্যে এই ধরনের ছবি ডাউনলোড করার ঝোঁক ৯ গুণ বেড়ে গিয়েছে। আর তাতেই সূর্যোদয় থেকে শুরু করে সকাল ৮টা পর্যন্ত বন্ধু, পরিবার, এমনকী অচেনা মানুষদের ফোনও ভরে উঠছে লক্ষ লক্ষ গুড মর্নিং মেসেজে।
আরও পড়ুন: ভারতে ফোর জির গতি অনেকটাই কম, বলছে সমীক্ষা
গত বছর স্টেটাস মেসেজ অপশন নিয়ে আসে হোয়াটসঅ্যাপ। যার সাহায্যে এখন একসঙ্গে কন্ট্যাক্ট লিস্টে থাকা সকলকে পাঠানো যায় গুড মর্নিং মেসেজ। এই মুহূর্তে হোয়াটসঅ্যাপের সবচেয়ে বড় বাজার ভারত। এখানে মাসে অ্যাক্টিভ ইউজারের সংখ্যা ২০ কোটি।
এই গুড মর্নিং মেসেজ প্রেরকদের দলে রয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রীও। সকাল পাঁচটায় উঠে যোগাসনের পর সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই গুড মর্নিং মেসেজ পাঠান নরেন্দ্র মোদী। গত বছর তাঁর মেসেজের উত্তর না দেওয়ায় একদল সাংসদ-বিধায়কদের ওপর নাকি বেজায় ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: এই ফোনগুলি কিনলে পাবেন ২২০০ টাকার ‘ইনস্ট্যান্ট ক্যাশ ব্যাক’
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কম দামি স্মার্টফোন ও সস্তা ডেটা প্ল্যানের কারণে ভারতের সব স্তরের মানুষই এখন ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন। সামাজিক ভাবেই ভারতীয়রা কাজের ক্ষেত্র, বন্ধু বান্ধব, পরিবারের সঙ্গে দলবদ্ধ ভাবে থাকতে ভালবাসে। যার ফলে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ যেমন বাড়ছে, তেমনই লাভবান হচ্ছে মোবাইল প্রস্তুতকারক ও পরিষেবা সংস্থাগুলোও।
কিন্তু এর ফলে মোবাইল ইন্টারনেটের স্পিড কমতে শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এত পরিমাণ গুড মর্নিং মেসেজ জ্যাম করে দিচ্ছে ইন্টারনেটের গতিপথ। অন্য দিকে, প্রতি দিন ভারতের তিন জন স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর মধ্যে এক জন মোবাইলে স্পেসের সমস্যায় ভুগছেন। ডেটা স্টোরেজ ফার্ম ওয়েস্টার্ন ডিজিটাল কর্পের রিপোর্ট অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই সংখ্যা প্রতি ১০ জনে এক জন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy