আর ক’দিন পরেই পৌষ সংক্রান্তি। পিঠে খাওয়া হবেই। আর মিষ্টির জগতে আপাতত যা চলছে তাকে কেক পার্বণ বলা চলে। কেক গেলে তবে পিঠে আসবে! কিন্তু যদি দুটোই এক সঙ্গে আসে তাতেই বা ক্ষতি কী? বর্ষবরণের রাত হোক বা নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহ, অতিথি আপ্যায়নে বা উদ্যাপনে সাহেবি কেকের পাশে থাকুক বাঙালি পিঠেও। পাশাপাশিই পাতে সাজিয়ে দিন দু’রকম।
আমন্ড ড্রাই কেক
শীতকালীন চা বা কফির সঙ্গে সকালে বা বিকেলে আয়েশ করে খাওয়ার কেক। তাই ক্লাসিক আমন্ড টি কেক-ও বলা হয় এই কেককে। জন্ম স্পেনে। তবে ইউরোপ জুড়েই এই টি-টাইম কেকের সমাদর রয়েছে। ডিম দিয়ে এবং ডিম ছাড়া দু’ভাবেই বানানো যেতে পারে। তবে এই কেকের বিশেষত্ব হল এতে ভিজে ভাব থাকবে না। এই কেক অত্যন্ত হালকা এবং স্পঞ্জের মতো হয় বলেই এর নাম ড্রাই কেক।
উপকরণ:
১.৫ কাপ ময়দা
১/২ কাপ গুঁড়ো করা কাঠবাদাম বা আমন্ড ফ্লাওয়ার
১.৫ চা চামচ বেকিং পাউডার
৩/৪ চা চামচ বেকিং সোডা
১ চিমটি নুন
৩/৪ কাপ কনডেন্সড মিল্ক
১/২ কাপ ফেটিয়ে নেওয়া টক দই
১/২ কাপ গলানো মাখন বা সাদা তেল
১/২ কাপ দুধ
১ চা চামচ ভ্যানিলা এসেন্স
একটি লেবুর খোসার সবুজ অংশ কোরানো
২ টেবিল চামচ কাঠবাদাম কুচি বা ফ্লেক্স
প্রণালী:
প্রথমে অভেন ১৮০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় প্রি-হিট করতে দিন। একটি কেক মোল্ড বা কেক বানানোর টিনের পাত্রে সামান্য তেল মাখিয়ে উপরে অল্প ময়দা ছিটিয়ে বা বাটার পেপার দিয়ে তৈরি রাখুন।
একটি পাত্রে ময়দা, বেকিং পাউডার, বেকিং সোডা এবং নুন একসাথে চেলে নিন। এরপর এতে আমন্ড ফ্লাওয়ার মিশিয়ে দিন।
অন্য একটি পাত্রে কনডেন্সড মিল্ক, টক দই, তেল/মাখন, লেবুর খোসা কোরানো এবং ভ্যানিলা এসেন্স দিয়ে খুব ভালো করে মিশিয়ে নিন, যাতে কিছু দলা পাকিয়ে না থাকে।
এবার শুকনো মিশ্রণটি অল্প অল্প করে তরল মিশ্রণের সঙ্গে মেশাতে থাকুন। যদি মিশ্রণটি খুব ঘন মনে হয়, তবে ধীরে ধীরে দুধ মেশান যতক্ষণ না একটি মসৃণ ব্যাটার তৈরি হয়। খেয়াল রাখবেন যেন খুব বেশি ফেটানো না হয়।
কেক বানানোর পাত্রে ব্যাটারটি ঢেলে দিন। উপরে কাঠবাদাম কুচি ছড়িয়ে ১৮০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট বেক করুন।
সময় হয়ে এলে একটি টুথপিক কেকের মাঝখানে ঢুকিয়ে দেখুন। যদি সেটি পরিষ্কার বেরিয়ে আসে তবে বুঝবেন কেক তৈরি।
অভেন ছাড়া বানাতে চাইলে তারও উপায় আছে। প্রেসার কুকার বা বড় কড়াইয়ে নুন বিছিয়ে স্ট্যান্ডের ওপর কেকের টিন রেখে মাঝারি আঁচে ৩৫-৪০ মিনিট ঢাকা দিয়ে রান্না করেও এই কেকটি তৈরি করতে পারবেন।
আরও পড়ুন:
দোলে পিঠে
বাংলাদেশের পাবনায় নতুন চাল ওঠার পরে তার গুঁড়ো দিয়ে এই পিঠে তৈরি হয়। তা দিয়ে পুজোও করা হয়। তবে পাবনায় এই পিঠে তৈরি হয় আতপ চালের গুঁড়ো দিয়ে। আপনি চাইলে আতপ চাল ব্যবহার করতে পারেন। তবে সেদ্ধ চালের গুঁড়োয় এই পিঠে বেশি নরম হয়।
উপকরণ:
৫০০ মিলিলিটার ফুল ফ্যাট দুধ
আধ কাপ সেদ্ধ চালের গুঁড়ো
১০০ গ্রাম খেজুর গুড়ের পাটালি
এক চিমটে নুন
ঘরের তাপমাত্রায় থাকা জল
প্রণালী: কড়াইয়ে দুধ ফুটিয়ে নিয়ে তার পর আঁচ কমিয়ে আরও মিনিট দশেক মতো ঘন হতে দিন।
দুধ খুব বেশি ঘন হবে না। কারণ সেক্ষেত্রে পিঠে সেদ্ধ হতে অসুবিধা হবে। তা ছাড়া পিঠে দেওয়ার পরে ঠাণ্ডা হলে দুধ এমনিতেই ঘন হয়ে আসবে।
একটি থালায় চালের গুঁড়ো ঢেলে নিন। তার উপর অল্প অল্প জলের ছিটে দিতে থাকুন এবং হালকা হাতে নাড়তে থাকুন। এটি আটা মাখার মতো মাখা হবে না। বরং এমন ভাবে অল্প জল দিয়ে নাড়াচাড়া করতে হবে, যাতে ছোট ছোট দলা পাকিয়ে যায়। এগুলিই দলা পিঠে।
পুরো চালের গুঁড়োটাই এমন ছোট ছোট দলার মতো পাকিয়ে গেলে সেটিকে কিছু ক্ষণ খোলা হাওয়ায় রেখে দিন।
এ বার অল্প ঘন হয়ে আসা দুধে গুড় এবং সামান্য নুন দিয়ে ভাল ভাবে মিশিয়ে নিন। কিছু ক্ষণ নাড়াচাড়া করে তার মধ্যে দিয়ে দিন দোলে পিঠেগুলো। বেশি আঁচে এক মিনিট ফুটিয়ে নিয়ে কম আঁচেও এক মিনিট ফোটান। তার পরে আঁচ বন্ধ করুন।
এই পিঠে সামান্য ঠাণ্ডা করে নিয়ে তার পরে পরিবেশন করুন। তাতে দুধ ঘন হয়ে পিঠের গায়ে লেগে থাকবে। ভাল লাগবে খেতে।