জামাই এখন ঘরের ছেলে। মেয়ের মতোই আপন। দেবাশিষ দেব
সে এক সময় ছিল যখন বছরে বার দুয়েক শ্বশুরবাড়ি যেতেন জামাই। তারই মধ্যে একটি দিন ছিল জামাইষষ্ঠী। দিনটি জামাই এবং শাশুড়ি, দু’জনের জন্যই অতিগুরুত্বপূর্ণ। আম আর মিষ্টির প্যাকেট ঝুলিয়ে প্রবেশ ঘটত জামাইমাবাজির। কান এঁটো করা হাসি নিয়ে ষষ্ঠীর পাখার বাতাস দিতেন শাশুড়িমা। সারা বছর যেন ভাল কাটে মেয়েটির। অন্যের বাড়িতে যেন দুঃখ না পায় সে। মনে মনে কত কী না ভাবতেন তখন মা!
সে যুগ গিয়েছে। এখন শাশুড়ি-জামাইয়ের মধ্যে আপনি-আজ্ঞের সম্পর্ক কমই দেখা যায়। পোশাকি গাম্ভীর্য নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে প্রবেশ করার রীতিও সেকেলে। জামাই এখন ঘরের ছেলে। মেয়ের মতোই আপন। দু’তরফেই তা প্রমাণ করার চেষ্টায় ত্রুটি থাকে না। একসঙ্গে বেড়াতে যাওয়া, রেস্তরাঁয় খাওয়া, রাত জেগে আড্ডা— সবটাই বন্ধুর মতো। তবু এ সম্পর্ক আর পাঁচটি বন্ধুত্বের সঙ্গে তুলনীয় নয়। তাই শাশুড়ি-জামাই উভয়কেই চলতে হয় কিছু নিয়ম মেনে। সম্পর্কে যাতে আঁচড় না পড়ে, তার জন্য কয়েকটি কথা মনে রাখাই শ্রেয়। যেমন—
১) মা-মামণি-মাম্মি-মাম্মা মুখে জামাই যা-ই ডাকুন, স্ত্রীর মা শাশুড়িই। ফলে নিজেকে মা ভেবে বসে বেশি উপদেশ দেওয়ার মানে হয় না। তাতে ভালর চেয়ে মন্দ হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।
২) জামাইয়েরও সে কথা খেয়াল রাখা ভাল। মেয়ের নিন্দা মায়ের কাছে গিয়ে করে ফাঁদে পা দেওয়ার চেয়ে বিপজ্জনক আর কিচ্ছু নেই। মা ও মেয়ে, দু’জনেরই মুখ ভার হবে। পছন্দ-অপন্দের আলোচনা স্ত্রীর সঙ্গে করাই সুবিধাজনক।
৩) মেয়ে যদি অপছন্দের কাজ করে, জামাইয়ের কাছে নালিশ নয়। জানা তো নেই, সেই কাজে জামাইয়ের মত আছে কি না আছে। মেয়ের সঙ্গেই কথা বলুন মা। দম্পতির সম্পর্ক ঠিক থাকলে শাশুড়ির মত জামাইয়ের কাছে দিব্যি পৌঁছবে।
তবে বেশি ভাবনার প্রয়োজন নেই। আজকের দিনে আম-লিচুতেই মন দিন জামাই-শাশুড়িরা। জাম-কাঁঠালে আপত্তি থাকলে, ঠিক বাদ পড়ে যাবে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy