Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
ear

শব্দবাজির দাপটে হারাতে পারেন শ্রবণশক্তি, এই ঘরোয়া উপায়ে রুখে দিন

শব্দদৈত্যের তাণ্ডব কালীপুজো ও দিওয়ালি এই দু’দিন ধরেই বিরক্ত করতে পারে আপনাকে। বাঁচুন এই উপায়ে।

শব্দবাজি থেকে কান বাঁচান ঘরোয়া উপায়ে। ছবি: শাটারস্টক।

শব্দবাজি থেকে কান বাঁচান ঘরোয়া উপায়ে। ছবি: শাটারস্টক।

সুজাতা মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৯ ১৫:৩১
Share: Save:

কালীপুজোর রাতে শব্দবাজি ফাটানো নিয়ে নানা বিধিনিষেধ থাকলেও সে নিয়মে থোড়াই কেয়ার করেন নিয়মভঙ্গকারীরা। এদের কেউ কেউ শাস্তির মুখে পড়লেও প্রতি বছরই এই ধরনের নিয়ম ভাঙার দল শব্দবাজি কেনাবেচায় চোরাগোপ্তা পথ বেছে নেয়। ফলে শব্দদৈত্যের তাণ্ডব কালীপুজো ও দিওয়ালি এই দু’দিন ধরেই বিরক্ত করতে পারে আপনাকে।

এমনিতেই সাধারণ কথাবার্তার আওয়াজ যেখানে ঘোরাফেরা করে ৬০ ডেসিবেলের মধ্যে, শহরে বাস করলে বেশির ভাগ সময় থাকতে হয় ৮৫–৯০ ডেসিবেলের আওতায়৷ কারণ গাড়ি–ঘোড়ার হর্নের আওয়াজের তীব্রতার মাপটা অনেকটা ওই রকমই৷ এ রকম পরিস্থিতিতে কানের গোড়ায় শব্দবাজির ১৪০–১৫০ ডেসিবেলের একটি আওয়াজই আপনাকে ঠেলে দিতে পারে বধিরতার দিকে৷ বিশেষ করে আপনি যদি বধিরপ্রবণ হন৷ অর্থাৎ বয়স বেশি ও এমনিতেই কানে একটু কম শোনেন, কানের ক্ষতি করতে পারে এমন ওষুধ খান, দিনের মধ্যে অনেকটা সময় চড়া আওয়াজের মধ্যে কাটাতে হয়— তা হলে এই আওয়াজ সর্বনাশ করতে পারে।

সময়ের আগে জন্মানো, ডিসলেক্সিয়া আছে বা হাইপার অ্যাকটিভ বাচ্চাদের বধির হওয়ার আশঙ্কা বেশি৷ জন্মের সময় ওজন খুব কম থাকলেও সমস্যা বেশি হয়৷ গর্ভস্থ সন্তান, নবজাতক ও শিশুদের সমস্যা হতে পারে যখন তখন৷ তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা খুবই দরকার৷

আরও পড়ুন: শব্দবাজি ডেকে আনে এই সব অসুখ, কী ভাবে আটকাবেন?

নিজে শব্দবাজি ফাটানোর দলে পড়বেন না।

কিন্তু কী ভাবে সতর্ক থাকবেন?

কোনও ভাবেই নিজে শব্দবাজি ফাটাবেন না, এই প্রতিজ্ঞা সকলে করলে তবেই এই বাজির ব্যবহার কমবে। বাড়িতে বাচ্চা, বয়স্ক মানুষ ও গর্ভবতী মহিলা থাকলে বাইরের আওয়াজ ঠেকাতে ঘরের দরজা–জানালা বন্ধ করে রাখুন৷ বধিরপ্রবণ হলে নারকেল তেলে তুলো ভিজিয়ে নিংড়ে তা দিয়ে বল বানিয়ে কান টাইট করে বন্ধ করে দিন৷ তুলো বেশি ছোট নিলে কানে ঢুকে যেতে পারে৷ শুধু তুলো দিলে কান এয়ার টাইট হয় না, সে জন্য তেলের প্রয়োজন৷ কাজেই তেল বেশি দেওয়ার দরকার নেই৷ বয়স্করা বাজি ফাটাতে চাইলে আগে অডিওগ্রাম নামের পরীক্ষা করে দেখুন শ্রবণশক্তি কেমন আছে৷ ভাল থাকলে কানে তুলোর বল লাগিয়ে ফাটাতে পারেন৷ গর্ভবতী মায়েরা বেশি আওয়াজের মধ্যে থাকলে সন্তানের শ্রবণশক্তি কমে, কমতে পারে গুছিয়ে কথা বলার ক্ষমতা, চিন্তা–ভাবনার পারম্পর্য, বুদ্ধিবৃত্তি ও শেখার দক্ষতা৷

আরও পড়ুন: প্রতি বছরের চিরচেনা জিনিস ছেড়ে এ বার এমনই কিছু অভিনব উপহার দিন ভাইফোঁটায়

তুলো দিয়েই দমন করুন শব্দাসুর।

অঘটন ঘটে গেলে

অধিকাংশ ক্ষেত্রে কানে তালা ধরে৷ অর্থাৎ ঝিঁ ঝিঁ আওয়াজ হয়, একটু কম শোনেন, কান বন্ধ লাগে৷ এ রকম হলে, আওয়াজের জায়গা থেকে সরে যান৷ সমস্যা না কমা পর্যন্ত ৭০ ডেসিবেলের বেশি আওয়াজ যেন কানে না ঢোকে৷ দরকার হলে কানে তুলো গুজুন৷ ১৭–১৮ ঘণ্ঢার মধ্যে সাধারণত কানে তালা ধরাভাব বা ঝিঁ ঝিঁ আওয়াজ ঠিক হয়ে যায়৷ সামান্য কয়েক ক্ষেত্রে দু’-তিন দিন সময় লাগতে পারে৷ দু’-তিন দিনে সমস্যা না কমলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো অডিওগ্রাম করতে হতে পারে৷ সাধারণত সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে সমস্যা না কমলে বধিরতার কথা ভাবা হয়৷ কিন্তু পরীক্ষা–নিরীক্ষা শুরু করা হয় দু’–তিন দিন পরেই৷ সামান্য দু’–এক ক্ষেত্রে শ্রবণশক্তি খুব কমে যায় বা পুরোপুরি চলে যায়৷ তৎক্ষণাৎ বিশেষজ্ঞের পরামর্শমতো পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে চিকিৎসা শুরু না করলে বিপদ অনিবার্য৷ নার্ভ নষ্ট হয়ে এই সমস্যা হয় বলে বাড়াবাড়ি পরিস্থিতিতে হিয়ারিং এড ছাড়া রাস্তা থাকে না৷ সাবধান হয়ে চলতে হয় যাতে ক্ষতি আর না বাড়ে৷ সামান্য কিছু ক্ষেত্রে এর সঙ্গে কানের পর্দায় ফুটো হয়৷ কখনও নড়বড়ে হয়ে যায় ভিতরের হাড়৷ ছোট ফুটো নিজে থেকে ঠিক হয়ে যায়৷ বড় ফুটো হলে ও হাড়ে সমস্যা হলে অপারেশন করতে হয়৷ তবে তাতে শ্রবণশক্তির খুব একটা উন্নতি হয় না৷

তাই এ সব শঙ্কা কমাতে তুলোকেও রাখুন দীপাবলির প্রস্তুতির তালিকায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE