Advertisement
E-Paper

বাজির ধোঁয়ায় লুকিয়ে ফুসফুসের বিপদ, কী ভাবে বাঁচবেন

তুবড়ি, চড়কি বা রংমশালের ধোঁয়া থেকে হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট তো বটেই ফুসফুসের গুরুতর সমস্যাও হতে পারে, জানালেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ দীপঙ্কর সরকার। শুনলেন সুমা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাজি পোড়ানোর সময় কিছু নিয়ম মেনে চললে আচমকা বিপদে পড়তে হবে না। কী কী নিয়ন জানেন?

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৯ ১২:৪২
বাজির ধোঁয়া ফুসফুসের সমস্যার অন্যতম কারণ।

বাজির ধোঁয়া ফুসফুসের সমস্যার অন্যতম কারণ।

আসন্ন দীপাবলিতে আলোয় আলোয় সেজে উঠেছে শহর, নগর, মফস্‌সল। তবে কালীপুজোয় শুধু আলো নয়, আমাদের সঙ্গী আগুনও। আগুন থেকে দূরত্ব রাখার চেষ্টা করি ঠিকই কিন্তু বাজির ধোঁয়ার ফুসফুসের বিপদের সম্ভাবনার কথা মনে থাকে না। চোখ জ্বালা থেকে শুরু করে শ্বাসনালীর প্রদাহ, অ্যাজমার অ্যাটাক, এমনকি, ভয়ানক শ্বাসকষ্ট হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে।

মনের আনন্দে আমরা যে সব আলোর বাজি জ্বলিয়ে তার শোভা দেখে মুগ্ধ হই তার মধ্যে এমন সব রাসায়ানিক উপাদান ঠাসা আছে শুনলে আঁতকে উঠতে হবে। তবে শুধু আমাদের দেশে কালীপুজোতে নয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাজি পুড়িয়ে নানা অনুষ্ঠান পালন করা হয়। সব দেশেই বাজির উপাদান মোটামুটি একই রকমের।

‘ইউরোপিয়ান রেসপিরেটরি সোসাইটি’-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফুসফুস ও শ্বাসনালী সমীক্ষা সংস্থার সমীক্ষায় জানা গিয়েছে যে আলোর বাজিই হোক বা শব্দবাজি, কার্বন আর সালফার তাতে লাগবেই। এ ছাড়াও আর যে সব রাসায়ানিক ব্যবহার করা হয় সেগুলিও আমাদের শরীরের জন্যে অত্যন্ত ক্ষতিকর। যেমন আর্সেনিক, ম্যাঙ্গানিজ, সোডিয়াম অক্সালেট, আয়রন ডাস্ট, অ্যালুমিনিয়াম, সোডিয়াম অক্সালেট, বেরিয়াম নাইট্রেট, পটাসিয়াম পারকোলেট-সহ আরও অনেক কিছু।

আরও পড়ুন: ত্বক সহজেই শুষ্ক হয়ে পড়ে? এ সব ঘরোয়া উপায়ে আর্দ্রতা থাকবে অটুট

ফুলঝুরি, রংঙমশাল জাতীয় আলোর বাজি প্যাঁকাঠির আগায় লাগিয়ে জ্বালান

রংবেরঙের আগুনের ফুলকি আর ধোঁয়া থেকে যে সব জিনিস বাতাসে মিশে যায় তাই আমরা বুক ভরে টেনে নিচ্ছি। সাধারণ মানুষের অল্প স্বল্প সমস্যা হোক বা না হোক যাদের শ্বাসযন্ত্র কিছুটা দুর্বল, শিশু, বয়স্ক তাঁদের নানা অসুবিধের মুখোমুখি হতে হয়। সালফার ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, কার্বন ডাইঅক্সাইড, পার্টিকুলেট ম্যাটার বা বাতাসে ভাসমান কণা, অ্যালুমিনিয়াম ক্যাডমিয়াম-সহ ভারী ধাতু আমাদের সমগ্র শরীরের জন্যে তো বটেই, শ্বাসনালীর জন্যও যথেষ্ট মারাত্মক। বাতাসের সঙ্গে এগুলি শ্বাসনালীতে পৌঁছে যায়। লাগাতার এই ধরনের পলিউট্যান্ট শ্বাসনালীতে গেলে হাঁপানি, সিওপিডি-সহ ফুসফুসের নানা অসুখের সঙ্গে ক্যানসার পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে। তবে বাজি পোড়ানোর সময় কিছু নিয়ম মেনে চললে আচমকা বিপদে পড়তে হবে না।

আরও পড়ুন: গলায় আটকে মাছের কাঁটা? এই সব ঘরোয়া উপায়েই মুক্তি মিলবে সহজে

যাঁদের হাঁপানি বা সিওপিডি আছে কিংবা অ্যালার্জিক রাইনাইটিস (লাগাতার হাঁচি) হয়, তাঁরা বাজির ধোঁয়া এড়িয়ে চলুন। প্যাঁকাঠির আগায় ফুলঝুরি, রংঙমশাল-সহ অন্যান্য আলোর বাজি জ্বালান। সাপবাজির ধোঁয়া ভয়ানক মারাত্মক। এই বাজি কিনবেন না।

বাজির বিষাক্ত ধোঁয়া থেকে বাঁচতে নাক-মুখ সুতির কাপড় দিয়ে বেঁধে নিন

নাক-মুখ সুতির কাপড় দিয়ে বেঁধে নিলে ভাল হয়। অল্প ভিজে কাপড় দিয়ে নাক বেঁধে নিলে দূষণের হাত এড়ানো যায়। তুবড়ি-চড়কির ধোঁয়া থেকে সাবধানে থাকুন। মুখ নিচু করে দেখতে যাবেন না। যাদের অ্যালার্জি বা সর্দি-হাঁচির প্রবণতা আছে তাঁরা অবশ্যই বাজি জ্বালানোর আগে অ্যান্টিঅ্যালার্জিক খাবেন। হাঁপানি ও সিওপিডির সমস্যা থাকলে বাজি না জ্বালানোই ভাল, তবে এমন দিনে বাজি না পোড়ালে মন খারাপ হতে পারে। তাই প্রতিরোধমূলক যে ইনহেলার ব্যবহার করেন তা নিয়ে তবেই বাজি জ্বালাতে যান। ছাদে বা খোলা আকাশের নীচে বাজি পোড়াতে হবে। বদ্ধ ঘরে কিংবা বারান্দায় বাজি জ্বালাবেন না। আচমকা শ্বাসকষ্ট হলে ইনহেলার ব্যবহার করুন। তাও পরিস্থিতি ভাল না বুঝলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে ফোন করুন। দরকার বুঝলে নেবুলাইজ করার ব্যবস্থা করতে হবে। বাড়িতে বয়স্ক ও শিশু থাকলে বাজির ধোঁয়া আটকাতে দরজা জানলা বন্ধ রাখাই ভাল। পাখা চালিয়ে রাখতে পারেন, সম্ভব হলে শীতাতপ যন্ত্র চালিয়ে রাখা দরকার। মোমবাতি অথবা প্রদীপের থেকে টুনি বাল্‌ব লাগান, কিছুটা হলেও ধোঁয়ার হাত থেকে রেহাই পাবেন। চেষ্টা করুন শব্দ বা আলোর বাজির পরিবর্তে পরিবেশ বান্ধব আলোর সাহায্যে উৎসব পালন করতে। ধোঁয়া মুক্ত থাকুন, সুস্থ থাকুন, শুভ দীপাবলী।

Firecrackers বাজি Diwali Diwali 2019 Life Hacks
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy