Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তার আসেন দু’দিন

নামেই পুরসভা পরিচালিত স্বাস্থ্যকেন্দ্র। চিকিৎসা করাতে গিয়ে সেখানে হিমশিম খেতে হয় বলে অভিযোগ শহরবাসীর। চিকিৎসক না মেলা, পানীয় জলের অভাব-সহ নানা সমস্যায় ভুগছে দুর্গাপুরের কুড়ুরিয়াডাঙা উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। দুর্গাপুর পুরসভার এক প্রান্তে রয়েছে এই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সপ্তাহে দু’দিনের বেশি চিকিৎসক আসেন না।

কুড়ুরিয়াডাঙা উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। —নিজস্ব চিত্র।

কুড়ুরিয়াডাঙা উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৫ ০২:৩৪
Share: Save:

নামেই পুরসভা পরিচালিত স্বাস্থ্যকেন্দ্র। চিকিৎসা করাতে গিয়ে সেখানে হিমশিম খেতে হয় বলে অভিযোগ শহরবাসীর। চিকিৎসক না মেলা, পানীয় জলের অভাব-সহ নানা সমস্যায় ভুগছে দুর্গাপুরের কুড়ুরিয়াডাঙা উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র।

দুর্গাপুর পুরসভার এক প্রান্তে রয়েছে এই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সপ্তাহে দু’দিনের বেশি চিকিৎসক আসেন না। বাকি দিনগুলিতে স্বাস্থ্যকর্মীরাই ভরসা। তাই পরিকাঠামো থাকলেও শুধুমাত্র চিকিৎসকের অভাবে স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন। আরও অভিযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পানীয় জলের সঙ্কট রয়েছে। চিকিৎসা করাতে এসে বিপাকে পড়তে হয় রোগী ও তাঁর পরিবারের লোকজনকে। তাঁরা জানান, পানীয় জলের পাইপলাইন, কল আছে। কিন্তু জল সরবরাহ অপর্যাপ্ত। তাই বাধ্য হয়ে রোগীদের সঙ্গে করে জলের বোতল আনতে হয়। এক দশকেরও পুরনো পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চলছে এ ভাবেই।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সোমবার ও শনিবার চিকিৎসক আসেন। সোমবারের থেকে শনিবারই ভিড় বেশি হয়। কারণ, এখানকার অধিকাংশ বাসিন্দা অন্যের বাড়িতে কাজ করে রোজগার করেন। শনিবার তাঁরা অনেকেই ছুটি পান। বাকি দিনগুলিতে সামান্য অসুখের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর্মীরা সাধারণ ওষুধ দেন। তবে রোগ সামান্য জটিল মনে হলেই তাঁরা মহকুমা হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। বাসিন্দারা জানান, এই এলাকা থেকে দুর্গাপুর হাসপাতালে যাওয়ার সরাসরি কোনও পরিবহণ ব্যবস্থা নেই। ভাড়া গাড়ি করে যেতে হয়। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেরই রোজগার বেশ কম। তাঁদের পক্ষে গাড়ির ভাড়া জোগাড় করা বেশ সমস্যার। সে জন্য সপ্তাহের সব দিন এক জন করে চিকিৎসক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এলে সমস্যা মিটবে বলে জানান তাঁরা।

ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মী টুম্পা রায় জানান, এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই আর্থিক ভাবে অনগ্রসর। তাঁদের পক্ষে বাইরে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানো সম্ভব নয়। এ দিকে, সরকারি হাসপাতালও এলাকা থেকে বেশ দূরে। তিনি বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বর্তমান পরিকাঠামোতেই ভাল পরিষেবা দেওয়া সম্ভব। শুধু ডাক্তার থাকলেই হবে।’’ তিনি জানান, চিকিৎসক না থাকলে তাঁরাই সাধারণ ওষুধপত্র দিয়ে থাকেন। টুম্পাদেবী বলেন, ‘‘পরিস্থিতি সামান্য জটিল বুঝলেই আমরা রোগীদের অন্যত্র নিয়ে যেতে বলি।’’ স্থানীয় বাসিন্দা বামদেব সাউ বলেন, ‘‘বহু জায়গাতেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই। আমাদের এলাকায় রয়েছে। কিন্তু সেখানেও পরিষেবা যথাযথ মেলে না।’’

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের পরিচালিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে সর্বক্ষণের চিকিৎসক রাখার মতো পরিস্থিতি এখন নেই। তাই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে চিকিৎসকেরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে যান। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE