Advertisement
E-Paper

টানা কাজ করে দ্রুত বাড়ি ফিরবেন না কি মাঝেমধ্যে বিরতি নেওয়া জরুরি? কোনটি বেশি ভাল?

অফিস গেলেই মনে হয় কত ক্ষণে কাজ শেষ করে ফিরবেন? কাজের ফাঁকে আড্ডা, গল্প, চা খেতে যাওয়া কতটা জরুরি?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২৫ ১৫:৫৯
টানা কাজ করে তাড়াতাড়ি বেরোনো না কি বিরতি নিয়ে কাজ, কোনটি ভাল?

টানা কাজ করে তাড়াতাড়ি বেরোনো না কি বিরতি নিয়ে কাজ, কোনটি ভাল? ছবি: শাটারস্টক।

বহু মানুষ আছেন, কর্মক্ষেত্রেই যাঁদের দিনের বেশির ভাগ সময় কাটে। দশটা-পাঁচটার চাকরি নয়, বরং বেসরকারি কর্মক্ষেত্রে অনেকেরই অফিস যাওয়ার সময় নির্দিষ্ট হলেও, ফেরার সময়ের ঠিকঠিকানা থাকে না। কী ভাবে কাজ সামলাবেন, লক্ষ্যপূরণ করবেন, তা নিয়েই ভাবনা চলে। সে কারণেই কর্মপন্থা নিয়ে নানা রকম সমীক্ষা, গবেষণাও শুরু হয়েছে।

কেউ মনে করেন, কাজের চাপ সামলানোর ভাল পন্থা হল টানা কাজ করে যত দ্রুত সম্ভব শেষ করে বাড়ি ফেরা। কেউ আবার একটানা কাজ করার বদলে মাঝেমধ্যে একটু ঘুরে আসা, চা-কফি খেতে যাওয়া, গল্প-গুজবে বিশ্বাসী। কিন্তু এই দুই পন্থার মধ্যে কোনটি ভাল?

টানা কাজ যেমন একঘেয়ে, বিরক্তিকর, তেমনই তা উৎপাদনশীলতা কমিয়ে দিতে পারে। মস্তিষ্ক-শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়লে, কাজে ভুলভ্রান্তিও অস্বাভাবিক নয়। বরং কাজের ফাঁকে ছোট ছোট বিরতি কার্যকর কি না, তা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে একাধিক গবেষণা হয়েছে, এবং হচ্ছেও।

মুম্বইয়ের মনোরোগ চিকিৎসক অজিত ডান্ডেকর এক সাক্ষাৎকারে জানাচ্ছেন, বেশি ক্ষণ নয়, ৩০ সেকেন্ড থেকে ৫ মিনিটের বিরতি ক্ষেত্রবিশেষে কার্যকর হয়। কাজের গতিশীলতা বা প্রবাহ নষ্ট না করেই স্বল্প সময়ের বিরতিতে শরীর-মন ক্ষণিকের বিশ্রাম পায়। এতে কাজ করা সহজ হয়ে ওঠে।

‘ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিন’-এ প্রকাশিত ২০২২ সালের একটি গবেষণাপত্র জানাচ্ছে, ক্ষেত্রবিশেষে ছোট ছোট বিরতি কর্মক্ষেত্রে ইতিবাচক হয়ে ওঠে। তবে কোন ধরনের কাজ, বিরতিতে কে, কী করছেন সেই বিষয়টিও জরুরি।

গবেষণার ফলাফলে পৌঁছতে ২২ জনের উপর একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। তাতেই দেখা গিয়েছে, বিরতি নিয়ে কাজ করার ফলে একেবারে শেষ ধাপ পর্যন্ত কাজের ইচ্ছা রয়েছে। বিরতির ফলে, কাজের মানও ভাল হয়েছে। সাধারণত, দৈনন্দিন কাজের জন্য মস্তিষ্কের সমস্ত কর্মক্ষমতা প্রয়োগের দরকার হয় না। একই কাজ নিয়মিত করার ফলে সেই কাজে স্বাভাবিক দক্ষতা চলে আসে। কিন্তু ক্লান্ত মস্তিষ্কে সেই কাজ করলে বা অন্যমনস্ক ভা্বে কাজটি করলেও ভুল হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে ছোট্ট বিরতি সমস্যার সমাধান করতে পারে। গবেষণালব্ধ ফলে উঠে এসেছে, কাজের ফাঁকে বিরতি ভুল হওয়ার ঝুঁকি কমায়। তবে, যে সব কাজে মস্তিষ্কের পরিশ্রম অত্যন্ত বেশি, সেখানে অতি স্বল্প বিরতি তেমন কার্যকর হয়ে ওঠে না সব সময়ে।

তবে একই সঙ্গে এমন তত্ত্বও উঠে এসেছে, বিরতি নিয়ে অন্য কোনও কাজ নয়, বরং হালকা শরীরচর্চা, হাঁটাহাটিতে মেজাজ ভাল হয়, কাজের ক্লান্তি কমে। অনেকে বিরতি নিয়ে নির্দিষ্ট কাজ না করলেও, কাজের মেল দেখেন বা সহকর্মীকে কাজের ব্যাপারেই সাহায্য করেন বা তা নিয়ে কথা বলেন। এতে কিন্তু কাজ থেকে বেরোনো যায় না। বরং ছোট্ট বিরতিতে সহকর্মীদের সঙ্গে একটু আড্ডা, গল্প, চা খাওয়ার বিরতি, খোলা হাওয়ায় হেঁটে আসা অনেক বেশি কার্যকর হতে পারে।

বিরতির শর্ত

কাজ বাদ দিয়ে এমন কিছু করা, যাতে মন ভাল হয়।

স্ট্রেচিং বা হালকা ব্যায়াম যা অফিস চত্বরে করা সম্ভব, এমন কিছু করা।

ভাল উপায় হতে পারে হাঁটাহাটি।

সহকর্মীদের সঙ্গে আড্ডা, গল্প, টিফিন ভাগ করে খাওয়া যা আনন্দ দেয়— সেটাই করতে পারেন।

সাময়িক বিরতির কী কী উপকারিতা রয়েছে?

· মানসিক ক্লান্তি কাটিয়ে উঠতে সহায়ক। কাজে একঘেয়েমি কাটানো যায়। ভুল হওয়ার ঝুঁকি কমে।

· সাময়িক বিরতির পর কাজে ফিরলে মনেঃসংযোগে সুবিধা হয়।

· চেয়ারে বসেও গভীর ভাবে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করলেও ক্লান্তি কাটে।

· দীর্ঘ ক্ষণ একটানা বসে কাজের ফলে মাথা ব্যথা, কোমরে যন্ত্রণার মতো নানা উপসর্গ দেখা দেয়। শরীর সুস্থ রাখতেও একটু হেঁটে নেওয়া বা খোলা হাওয়ায় ঘুরে আসা জরুরি।

· কম্পিউটার বা ল্যাপটপে দীর্ঘ ক্ষণ কাজ করতে হলে, কাজে আসতে পারে ২০-২০-২০ নীতি। এই নিয়ম বলে, ২০ মিনিট অন্তর ২০ সেকেন্ড স্ক্রিন থেকে অন্য দিকে ২০ ফুট দূরে তাকাতে হবে।

Micro Breaks
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy