Advertisement
E-Paper

শহরে শিশুদের মধ্যে বাড়ছে ডায়াবিটিস

মেয়ের বয়স তখন ৯ বছর। জ্বরের সঙ্গে শুরু হয় পেটে ব্যথা, বমি ভাব এবং শ্বাসকষ্ট। সেটা ২০১৪ সাল। রক্ত পরীক্ষা করা হয়, কিন্তু কিছু পাওয়া যায়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৩০
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মেয়ের বয়স তখন ৯ বছর। জ্বরের সঙ্গে শুরু হয় পেটে ব্যথা, বমি ভাব এবং শ্বাসকষ্ট। সেটা ২০১৪ সাল। রক্ত পরীক্ষা করা হয়, কিন্তু কিছু পাওয়া যায়নি।

দু’মাস এ ভাবে চলার পরে এক দিন ভয়ঙ্কর শ্বাসকষ্ট নিয়ে সেই মেয়েকে নার্সিংহোমে ভর্তি করেন বেহালার সরোজ গুপ্ত। তখন নেহার রক্তচাপ বেড়ে ১৮০ হয়ে গিয়েছে। হৃদ্‌স্পন্দনও ১৭০-এর কাছাকাছি। গভীর রাতে পরীক্ষা করে দেখা যায়, মেয়ে ডায়াবেটিক। তার ব্লাড সুগার তখন ৪০০ ছাড়িয়েছে। পরদিন সকালে বাইপাসের ধারে একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাকে।

১৩ বছরের নেহা এখন সুস্থ। শুধু তাকে প্রতি দিন চার বার করে বাড়িতেই যন্ত্র দিয়ে ব্লাড সুগার মাপতে হয়। সারা দিনে সে যখনই খায়, তখনই ইনসুলিন নিতে হয় তাকে। নিউ আলিপুরের বাসিন্দা ১১ বছরের ঈশানা কানধনিকেও একই ভাবে দিনে বেশ কয়েক বার ইনসুলিন নিতে হয়। সেও শিশু ডায়াবিটিসের শিকার। তার দেহে এমন একটি যন্ত্র বসানো হয়েছে, যা ব্লাড সুগারের পরিমাণ বলে দেয়।

ঈশানার মা শিবানী জানিয়েছেন, এই বছরের এপ্রিলে ডায়াবিটিস ধরা পড়েছে তার। তবে নেহার মতো শরীর খারাপ হয়নি। শিবানীর কথায়, ‘‘মাস দুই আগেই তো আমরা ঋষিকেশ ঘুরে এসেছি।’’ কিন্তু বেশি জল খাওয়ার প্রবণতা, ঘন ঘন বাথরুমে যাওয়া এবং ওজন কমে যাওয়া — এই তিনটি বিষয় দেখে সচেতন হন শিবানী ও ঈশানার বাবা মণীশ। চিকিৎসককে বলে রক্তপরীক্ষা করে দেখেন সকালে খালি পেটে সুগার এসেছে ৪৬০। বাইপাসের ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ঈশানাকে। হাসপাতালে সুগার বেড়ে ৭৬০ হয়। ইনসুলিন দেওয়া শুরু করলে আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হতে শুরু করে।

রবিবার একটি অনুষ্ঠানে অ্যাপোলো হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক সুব্রত দে জানিয়েছেন, শিশু বয়সে ডায়াবিটিস রোগ নির্ণয় ইদানীং বাড়ছে। তার একটি কারণ, মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে। জল খাওয়া, বাথরুমে যাওয়ার প্রবণতা বাড়লে এবং ওজন কমতে থাকলে এখন সচেতন বাবা-মায়েরা ডায়াবিটিসের জন্য রক্ত পরীক্ষা করাচ্ছেন।

চিকিৎসকের মতে, শিশু ডায়াবিটিস বাড়ার দ্বিতীয় বড় কারণ, পরিবেশ দূষণ। সেখান থেকেই আসছে সংক্রমণ। এক ধরনের অ্যান্টিজেন শিশু দেহে থাকলে তা থেকে এই টাইপ-১ ডায়াবিটিস হয়। এই ডায়াবিটিস হওয়া থেকে বাঁচাতে পারে একমাত্র মাতৃদুগ্ধ। সুব্রতবাবুর কথায়, ‘‘জন্মের ছ’ মাস পর্যন্ত মাতৃদুগ্ধ খাওয়ানো তাই খুব জরুরি। এখন তিন মাসের মধ্যেই অন্য খাবার শুরু করে দেওয়া হয়।’’ চিকিৎসকের মতে, এক দিকে মাতৃদুগ্ধের সেই রক্ষাকবচ থাকছে না, অন্য দিকে পরিবেশ দূষণ ও সংক্রমণ আরও ক্ষতি করছে।

Health Children Diabetis
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy