Advertisement
E-Paper

দ্রুত বাড়ছে মুখের ক্যানসারের রোগী, উদ্বেগ

স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান রামগোপাল যাদব ‘ক্যানসার কেয়ার প্ল্যান অ্যান্ড মানেজমেন্ট’ নামে একটি রিপোর্ট গতকাল রাজ্যসভায় পেশ করেন।

অনমিত্র সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৩১
দেশে মোট ক্যানসারের অর্ধেকই হল মুখের ক্যানসারের রোগী।

দেশে মোট ক্যানসারের অর্ধেকই হল মুখের ক্যানসারের রোগী। প্রতীকী ছবি।

ভারতে মুখের ক্যানসার বাড়ছে হু হু করে। দেশে মোট ক্যানসারের অর্ধেকই হল মুখের ক্যানসারের রোগী। অথচ চেষ্টা করলেই যা রোখা সম্ভব। তাই গুটখা, খৈনি, পানমশলা একেবারে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দিল স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। একই সঙ্গে এয়ারপোর্ট, রেস্তরাঁ বা প্রকাশ্যে রাস্তায় সিগরেট খাওয়া বন্ধ করা ও দোকান থেকে খুচরো সিগারেট কেনার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করার জন্যও প্রস্তাব করেছে ওই কমিটি। ক্যানসার যাতে শুরুতেই ধরা পড়ে, সে জন্য প্রতিবছর দেশবাসীর ক্যানসার পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার জন্যও সুপারিশ করেছে কমিটি।

স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান রামগোপাল যাদব ‘ক্যানসার কেয়ার প্ল্যান অ্যান্ড মানেজমেন্ট’ নামে একটি রিপোর্ট গতকাল রাজ্যসভায় পেশ করেন। এতে দেশে ক্যানসারের যে চিত্র ফুটে উঠেছে, তা যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলেই মনে করছেন সংসদীয় কমিটির সদস্যরা। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে ভারতে ৮ লক্ষ মানুষের ক্যানসার হয়েছিল। ২০৩৫ সালে এই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে ৩৫ লক্ষে। যার অর্ধেকই মুখের ক্যানসারের রোগী।

রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ক্যানসারের কারণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে— অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ কথার উল্লেখ থাকছে না। বরং বেশিরভাগ সময়েই মৃত্যুর কারণ হিসাবে হৃদযন্ত্র বিকল হওয়াকে তুলে ধরে দায় এডাচ্ছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকেরা। ফলে কোন এলাকায় কত ব্যক্তি, কী ধরনের ক্যানসারে মারা যাচ্ছেন— সেই তথ্য সংগ্রহ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। কোনও নির্দিষ্ট তথ্যভাণ্ডার তৈরি করে, তা থেকে কোনও প্যার্টান বা নকশা তৈরি হয় কি না— সেই কাজও করা যাচ্ছে না। এতে জাতীয় ক্যানসার সুরক্ষা প্রকল্পের উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে।

ভারতে ক্যানসার এতটা ব্যাপক আকার নিলেও এ নিয়ে যথেষ্ট তথ্য না থাকা দুশ্চিন্তার কারণ বলেই মনে করছে কমিটি। সেই কারণে ক্যানসারকে ‘নোটিফায়েবল ডিজিজ’ হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে। যাতে ওই রোগে আক্রান্তদের মৃত্যু হলে রোগের বিষয়ে বিস্তারিত লিখতে বাধ্য থাকেন চিকিৎসকেরা। যার মাধ্যমে পরবর্তী সময়ে একটি তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলা সম্ভব হয়।

দেশে ক্যানসার রোগীদের মধ্যে মুখের ক্যানসারে আক্রান্তদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। যা রুখতে সমস্ত ধরনের তামাকজাত দ্রব্য নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছে কমিটি। সরাসরি বা ঘুরপথে বিভিন্ন পানমশালার যে বিজ্ঞাপন সংবাদমাধ্যম বা টিভি-তে দেওয়া হয় তা একেবারে বন্ধ করার সুপারিশ করা হয়েছে। তামাক শিল্পের পাল্টা তদ্বিরে তামাকের ব্যবহার যদি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা সম্ভব না হয়, সে ক্ষেত্রে তামাক ও তামাকজাত পদার্থের উপর বড় অঙ্কের কর বসানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বাড়তি রাজস্ব ক্যানসার সংক্রান্ত সচেতনতা বাড়ানোর কাজে ব্যবহারের সুপারিশ করা হয়েছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মূলত কিশোর বয়সে তামাকের প্রতি আসক্তি জন্মায়। তাই ওই বয়সের পড়ুয়াদের সচেতন করতে বিস্তারিত কর্মসূচির জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।

রিপোর্ট বলছে, উন্নত দেশগুলির তুলনায় ভারতে ক্যানসারে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি। যার একটি বড় কারণ, দেরিতে রোগ নির্ণয়। সচেতনতা না থাকা ও পরিকাঠামোর অভাবকেই এর জন্য দায়ী করা হয়েছে। সেই কারণে ত্রিশ বছরের পর থেকে ফি বছর পুরুষ ও মহিলাদের বাধ্যতামূলক ভাবে ক্যানসার পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে রিপোর্টে। দেশের প্রতিটি জেলায় ক্যানসার নির্ণয় কেন্দ্র খোলার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রথম স্টেজে ধরা পড়লে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ক্যানসার সেরে যায়। চিকিৎসার খরচও কমে।

Oral Cancer India Health
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy