Advertisement
E-Paper

গলস্টোন আছে কি, জানাবে ক্যালসিয়াম

রক্ত বা অন্য কোনও দেহরসের কোনও পরীক্ষাতেই গলস্টোনের আগাম আভাস পাওয়া যেত না বলেই দাবি করে আসছিলেন চিকিৎসকেরা। গলস্টোনকে তাই ‘নীরব হানাদার’ বলেই মনে করা এত দিন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৭ ০২:০৫

পিত্তথলিতে পাথর জমার কোনও আগাম লক্ষণ নেই বলেই এত দিন মনে করতেন চিকিৎসক গবেষকেরা। কোনও উপসর্গ না থাকায় রোগী সমস্যায় পড়লে একমাত্র পেটের আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করে তবেই ধরা যেত যে পিত্তথলিতে পাথর (গলস্টোন) জমেছে ।

রক্ত বা অন্য কোনও দেহরসের কোনও পরীক্ষাতেই গলস্টোনের আগাম আভাস পাওয়া যেত না বলেই দাবি করে আসছিলেন চিকিৎসকেরা। গলস্টোনকে তাই ‘নীরব হানাদার’ বলেই মনে করা এত দিন। চণ্ডীগড়, দিল্লি ও কলকাতার তিনটি প্রতিষ্ঠানের গবেষকদের দাবি, রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা দেখেও গলস্টোন সম্পর্কে আগাম আভাস দেওয়া যেতে পারে। অন্য বিষয়ের সঙ্গে রক্তে ক্যালসিয়াম বৃদ্ধিও গলস্টোনের অন্যতম কারণ বলেই দাবি করেছেন ওই গবেষকেরা।

ওই গবেষকদের দাবি, রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা নিয়মিত পরিমাপ করে গলস্টোন সম্পর্কে আগাম আভাস পাওয়া যেতে পারে। সম্প্রতি জার্নাল অব বোন মিনারেল মেটাবলিজিম-য়ে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা দেখেও বোঝা যেতে পারে যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ভবিষ্যতে গলস্টোন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে কি না।

চণ্ডীগড়ের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট (পিজিআই)-র সঞ্জয় কুমার ভাদাদা, কলকাতার ইনস্টিটিউট অব পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইপিজিএমইআর)-র সতীনাথ মুখোপাধ্যায় এবং দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এইমস)-র রাজেশ খাদগাওয়াত যৌথ ভাবে ১০ বছর ধরে (২০০৫ থেকে ২০১৫) ক্যালসিয়ামের সঙ্গে গলস্টোনের সম্পর্ক নিয়ে সমীক্ষা চালিয়ে গবেষণাপত্রটি তৈরি করেছেন। গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, তাঁরা যে সব মানুষের উপরে সমীক্ষা চালিয়েছেন তাঁদের ১১ শতাংশ মানুষের পিত্ত থলিতে পাথর জমার প্রবণতা রয়েছে। সমীক্ষকেরা আরও দেখেছেন ইউরোপ বা আমেরিকায় প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থির টিউমারের গড় ওজন যেখানে হয় ২.৪ গ্রাম, সেখানে ভারতে তা ৫.৬ গ্রাম।

কলকাতার আইপিজিএমইআর-য়ের সঙ্গে যুক্ত এন্ডোক্রিনোলজিস্ট সতীনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কিডনির পাথর জমার সঙ্গে ক্যালসিয়ামের মাত্রার একটা সম্পর্ক রয়েছে বলে এত দিন জানা ছিল। কিন্তু আমাদের ১০ বছরের সমীক্ষায় আমরা গলস্টোনের সঙ্গে ক্যালসিয়ামের সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছি। শরীরে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বাড়লে ভবিষ্যতে গলস্টোনের আশঙ্কা প্রবল।’’ সতীনাথবাবুদের দাবি, শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা নিয়মিত পরিমাপ করলেও পিত্তথলিতে পাথর জমছে কী না তার আগাম আঁচ পাওয়া সম্ভব।

কী ভাবে শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বাড়ে?

শারীরবিজ্ঞানীরা বলছেন, গলায় থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের পিছনে থাকা চারটি প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থি থেকে প্যারাথহরমোন নিঃসৃত হয়। ওই প্যারাথহরমোনই রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এই হরমোনের অধিক ক্ষরণের ফলে হাইপার প্যারাথাইরয়েডিজম রোগ হয়। তাতে গলায় কুলের আঁটির মতো বর্ধিত অংশ দেখা যায়।

প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শারীরবিজ্ঞানী বলেন, বিদেশে সাধারণত এই টিউমার হতেই দেন না চিকিৎসকেরা। নিয়মিত রক্তের ক্যালসিয়াম পরীক্ষা হওয়ায় ওই মৌলের তারতম্য দেখেই প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থির উপরে নজর পড়ে চিকিৎসকদের। কিন্তু আমাদের দেশে নিয়মমাফিক রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা পরীক্ষা না হওয়ায় হাইপার প্যারাথাইরয়েডিজম ঘটিত টিউমার নিয়ে ঘোরেন মানুষ।

Gallbladder stone Calcium ক্যালসিয়াম calcium test
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy