স্ট্রেচিং হল শরীরের জড়তা ভাঙার ব্যায়াম৷ অনেকক্ষণ বসে বা শুয়ে থাকার পরে শরীরে জমা হওয়া আলস্য কাটাতে আমরা যেমন আড়মোড়া ভাঙি, অনেকটা সে রকম ব্যাপার৷ নির্দিষ্ট নিয়মে শরীরের বিভিন্ন সন্ধি ও পেশি বিভিন্ন দিকে নাড়িয়ে-চাড়িয়ে নিলে শরীরের নমনীয়তা বাড়ানো যায়৷ পেশিতে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে চোট লাগার আশঙ্কা কমে৷ কোনও ব্যথা থাকলে কমে তার প্রকোপ৷ মানসিক চাপ কমাতেও স্ট্রেচিংয়ের ভূমিকা আছে বলে জানা গেছে৷ আর সব কিছু মিলে বিভিন্ন অসুখের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা বাড়ে শরীরের৷ মৌলিমাধবের মতে, “যতই কাজ থাক, সকালে ১০ মিনিট ও কাজের শেষে বিকেলে ১০ মিনিট কয়েক ধরনের স্ট্রেচিং করবেন৷ টানা বসে কাজ করতে হয় যাঁদের, তাঁরা কাজের মাঝে এক বার করে নিলে ঘাড় ব্যথা, কোমর ব্যথা ইত্যাদির হাত থেকে যেমন বাঁচবেন, কাজের চাপও সামলাতে পারবেন সহজে৷ তবে শুরু করার আগে এক বার ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে নেবেন৷ কারণ, কোনও ব্যথা-বেদনা বা সমস্যা থাকলে অতিরিক্ত স্ট্রেচিংয়ে তা বেড়ে যেতে পারে৷”
কোন স্ট্রেচিং, কী ভাবে
১. প্রথমে করুন আর্ম সার্কল৷ এক বার ঘড়ির কাঁটার দিকে ও পরে ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে কাঁধের কাছ থেকে ১০ বার করে এক-একটা হাত উপরে-নীচে ঘোরান৷
২. এর পরে শোল্ডার সার্কল৷ সোজা দাঁড়িয়ে কাঁধকে ১০ বার ঘড়ির কাঁটার দিকে ও ১০ বার ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে ঘোরান৷
৩. রোটেশনাল নেক এক্সারসাইজ করুন৷ সোজা দাঁড়িয়ে বা বসে মাথা ডান দিকে ও বাঁ দিকে ঘোরান ১০ বার৷ মাথা কাঁধের কাছে নামান, ডান দিকে ও বাঁ দিকে ১০ বার৷ এ বার মাথা পিছনে নিয়ে যান যথাসম্ভব, তার পরে ঝোঁকান সামনের দিকে৷ এও ১০ বার৷
৪. সোজা দাঁড়িয়ে সাইড বেন্ডিং, ব্যাক বেন্ডিং ও ফ্রন্ট বেন্ডিং করবেন ১০ বার৷
৫. পায়ের জন্য করতে হবে ফ্রন্ট কিক, ব্যাক কিক ও সাইড কিক৷ কিছু ধরে সোজা দাঁড়িয়ে এক এক পায়ে ১০ বার করে করুন৷
৬. এ বার শুয়ে পড়ুন৷ একটা করে পা ভাঁজ করে বুকের কাছে এনে ১০-২০ সেকেন্ড চেপে ধরে রাখুন৷ পরে ২ পা একসঙ্গে করবেন৷ ৩টে মিলে একটা সেট৷ ৩টে সেট করবেন৷
৭. চিৎ হয়ে শুয়ে ২টো হাঁটু ভাঁজ করে বাঁ হাত দিয়ে ধরে আপনার বাঁদিকের মাটিতে চেপে ধরুন আর ডান হাত ও শরীরের উপরাংশ ডান দিকে ঘুরিয়ে দিন, যতটা যেতে পারেন৷ ২০ সেকেন্ড থাকুন, তার পরে উল্টোদিকে আবার করুন৷
এ রকম আারও অনেক ব্যায়াম আছে৷ প্রথম দিকে কয়েকটা করে অভ্যাস হয়ে গেলে, পরে অন্যগুলোও একে একে করতে পারবেন৷