Advertisement
E-Paper

How to deal with Jealousy: বন্ধুর সাফল্য দেখে ঈর্ষা হয়, নিজেকে ব্যর্থ মনে হয়, কী ভাবে সামলাব? আলোচনায় অনুত্তমা

‘কী করে বলব? সঙ্গে অনুত্তমা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের এই সপ্তাহের বিষয় ‘ঈর্ষা করি!’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২২ ২০:৪০
ঈর্ষা করি! লোককে কী করে বলব?

ঈর্ষা করি! লোককে কী করে বলব?

প্রিয় বন্ধু এত ভাল চাকরি পেয়েছেন। তাঁকে শুভেচ্ছা জানানো হল। কিন্তু যতটা খুশি হওয়ার কথা, তা হওয়া গেল না! আত্মীয়ের বিবাহবার্ষিকীতে জাঁকজমক দেখে মনে হল, সব সুখ কী অন্যের? আমার সঙ্গে কি ভাল কিছুই হতে নেই! এরা প্রত্যেকেই প্রিয় মানুষ। কেউ ওঁদের অনিষ্ট চাই না! তবে অন্যের খুশিতে তেমন আনন্দ বোধ করছি না! তবে কি হিংশুটে হয়ে গেলাম? এমন চিন্তাগুলি অনেকের মনে প্রায়ই আসে।

বন্ধু, ভাই-বোন, সহকর্মী। এমনকি নিজের সঙ্গী। সে যিনিই হোন না কেন, ঈর্ষা ঢুকে পড়তেই পারে সম্পর্কের মধ্যে। এ প্রবণতা সব সময়ে হয়তো নিয়ন্ত্রণ করাও যায় না। তার চেয়েও বড় কথা বোঝাই যায় না অনেক ক্ষেত্রে, পরিস্থিতি ঠিক কখন হাতের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে। নিজের ঈর্ষার মুখোমুখি কী ভাবে দাড়ানো যায়, তা নিয়েই সোমবার আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে আলোচনায় বসলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘কী করে বলব? সঙ্গে অনুত্তমা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের এই সপ্তাহের বিষয় ছিল ‘ঈর্ষা করি!’

প্রিয়াঙ্কা নামে এক মহিলা লেখেন, ‘ইদানীং আমি কারও আনন্দেই তেমন খুশি হতে পরছি না। এর কারণও ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। আমার বয়স ৩০। আমি চাকরির পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। এই মুহূর্তে আমার জীবনে বিশেষ কোনও অপ্রাপ্তি আছে, এমনটা নয়। মায়ের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলতে গেলেই তিনি রেগে যাচ্ছেন! আমার একদম ভাল লাগছে না!’

আর একটি চিঠি এসেছে অনীশের কাছ থেকে। তিনি লিখেছেন, ‘আমি এক জন কলেজছাত্র। আমাকে অনেকেই বলে ওর মতো হওয়ার চেষ্টা কর, তার মতো হওয়ার চেষ্টা কর। ইদানীং আমার তাদের প্রতি ঈর্ষা হয়। কারণ আমার অপ্রাপ্তিকে ওদের প্রাপ্তির মানদণ্ডে বিচার করা হচ্ছে। হয়তো যখন নিজের অপ্রাপ্তি কিংবা দুর্বলতার সঙ্গে আমরা যখনই সংহতি বিধান করতে করতে যাচ্ছি, তখনই ঈর্ষা বোধ করছি। অন্যর সাফল্যও আমাকে বিব্রত করছে। হাসি মুখটার আড়ালে একটা অখুশি মুখ বহন করছি।

মণিদীপা নামের আর এক মহিলা আবার অন্য কথা লিখে পাঠিয়েছেন। তাঁর চিঠিতে লেখা আছে, ‘আমার ৩৩ বছর বয়স। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমি এম এ করেছি, বি এড করেছি। মাধ্যমিক থেকে বি এড, সবেতেই আমার ফার্স্ট ক্লাস নম্বর ছিল। ২০১৬-এ এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলাম। আজও চাকরি পাইনি। আমার ভাইবোনেরা সকলেই চাকরি করেন। আমি তাঁদের ঈর্ষা করি না। কিন্তু খোলা মনে তাঁদের সঙ্গে আর মিশতেও পারি না। খুব খারাপ লাগে। লজ্জা বোধ হয়। নিজেকে অকেজো লাগে। অক্ষম লাগে। অপ্রয়োজনীয় লাগে।’

এই সব প্রশ্নের উত্তরে অনুত্তমা বললেন, ‘‘ঈর্ষার মধ্যে সব সময়েই একটা না পাওয়ার বোধ কাজ কারে। অন্যর সাফল্য দেখে মনে হতেই পারে, এঁদের মধ্যে আমার জীবনটিই ঠিক পথে এগলো না। তবে এটা ভেবে দেখেছেন কখনও, যাকে দেখে আপনার ঈর্ষা হচ্ছে, তারও তো অনেক না পাওয়া থাকতে পারে। কোনও নির্দিষ্ট একটি ক্ষেত্রে জীবনকে সজ্ঞায়িত করা কি আদৌ যুক্তিযুক্ত? সব ভাল ওদের, সব খারাপ আমার— এই বিভাজনের মধ্যেও কিন্তু অতিরঞ্জন আছে। সামনের মানুষ যেমন আপনাকে তৃতীয় কোনও ব্যক্তির সঙ্গে তুলনা করলে ভাল লাগে না, তেমনই আমরাও নিজেরা কিন্তু অপরের সঙ্গে নিজের তুলনা করি। এ ক্ষেত্রে কিন্তু নিজেদের মনে সচেতন বাঁধ রাখতে হবে। ওর সবটা কিন্তু আপনি জানেন না, আপনার ইতিহাসও ওর জানা নেই। তাই তুলনাটা আদৌ ঠিক কি না, তা ভেবে দেখতে হবে। ঈর্ষা থেকে যদি সত্যিই মুক্তির পথ খুঁজতে হয়, তা হলে নিজের সম্পর্কেও আর একটু সচেতন হতে হবে। আমরা নিজেদের ঈর্ষার কারণেও জীবনে অনেক ভাল অভি়জ্ঞতা থেকে বঞ্চিত হয়ে জাচ্ছি না তো? অন্যের ভাল জিনিসটা দেখে ঈর্ষা বোধ করতে গিয়ে সত্যিই কোনও ভাল জিনিস হয়তো উপভোগই করা হল না! ঈর্ষার সঙ্গে বোঝাপড়ায় এলে আমরা দেখতে পাব অনেক ভাল লাগার সম্ভার উন্মোচিত হচ্ছে। সেই সম্ভারটুকু সন্ধান করলেই বোধ হয় অনেক অপ্রাপ্তি লঘু মনে হবে। সেই চেষ্টা করেই দেখুন না!’

Anuttama Banerjee jealousy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy