E-Paper

স্মৃতির সরণি ধরে শহরের বিজ্ঞান সাধনার ইতিহাসে পথচলা

পথ চলতে গিয়ে প্রায় রোজই পেরোতে হয় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। কিন্তু এই কলেজ হাসপাতাল কী ভাবে তৈরি হয়েছে, তা শুরুর ইতিহাস কী? সে সব আমরা কত জন জানি?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:১০
An image of Heritage building

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

শহরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে জানার চেষ্টায় ‘হেরিটেজ ওয়াক’ এর আগে অনেক হয়েছে। তবে এ বার শুধু ইতিহাসই নয়, শহরে ছড়িয়েছিটিয়ে থাকা বিজ্ঞানের ঐতিহ্যকেও স্মরণ করে হয়ে গেল সায়েন্স হেরিটেজ ওয়াক। বিজ্ঞানের চর্চায় যুক্ত অধ্যাপক এবং শিক্ষকদের সংগঠন, ‘সায়েন্স কমিউনিকেটরস ফোরাম’ এবং ‘নো ইওর নেবার’-এর উদ্যোগে এই সায়েন্স হেরিটেজ ওয়াক রবিবার দুপুর ২টোয় হল কলেজ স্ট্রিট চত্বরে। কলেজ স্কোয়ারের বিদ্যাসাগরের মূর্তি থেকে শুরু হয়েছিল সেই পথচলা। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে তা এসে শেষ হল প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে।

পথ চলতে গিয়ে প্রায় রোজই পেরোতে হয় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। কিন্তু এই কলেজ হাসপাতাল কী ভাবে তৈরি হয়েছে, তা শুরুর ইতিহাস কী? সে সব আমরা কত জন জানি? প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেকার ল্যাবের ঐতিহ্য এবং তাকে ঘিরে কর্মকাণ্ডের কথাই বা কত জন জানেন? কলেজ স্ট্রিটে রয়েছে বিজ্ঞানী প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের মূর্তি। কিন্তু বিজ্ঞান সাধনায় তাঁর যে অবদান, সে কথা আজকের প্রজন্ম কতটা জানে? অনেকেরই হয়তো আগ্রহ থাকে সে সব শোনার, কিন্তু সুযোগ হয়ে ওঠে না।

এই সব বিষয় সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে আয়োজন হয়েছিল এ দিনের হেরিটেজ ওয়াকের, জানালেন নো ইয়োর নেবারের আহ্বায়ক সাবির আহমেদ। সাবির বলেন, ‘‘আজকের প্রজন্মের কাছে বিজ্ঞান মানেই ইঞ্জিনিয়ারিং বা ডাক্তারি পড়া। উচ্চশিক্ষায় বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণার প্রবণতা কমছে। এটা কমছে হয়তো বিজ্ঞান চর্চা কম হওয়ার জন্যই। আমাদের এই সায়েন্স হেরিটেজ ওয়াক শহরের বিজ্ঞানের ঐতিহ্যকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য। কলেজ স্ট্রিট মানে শুধু বইপাড়া আর কফি হাউস নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাস ও ঐতিহ্য।’’

বিজ্ঞানের এই হেরিটেজ ওয়াকে অংশ নিয়েছিলেন চিকিৎসক শঙ্কর নাথ। পুরনো কলকাতা নিয়ে গবেষণাও আছে তাঁর। তিনি জানান, এ দিনের হেরিটেজ ওয়াকের তরফে কলেজ স্কোয়ারে ডেভিড হেয়ারের সমাধিতে গিয়ে বলা হয়েছে বিজ্ঞান ও শিক্ষার প্রসারে তাঁর অবদানের কথা। ২২ নম্বর সূর্য সেন স্ট্রিটের বাড়িতে একটা সময়ে থাকতেন বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসারের অন্যতম উদ্যোক্তা আলেকজ়ান্ডার ডাফ। স্কটিশ চার্চ কলেজের প্রতিষ্ঠাতাও ছিলেন ডাফ। সেই বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে মনে করা হল তাঁর কর্মকাণ্ড। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তুলে ধরা হল চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসকে। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেকার ল্যাব বহু ইতিহাসের সাক্ষী। ওই পরীক্ষাগারে কাজ করেছেন জগদীশচন্দ্র বসু। মেডিক্যাল কলেজের উল্টো দিকের গলিতে রয়েছে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি। ওই বাড়িতে গিয়ে বিজ্ঞানের প্রসারে সাহিত্যিকের অগ্রণী ভূমিকার প্রসঙ্গও উত্থাপন হয়। শঙ্কর নাথের কথায়, ‘‘এমন ইতিহাস ও ঐতিহ্য ছড়িয়ে বিজ্ঞান সচেতনতা তৈরি করতে সায়েন্স হেরিটেজ ওয়াক আরও করা হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Heritage Walk Kolkata Science Scientists

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy