বাচ্চার জন্মের পর থেকেই বাবা-মায়ের দায়িত্ব বাড়তে থাকে। সন্তান প্রতিপালনের সেই সফর ব্যক্তিভেদে জীবনের নানা আঙ্গিক এবং অভিজ্ঞতাকে হাজির করে। অন্য দিকে ছোটরা এখন অল্প সময়ের মধ্যেই নিজস্ব বৃত্ত তৈরি করে নেয়। তাদের লেখাপড়া, খাওয়াদাওয়া, শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতিনিয়ত খেয়াল রাখা অভিভাবকের কর্তব্য। কিন্ত তাতেই সব দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। প্যারেন্টিং কনসালট্যান্টদের একাংশের মতে, বর্তমান সমাজে সন্তানের সঙ্গে আলাদা করে বাবা-মায়েদের সময় কাটানোর বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখলে সন্তান ও অভিভাবকের সম্পর্ক আরও মজমুব হতে পারে।
আরও পড়ুন:
১) সমকালীন সমাজে অনেক সময়েই বাবা-মায়েরা কর্মরত। বাচ্চারা বাড়িতে পরিচারিকা বা বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছেই বড় হচ্ছে। কিন্তু শিশু যখন বুঝতে পারে যে দিনের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট সময় অভিভাবকেরা শুধু তাদের জন্য বরাদ্দ রাখেন, তখন ছোটদেরও মনোবল বৃদ্ধি পায়। অজান্তেই তারা মনের গোপন গভীর মনোভাবগুলি ব্যক্ত করতে পারে। ছোটরা বাড়তি মনোযোগ দাবি করে। অনেক সময় তাদের জন্য পাঁচ মিনিট বরাদ্দ থাকলেই অনেক জটিল সমস্যার সমাধান সহজেই হয়ে যায়।
২) বড় হয়ে ওঠার দিনগুলোয় অনেক সময়েই বাবা-মাকে মনের কথা খুলে বলতে পারে না ছোটরা। নেপথ্যে ভয়, অবসাদের মতো অনুভূতিগুলো কাজ করে। কিন্তু দিনের মধ্যে এক বার সন্তানের সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলতে পারলে তারাও মনের আগল খুলে দেয়। তার ফলে সময় থাকতে সাবধান হওয়ার সুযোগ থাকে।
৩) দিনের শেষে যদি সন্তানের মুখ থেকেই তার সারা দিনের কাজগুলো জেনে নেওয়া যায়, তা হলে সেটি তার মনে দায়িত্ববোধ তৈরি করে। ছোট বয়স থেকেই সে শিখবে যে প্রতিটি পদক্ষেপের জন্য পরিবার তার পাশে রয়েছে।
৪) সন্তান যদি বুঝতে পারে, যে তাদের কণ্ঠস্বরকে বড়রা গুরুত্ব দিচ্ছেন, তা হলে তা তার মনোবল বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি সময়ের সঙ্গে নিজস্ব মতামত এবং চিন্তাধারা তৈরি করতে সাহায্য করে।
৫) অনেক সময়েই অভিযোগ ওঠে, বর্তমান প্রজন্মের মানসিকতা ‘নিষ্ঠুর’। তারা সহজেই সম্পর্কে জড়ায় বা বিচ্ছেদের পথে হাঁটে। আবার অল্পেতেই বিরক্ত হয়। অনেক সময় সন্তানের প্রতি ভালবাসা শব্দের পরিবর্তে কাজের মাধ্যমেও প্রকাশ করা যায়। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে বা আলাদা করে ছোটদের সঙ্গে বাড়ির বাইরে সময় কাটাতে পারলে ভাল। এই ধরনের পদক্ষেপ অভিভাবকের সঙ্গে তাদের আবেগের সেতুবন্ধ তৈরি করে।