জীবনসঙ্গী পাশে থাকলেও সন্তানকে বড় করা মায়েদের কাছে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং। তবুও সঙ্গী থাকলে একটা ভরসা থাকে। সমস্যা হলে পাশে কাউকে পাওয়া যায়। একা মায়েদের সেটুকুও থাকে না। সন্তান প্রসবের পরে তার যত্ন নেওয়া থেকে শুরু করে সন্তানের অসুস্থতার সময়ে তাকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া, আর্থিক ভাবে স্বনির্ভর হয়ে সন্তানের প্রয়োজনের জোগান দেওয়া, মানসিক ভাবে তার পাশে থাকা, শিক্ষা এবং মানসিক বিকাশের দায়িত্ব যা প্রাথমিক ভাবে পরিবারের মাধ্যমেই তৈরি হয়— সেই সব কিছুই একা সামলান একা মায়েরা। পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করে, সমাজের নানা প্রতিকূলতার সঙ্গে যুঝে সন্তানকে একা মানুষ করা তাই সহজ নয়। অভিনেত্রী নীনা গুপ্ত সেই কঠিন কাজ করেছিলেন কয়েক যুগ আগে। জন্ম দিয়েছিলেন তাঁর এবং ক্রিকেটার ভিভিয়ান রিচার্ডসের সন্তান মসাবা গুপ্তকে। যিনি এখন ভারতের খ্যাতনামী পোশাকশিল্পী। তবে নীনা বলছেন, মসাবাকে জন্ম দেওয়ার আগে তাঁকে কিছু বাস্তববাদী সিদ্ধান্তও নিতে হয়েছিল, যার জন্য ভিভের মতামত জানা জরুরি ছিল তাঁর কাছে।
কন্যা মসাবা গুপ্তের সঙ্গে নীনা গুপ্ত। ছবি: সংগৃহীত।
আত্মজীবনী ‘সচ কহুঁ তো’-তে নীনা হবু মা হিসাবে তাঁর সেই সময়ের অনুভূতি এবং দোলাচল নিয়ে লিখেছেন। নীনার কথায়, ‘‘আমি অনুভব করছিলাম, আমি যে অন্তঃসত্ত্বা এবং সন্তানের জন্ম দিতে চলেছি, সেই সিদ্ধান্ত কখনও আমার একার হতে পারে না। আমার মনে হয়েছিল, এ ব্যাপারে মতামত জানানোর সমান অধিকার রয়েছে আমার হবু সন্তানের বাবা ভিভিয়ানের। আমি তাই এক দিন মনস্থির করে ওকে ফোন করলাম। ওকে জানালাম, আমি অন্তঃসত্ত্বা। আর প্রশ্ন করলাম, ‘যদি তোমার সন্তানের জন্ম দিই, তবে কি তোমার কোনও সমস্যা হবে?’’’
ভিভের কাছে সন্তান অযাচিত না হয়, চিন্তা ছিল নীনার। ছবি: সংগৃহীত।
নীনা জানিয়েছেন, ভিভিয়ান সেই খবর শুনে খুশিই হয়েছিলেন। নীনার কথায়, ‘‘ও খুশিই হয়েছে মনে হল। আমাকে বলল, ‘আমার কোনও সমস্যা নেই, তুমি যা করবে ঠিক করেছো করো’।’’ নীনা জানিয়েছেন, তাঁর কাছে একা মাতৃত্বের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভিভের কাছ থেকে ওই নিশ্চয়তার দরকার ছিল। কারণ নীনার কথায়, ‘‘আমি মন থেকেই ভিভের সন্তানের জন্ম দিতে চেয়েছিলাম। তবে আমি চাইনি ও ভিভের কাছে অযাচিত হোক। তাই ভিভ যখন আমাকে এগিয়ে যেতে বলল, আমি অনেকটা নিশ্চিন্ত হয়েছিলাম।’’