বর্ষার দিন আসা মানেই সর্দি-কাশি, জ্বর থেকে সাবধানে থাকতে বলেন বাড়ির বড়রা। ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি মানে গরম কমছে ঠিকই, তবে সংক্রমণের ভয়ও বাড়ছে। বিশেষ করে বাড়ির পোষ্যদের এই সময়টাতে অনেক বেশি সাবধানে রাখতে হয়। বর্ষার দিন মানে যে শুধু গায়ে পোকা হবে বা ত্বকে ছত্রাকের সংক্রমণ হবে, তা নয়। পোষা কুকুর কিন্তু এই সময়ে আর্থ্রাইটিসেও আক্রান্ত হতে পারে। সেই সঙ্গে দূষিত জল থেকে লেপ্টোস্পাইরোসিস নামক রোগের ঝুঁকিও বাড়ে।
ভিজে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ বাড়ে। লেপ্টোস্পাইরা নামক এক প্রকার ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণে লেপ্টোস্পাইরোসিস রোগ হয় কুকুরর। এতে ঘন ঘন বমি হতে থাকে, সেই সঙ্গে জ্বর হয়। বারে বারে জল পিপাসা পাবে, সারা ক্ষণ ঝিমোতে থাকবে পোষ্য। সেই সঙ্গেই পেটের গোলমাল হতে পারে। বৃষ্টির দিনে পোষ্যকে বাইরে নিয়ে গেলে তাই সতর্ক থাকতে হবে। রাস্তায় জমা জল থাবায় লাগলে সেখান থেকে সংক্রমণ ঘটতে পারে, আবার কোনও কারণে দূষিত জল পেটে গেলে বিষক্রিয়াও হতে পারে।
পোষ্য যেখানে থাকছে, সেই জায়গাটা যেন স্যাঁতসেঁতে না হয়, এটা খেয়াল রাখতে হবে। পশুরোগ চিকিৎসকেরাই বলেন, অতিরিক্ত স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে থাকলে কুকুরের আর্থ্রাইটিস হতে পারে। বৃষ্টির দিনে এই সমস্যা বাড়ে। শরীরের সমস্ত অস্থিসন্ধিতে ব্যথা হতে পারে কুকুরের। বিশেষ করে যদি কুকুরের ওজন বেশি হয় অথবা তার শরীরে কোনও আঘাত লেগে থাকে, তা হলে বাতের ব্যথাজনিত সমস্যা বেশি হবে। বয়স্ক পোষ্যদের ক্ষেত্রেও বর্ষার সময়ে বেশি সাবধান থাকতে হবে। তাদেরও আর্থ্রাইটিসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আরও পড়ুন:
পোষ্যের যত্ন কী ভাবে নেবেন? রইল কিছু পরামর্শ
নিয়মিত স্নান
পোষ্যকে পরিষ্কার রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি দিন স্নান করানো অবশ্যই উচিত নয়। মাসে এক দিন কোনও অ্যান্টিসেপটিক শ্যাম্পু দিয়ে অবশ্যই স্নান করান। এতে ত্বকের র্যাশ, চুলকানি আটকাতে পারবেন।
শুকনো রাখুন
সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া, জীবাণু ঘটিত সংক্রমণ থেকে দূরে রাখতে পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে পোষ্যকে। বৃষ্টিতে ভিজে গেলে ভাল করে গা মুছিয়ে দিতে হবে। রাস্তায় বেরোলে থাবা ধুইয়ে দিয়ে মুছিয়ে দিতে হবে শুকনো করে। বেশি ক্ষণ লোম ভিজে থাকলে বা থাবার নীচে জল-কাদা লেগে থাকলে, তা থেকে দ্রুত ব্যাক্টেরিয়া বা ছত্রাকের সংক্রমণ ঘটবে।
বাতের ব্যথা কমাতে
পোষ্যের শরীরে প্রদাহ কমাতে ও হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে এমন খাবার বা সাপ্লিমেন্ট খাওয়াতে হবে, যাতে বেশি পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, জ়িঙ্ক, গ্লুকোসামাইন রয়েছে। কী কী খাওয়াবেন, তা চিকিৎসকের থেকে জেনে নিতে হবে।
রেনগিয়ার
বর্ষাকালে পোষ্যকে নিয়ে হাঁটতে বেরোলে সঙ্গে রাখুন রেনগিয়ার। যাতে লোম বেশি ভিজে না যায়। বর্ষায় ঘন ঘন রাস্তায় নিয়ে না বেরোনোই ভাল। এই সময়ে আবহাওয়া ঠান্ডা থাকে। পোষ্যের শরীর খারাপ হতে পারে।
প্রতিষেধক
বর্ষার সময়ে পোষা কুকুরকে টিকা দিয়ে রাখা ভাল। এই সময়ে ক্যানাইন ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ বাড়ে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের এইচ৩এন৮ ও এইচ৩এন২ স্ট্রেন, দু’টিতেই বেশি আক্রান্ত হয় কুকুরেরা। এর থেকে বাঁচতে নির্দিষ্ট টিকা দিয়ে রাখা খুব জরুরি।